কৈলাস যাওয়ার পথে স্টপেজ রংধামালি, ১৩৮ বছরে পড়ল উত্তরের এই দুর্গাপুজো
- Published by:Arka Deb
- news18 bangla
Last Updated:
লোকবিশ্বাস কৈলাস যাওয়ার পথে তিস্তাপারের বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গল পড়ে। সেখানেই পা রাখেন দেবী, সেই কারণেই এই অকালবোধন। দেবী এখানে বনদুর্গা হিসেবে পূজিতা।
#রংধামালি: কৈলাসে রওনা হয়েছেন দেবী। অপেক্ষমান শিব। কিন্তু পথে যদি আর্ত সন্তানের সঙ্গে দেখা হয়, মায়ের মন কাঁদবে না তাই কি হয়? হয় না যে তার প্রমাণ রংধামালি। শহরের আলোর জৌলুস থেকে বহু দূরে, ১৩৮ বছর ধরে এখানে দেবী দুর্গার আরাধনা করে চলেছেন সাধারণ মানুষ। তবে পাঁজি মেনে পুজোর দিনগুলিতে নয় বরং পুজো যখন শেষ. তখনই সেজে ওঠে রংধামালি। লোকবিশ্বাস কৈলাস যাওয়ার পথে তিস্তাপারের বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গল পড়ে। সেখানেই পা রাখেন দেবী, সেই কারণেই এই অকালবোধন। দেবী এখানে বনদুর্গা হিসেবে পূজিতা।
রংধামালিতে প্রতি বছর তিথি অনুযায়ী এই পুজো আয়োজিত হয় । এবছর পুজোর সেই তিথি পড়েছে ৫ নভেম্বর ৷ উদযাপন করেন পাহাড়পুড়, বেলাকোবা, পাতকাটা অঞ্চলের গ্রামীণ মানুষ। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, জঙ্গলঘেরা রংধামালিতে একসময় বাঘের উপদ্রব ছিল। বহু মানুষের প্রাণ যেত অকাতরে। এই সময়েই বনদুর্গার স্মরণে আসেন অরণ্যচারীরা।
বনদুর্গার পুজো হয় ঠিক দুর্গাপুজোর সনাতন রীতিতেই। চারদিন ধরে চলে আয়োজন। দশভূজার পাশে পূজিত হয় একটি শ্যামাকালীর মূর্তিও। পুজোর চারদিন এই অঞ্চলে একটি মেলাও বসে। কথিত আছে বনদুর্গার পুজোর মেলায় বিক্রি হওয়া শাঁখা পরলে নাকি মেয়েদের স্বামীর আয়ু বাড়ে।
advertisement
advertisement

প্রসঙ্গত অনেকে মনে করেন উত্তরবঙ্গে যা বনদুর্গা, দক্ষিণবঙ্গে তথা সুন্দরবনে তাই বনবিবি। বনবিবি ইব্রাহিম (মতান্তরে বেরাহিম) নামে এক আরবদেশির কন্যা। ইব্রাহিমের স্ত্রী গুলাল বিবি সতিনের প্ররোচনায় সুন্দরবনে পরিত্যক্ত হন। সেখানে বনবিবির জন্ম। দক্ষিণ রায় যশোরের ব্রাহ্মণনগরের রাজা মুকুট রায়ের অধীন ভাটির দেশের রাজা ছিলেন। তার সঙ্গে বনবিবির একাধিক যুদ্ধ হয়। দক্ষিণ রায় পরাজিত হয়ে সন্ধি করেন। দক্ষিণ রায়ের পরাজয় অর্থে বাঘ বা অপশক্তির পরাজয়। একদল ঐতিহাসিক মনে করেন হিন্দু বনদুর্গাই ইসলামিক প্রভাবে বনদেবী হয়েছে। সেদিক থেকে দেখতে গেল সৌভাতৃত্বের চিহ্নও বহন করে এই দেবী।
advertisement
এ বছরের বনদেবীর পুজোয় এসে দেখা গেলো আয়োজনটুকুই হয়েছে, আড়ম্বর নেই। পুজোর সম্পাদক কৃষ্ণ দাস বলছিলেন, করোনা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই আমরা আয়োজনে কাঁটছাঁট করেছি। দুর্গাপুজোয় যেমন হয়েছে রাজ্যে সেই রীতিই পালন করেছি। বন্ধ রাখছি সমস্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, "সুসময় ফিরলে আসছে বছর আবার হবে।"
view commentsLocation :
First Published :
November 05, 2020 6:09 PM IST