HIV আক্রান্ত স্নেহনীড়ের শিশুরা লকডাউনে শিখছে বাঁচার মন্ত্র, সঙ্গী নাটক, নাচ

Last Updated:

তাই নাচ-গান-নাটকের মাধ্যমে ওদের মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতেই স্নেহনীড়ের কর্ণধার এবং ভোরুকা ব্লাড ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর তানিয়া দাস যোগাযোগ করেন সাহিত্যিক এবং নাট্যকর্মী শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষের সাথে

#‌কলকাতা:‌ HIV–কে শরীরে করে বেড়ানো এই এক ঝাঁক মেয়েদের হোম ‘স্নেহনীড়’। গবেষণা বলছে, HIV পজিটিভ বাচ্চাদের মানসিক অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তির হার বাকিদের তুলনায় তিনগুণ। তার কারণ হিসেবে থাকে শারীরিক দুর্বলতা, মৃত্যুভয়, এবং পারিপার্শ্বিক সমাজের অবহেলা। দু’‌বেলা ওষুধের বোঝা নিয়ে বেঁচে থাকা এই ছোট্ট মানুষগুলো যত বেশি অন্যদের মাঝে, পড়াশোনা-নাচ-গান-আঁকার মধ্যে থাকে, ভালো থাকে। এই সামাজিক সচলতাই একমাত্র ওদের ভালো রাখে। কিন্তু লকডাউনের বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই স্কুল বন্ধ, পরিবারের লোকজনের সাথে দেখা নেই, নাচ, গান, আঁকা শেখা বন্ধ, পড়াতে আসার মাস্টারমশাই-দিদিমণিরাও ছুটিতে। সুতরাং বাকিদের তুলনায়, ভয় ওদের চেপে বসেছে প্রায় তিনগুণ।
তাই নাচ-গান-নাটকের মাধ্যমে ওদের মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতেই স্নেহনীড়ের কর্ণধার এবং ভোরুকা ব্লাড ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর তানিয়া দাস যোগাযোগ করেন সাহিত্যিক এবং নাট্যকর্মী শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষের সাথে। লকডাউনের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শুরু হয় ওদের হাসি-খুশি রাখার, ভালো রাখার কাজ। এই সময়ের ভয়াবহ মৃত্যুভয় থেকে সরিয়ে জীবনের দিকে আনার কাজ। কিন্তু কেবল হাসিখুশি রাখার মধ্যেই কি শেষ হয়ে যাওয়ার কথা এই প্রজন্মের শিক্ষা? যারা রোজ জীবন-মৃত্যুর ধার ঘেঁষে বেঁচে থাকেন, তাদের এই ভয়ের সময়ে আরও একটু নিজের শরীর এবং মন সম্পর্কে অবগত করাও কি আমাদের দায়িত্ব নয়? প্রায় স্বেচ্ছায় এই কাজ হাতে তুলে নিয়েছেন শুদ্ধসত্ত্ব এবং তার সহকর্মীরা। সোমা দত্ত এসব শেখাচ্ছেন নাচের মাধ্যমে। সোমালী মুখার্জি মনস্তত্ত্ব এবং তার শারীরিকতা নিয়ে কাজ করছেন। অর্ণব আঢ্য নাট্যক্রিয়া দিয়ে ওদের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াকে জাগিয়ে রাখছেন। শুদ্ধসত্ত্ব এ সব জুড়ে ড্রামা-থেরাপির প্রাথমিক কিছু কাজের সহায়তায় একাধারে ওদের বেঁচে থাকা এবং বৃদ্ধির সোপান নির্মাণে নিরত।
advertisement
তাই মজার খেলার পাশাপাশি চলছে পড়াশোনা, শারীরিক-মানসিক কসরতের ক্লাস। একদিকে তারা ভয়, রাগ, আনন্দ ইত্যাদি আবেগের শারীরিক, মানসিক কারণ এবং মনের ওঠানামা শিখছে। সঙ্গে জেনে নিচ্ছে কেমন করে মানবসভ্যতার ইতিহাসে এই আবেগ তৈরি হয়েছে। আবার শিখছে এই ভয়, রাগ, আনন্দ কেমন করে শরীরে ভাষা পায়। খেলার মাধ্যমে, ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন শেখার মাধ্যমে ভাষা তৈরির সিঁড়িতে পা রাখছে। কিন্তু শিখতে শিখতে হেসে ওঠা কচি মেয়েগুলো জানান দেয়, এই সময়েও ভয় কাটিয়ে দেওয়া যায়। সমাজের দূরত্ব কমিয়ে মানবিক সম্পর্কের সান্নিধ্যে শরীরে শরীরে দূরত্ব বজায় রেখে।
advertisement
advertisement
‌‘‌বুড়ি ওষুধটা দিলে, ওরা রাজ্যে নিয়ে আসবে আর সবাআআইকে দেবে, আর সবাই ভালো হয়ে যাবে।’‌
নাটক বানাচ্ছিল ওরা। খেলতে খেলতে। সে খেলা এবং নাটকের শেষে ছয় থেকে সতেরো বছর বয়সের এক ঝাঁক মেয়ে আশায় বুক বাঁধে, উঁচু গলায় বলে ওঠে এইভাবেই শেষ হবে কোরোনা রোগের গল্প।
একুশ দিনের লকডাউনে মৃত্যুভয় চিতা থেকে উঠে আমজনতার ড্রয়িংরুমে ঢুকে পড়েছে। অন্যদিকে এই একাংশের অসুস্থতা আর মৃত্যুভয় এমনিতেই পাশে পাশে হাঁটে। এরা জানে, COVID-19 এর মতই, HIV ইতিমধ্যে তাদের ইমিউনিটিকে রোজকার জন্য জীবন-মৃত্যুর রণভূমিতে এনে দাঁড় করিয়েছে। কিন্তু COVID-19 এর জেরে শুরু হওয়া সামাজিক স্তব্ধতা তাদের মৃত্যুভয়কে আরও জোরালো করে নিঃশ্বাস আটকে দিয়েছিল প্রায়। তাদের ধারণা হয়েছিল তারা দুর্বল বলে সবার আগে তারাই শিকার হবে কোরোনা রোগের। কিন্তু এই রোজকার এই নতুন অভ্যাস ওদের বাঁচিয়ে তুলেছে বেশ কিছুটা।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/করোনা ভাইরাস/
HIV আক্রান্ত স্নেহনীড়ের শিশুরা লকডাউনে শিখছে বাঁচার মন্ত্র, সঙ্গী নাটক, নাচ
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: উত্তরে বৃষ্টির পূর্বাভাস, দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে আগামী সপ্তাহে, উইকেন্ডে আবহাওয়া কেমন থাকবে?
উত্তরে বৃষ্টির পূর্বাভাস, দক্ষিণে বৃষ্টি হতে পারে আগামী সপ্তাহে, উইকেন্ডে আবহাওয়া কেমন?
  • উত্তরে আজ বৃষ্টির পূর্বাভাস

  • দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে আগামী সপ্তাহে

  • রইল আবহাওয়ার আপডেট

VIEW MORE
advertisement
advertisement