এখন বসন্ত...গাছে নতুন পাতা, রং-বেরংয়ের ফুল, কিন্তু পর্যটক শূন্য ক্রাকোভে শুধুই মৃত্যু, হাহাকার, কান্না...

Last Updated:

বছর দেড়েক ধরে রয়েছেন ছবির মত সাজান শহর পোল্যান্ডের ক্রাকোভে। কিন্তু, মাস দুয়েকেই কেমন যেন বদলে গিয়েছে সবটা। চারিদিকে শুধুই নির্জনতা। লক ডাউনের নির্জনতা গ্রাস করেছে পর্যটকদের প্রাণের ছেয়ে প্রিয় শহরটাকে। ক্রাকোভ থেকে লিখলেন ব্যাঙ্কিং কন্সাল্ট্যান্ট দেবাঞ্জন দাস ।

#ক্রাকোভঃ পোল্যান্ডের ক্রাকোভ....এই ছবির মত সাজানো শহরে আছি বছর দেড়েক, আর দেশটাতে প্রায় তিন বছর। এরকম কোনওদিন হবে ভাবিনি। সারা বছর পর্যটক গমগম করা জায়গাগুলো আজ ভূতুড়ে। এখানে শিন্ডলার্স লিস্ট সিনেমাখ্যাত শিন্ডলারের ফ্যাক্টরি, রোমান পোলানস্কির সময়কার ইহুদি বসতি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ফাঁকা সাইটগুলো। ফলে পর্যটনের সময়ে অর্থাৎ এখন রোজ পর্যটকে গিজগিজ করে। সেই জায়গাগুলো আজ খাঁ খাঁ করছে। খোলা আছে বলতে শুধু সুপারমার্কেট, বাজার, ওষুধের দোকান। রেস্টুরেন্ট থেকে আপনি অর্ডার করতে পারেন হোম ডেলিভারিতে, কিন্ত যেতে পারবেন না। দিন যত যাচ্ছে, সরকার তত কঠোর হচ্ছে। ইউরোপের ফ্রি বর্ডার দিয়ে পারাপার অনেকদিন বন্ধ– বিমান, দূরপাল্লার বাস, ট্রেন কোনও  কিছুই নেই। আছে শুধু অল্প সংখ্যক বাস আর ট্রাম, যা শহরেই সীমাবব্ধ। বাসে উঠলেও পাশাপাশি বসা মানা, ড্রাইভারের জন্যে আলাদা নিরাপদ জোন।এখন রাস্তাতে হাঁটতে গেলে একসাথে মাত্র দু'জন আর তাঁর সঙ্গে মুখ ও নাক ঢাকা আবশ্যক। নয়তো জরিমানার মূল্য ভারতীয় মূদ্রায় লাখখানেক। হবেই না বা কেন? অনেক আগে থেকে স্নো-রিসর্টগুলো বন্ধ করা হলেও আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
ইউরোপে অসুখটা ছড়িয়েছে স্নো-রিসর্টগুলো থেকেই।তবুও রোগের বাড়বাড়ন্ত আটকানো যায়নি। চার্চের ফাদার, সুপার মার্কেটের ক্যাশিয়ার, ডাকঘরের কর্মী কাউকেই ছাড়েনি এই রোগ, কোরোনা নিঃশব্দে থাবা বসাচ্ছে। কোয়ারেন্টাইনে গেছেন প্রায় হাজার পঞ্চাশ মানুষ। কিছু গ্রাম, শহর সম্পূর্ণ লক ডাউন ছিল। এর বাইরে ছড়িয়ে যায় একটি খ্রিস্টানদের ধর্মীয় স্থান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে। সবই বন্ধ করে দিতে হয়। স্কুল, কলেজ কবে খুলবে তার ঠিক নেই। অফিসের কাজ বাড়িতে, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ানো সবই এখন অনলাইন।সমস্যাতে বিমান ও পর্যটন সংস্থাগুলো। টাকার অভাবে কর্মীদের মাইনে বন্ধ।
advertisement
advertisement
রেল স্টেশন।
এখন বসন্ত, গাছে নতুন পাতা গজায়, রং-বেরংয়ের ফুল ফোটে–দীর্ঘ শীতকালের পর মানুষ পার্ক, নদীরধার ইত্যাদিতে ভিড় করে–এবার কোনওটাই নেই। খবরের কাগজ খুললেই মৃত্যু, নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা এবং এর সাথে আছে সরকার অর্থনীতি নিয়ে কি ভাবছে। পেনশন, বেকার ভাতা এবং এককালীন সাহায্য দিয়ে যথাসম্ভব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যাতে কোমাতে যাওয়া অর্থনীতি লক ডাউন শেষ হলেই দ্রুত চাঙ্গা হয়। ৬ লাখের মানুষের শহরে প্রায় ৬০০ জন আক্রান্ত এই মূহুর্তে।সাথে চলছে ইস্টারের ছুটি। এই সময়ে সবাই বাড়ি ফিরে যায়, প্রিয় জনের কাছে।চার্চে হয় বিশেষ প্রার্থনা। পোপ জন পল দ্বিতীয়র গ্রাম ঠিক শহরের বাইরে। সেটা একটা তীর্থক্ষেত্র, বিরাট জনসমাগম হয়। এবছর কোনো কিছুই হচ্ছে না। সমস্তকিছু স্তব্ধ, চারিদিকে হাহাকার। যেন যুদ্ধের সময় ফিরে এসেছে। চার্চের প্রার্থনা হচ্ছে– তবে সেটা অনলাইনে।‘সানডে মাস’ ও সেইভাবেই হচ্ছে।গোটা পৃথিবীটা যেন নিজের নিজের বাড়িতে নির্বাসিত। বন্দি দশা থেকে মুক্তি পাবার অনিশ্চয়তা।বাজারে এক জায়গাতে ২/৩ জন মাত্র থাকতে পারে।দুই ব্যক্তির মধ্যে এক মিটার দূরত্ব রাখাটা সরকারি নির্দেশ।
advertisement
শুরুর দিকে জিনিসপত্রের হাহাকার থাকলেও এখন সবখিছুই পাওয়া যাচ্ছে মোটামুটি। বন্ধের তালিকাতে থাকা নাপিতের দোকান সমস্যা বাড়িয়েছে সবারই।ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে দেখছি সেটা হল যত না মানুষ কোরোনাতে মারা যাবে তার চেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হবেন কর্মহীনতায়।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/করোনা ভাইরাস/
এখন বসন্ত...গাছে নতুন পাতা, রং-বেরংয়ের ফুল, কিন্তু পর্যটক শূন্য ক্রাকোভে শুধুই মৃত্যু, হাহাকার, কান্না...
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement