করোনার ১ বছর, অভিনয় ছেড়ে প্রথম সারির নার্সের পেশায় শাহরুখের নায়িকা
- Published by:Simli Dasgupta
- news18 bangla
Last Updated:
শক্ত হাতে হাল ধরে শিখিয়েছে কঠিন পরিস্থিতিতেও সহানুভূতি আর অপরকে ভালোবাসার জোরে টিকে থাকা যায়। এঁদেরই একজন শিখা মালহোত্রা
#মুম্বই: করোনা ভাইরাসের মহামারির এক বছরে দুনিয়া অভূতপূর্ব মাত্রায় মৃত্যু, অর্থনীতির কঠিন পরিস্থিতি ও উদ্বেগ প্রত্যক্ষ করেছে। কিন্তু এই ভয়াবহ দুর্ভোগের মধ্যেও আত্মত্যাগ, সাহস আর টিকে থাকার প্রবল প্রতিজ্ঞারও অজস্র উদাহরণ তৈরি হয়েছে। দুনিয়ার নানা প্রান্তের মানুষ এই মহামারির মধ্যে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছে, অন্যকে সহায়তা করেছে এমনকি নিজেদের কেরিয়ারও উল্টোপথে ফিরিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ দেখিয়েছে। শক্ত হাতে হাল ধরে শিখিয়েছে কঠিন পরিস্থিতিতেও সহানুভূতি আর অপরকে ভালোবাসার জোরে টিকে থাকা যায়। এদেরই একজন শিখা মালহোত্রা। জাঁকজমকের জীবন, ভারতীয় চলচ্চিত্রের রাজধানী হিসেবে খ্যাত বলিউডের একাধিক সিনেমার কাজের সুযোগ অবলীলায় ছেড়ে দিয়েছিলেন এই নায়িকা।
বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খানের প্রধান নায়িকা হিসেবে ২০১৬ সালে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু শিখা মালহোত্রার। গত বছর মুক্তি পায় ‘কাঞ্চলি’নামের সেই সিনেমা। ফলে স্পষ্টতই বলিউডে নিজের জন্য একটা ভালো অবস্থান তৈরি করে নেওয়ার সুযোগ ছিল তাঁর সামনে। কিন্তু তাঁর নিজের শহর মুম্বইয়ে করোনাভাইসারের সংক্রমণ শুরু হলে সিনেমা নয় বাস্তবের অ্যাকশন জগতে নেমে পড়ার সিদ্ধান্ত নেন শিখা। ঠিক করেন চলচ্চিত্রের আলো ঝলমল পর্দায় নয় বাস্তবে কাজে লাগাবেন তার নার্সিং ডিগ্রির শিক্ষা।
advertisement
গত বছরের মার্চে ভারত জুড়ে লকডাউন শুরুর দুই দিনের মাথায় শিখা মালহোত্রা মুম্বাইয়ের বিভিন্ন হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমে একজন নার্সিং অফিসার, তারপরে একজন অভিনেত্রী। ‘মানুষের জীবন-মৃত্যু, শত আবেগ, দুঃখ, সুখ এগুলো দেখার অভিজ্ঞতা আমাকে বদলে দেয়, আমার মনে হলো হঠাৎ করে আমি আরও পরিণত হয়ে গেলাম, আরও মাটির কাছে চলে এলাম।’
advertisement
advertisement
করোনাভাইরাস সংক্রমণে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দেশ ভারত। আর এই দেশের কবলিত শহরগুলোর অন্যতম মুম্বই। এই শহরে কাজ করতে আগ্রহী হয়ে উঠতে শিখা মালহোত্রার অনুপ্রেরণা ছিলেন তাঁর মা। তিনি নিজেও একজন নার্স। সামনের কাতারের কর্মী হিসেবে মাকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংকট মোকাবিলা করতে দেখে তার পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন শিখা।
advertisement
নার্সিং অফিসার হিসেবে সরকারি হাসপাতালে কাজ করতে শুরু করেন শিখা। সব বয়সী করোনা রোগীদের চিকিৎসা এবং সেবা দিতে শুরু করেন তিনি। কিন্তু সাত মাসের মাথায় গত অক্টোবরে নিজেই করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েন তিনি। প্রায় এক মাস হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নেন। সুস্থ হওয়ার পর স্ট্রোক করেন তিনি আর শরীরের ডান পাশ অসাড় হয়ে পড়ে। আগেও একবার স্ট্রোক করে তার ডান পাশ অসাড় হয়ে যায়।
advertisement
শিখা মালহোত্রা বলেন, ‘আমার মনে হয় এটা আমার বিরাট এক সাফল্য কারণ এ নিয়ে দ্বিতীয়বার আমি আক্রান্ত হলাম, ভেবেছিলাম এবারই বুঝি সব শেষ হয়ে যাবে।’ পরে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি। বাবা-মায়ের সাহায্য ছাড়া এটা সম্ভব ছিলো না বলে মনে করেন তিনি।
সুস্থ হওয়ার পর শিখার করে নতুন করে আসছে সিনেমার প্রস্তাব। অভিনয় কেরিয়ার আবারও শুরুর পরিকল্পনা করছেন তিনি। তবে প্রয়োজন পড়লে আবারও নার্সিং পেশায় প্রস্তুত রয়েছেন বলেও জানান এই করোনা যোদ্ধা।
view commentsLocation :
First Published :
March 11, 2021 11:31 PM IST