#বানেশ্বর: রাজ আমলের অনেক মন্দির ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কোচবিহার জেলা জুড়ে। কোচবিহারের এই সমস্ত রাজ আমলের মন্দির গুলির মধ্যে অন্যতম একটি ঐতিহাসিক মন্দির হল ‘কোচবিহার সিদ্ধেশ্বরী মন্দির’। এই মন্দিরে দেবী দুর্গা সিদ্ধেশ্বরী রূপে পূজিত হয়ে আসছেন বহুদিন ধরে। বাংলা ১২৮৪ সালে এই মন্দিরটি পুনঃনির্মাণ করা হয় কোচবিহার রাজাদের দ্বারা। তবে এই মন্দিরের স্থাপন কাল নিয়ে আজও কোন সঠিক ধারণা নেই কারো। যদিও বর্তমানে এই মন্দিরের সমস্ত কাজকর্ম দেখাশোনা করছে কোচবিহার দেবত্বর ট্রাস্ট বোর্ড। এই মন্দির প্রতিষ্ঠার কোন সঠিক সময় পাওয়া যায়নি। তাই মন্দিরের প্রতিষ্ঠার বিষয় নিয়ে প্রচুর দ্বিমত রয়েছে। মন্দিরের গায়ে লাগানো একটি ফলক দেখলে জানা যায়। এই মন্দিরটি ১২৮৪ সালে পুনঃনির্মাণ করেন কোচবিহারের রাজা হরেন্দ্র নারায়ণ ।
সিদ্ধেশ্বরী মন্দির কোচবিহার থেকে ১২ কিলোমিটার দূরত্বে আলিপুরদুয়ার থেকে বামনহাট পর্যন্ত রেললাইনের মাঝের বানেশ্বর রেলস্টেশনের কিছুটা দূরে অবস্থিত। নিউ বানেশ্বর রেল স্টেশনের থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার। সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে দেবী দুর্গা সিদ্ধেশ্বরী রূপে পূজিত হন। এছাড়াও এই মন্দিরের পাশেই একটি প্রাচীণ কামরাঙা গাছের নীচে দেবী কামাখ্যাকে পুজো করা হয়। এছাড়াও এখানে ভগবান শিবের ও আরাধনা করা হয়। মন্দির প্রাঙ্গণ সকালে ৯-টায় খুলে দেওয়া হয়। সাকলের পুজো শেষ হয়ে গেলে মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিকেল বেলায় ৪-টার আবার খোলা হয় মন্দির। এবং মন্দির বন্ধ করা হয় সন্ধ্যা আরতি হওয়ায় পর। সকালে পুজো শুরু করা হয় সকাল ১০-টার সময়। এবং সন্ধে আরতি করা হয় ৬-টার সময়।
এখানে পুজো দেওয়ার নিয়ম হল। মন্দির চত্বর থেকে যে ভোগের কুপন বিতরণ হয়। সেটা সংগ্রহ করে নিয়ে ভোগ নিবেদন করতে হবে দেবতাকে। এই কুপনের মুল্য ১০ টাকা মাত্র। এখানে দুই ধরনের ভোগের চল আছে একটি ফল কিংবা মিষ্টির ভোগ এবং আরেকটি অন্ন প্রসাদের ভোগ। অন্য আর তেমন কোন বিশেষ নিয়ম নেই মন্দিরের। দুর্গা পুজার সময় এবং বাসন্তী পুজার সময় বিশেষ নিয়ম নীতি মেনে ঘটের মাধ্যমে পুজো করা হয় এখানে। এছাড়া কামাখ্যা মন্দিরের প্রায় অনেক নিয়ম মানা হয়ে থাকে এই মন্দিরে। এছাড়া প্রধান মন্দিরের ঠিক পাশেই রয়েছে কামাখ্যা মন্দির। এখানে একটি প্রাচীণ কামরাঙা গাছের গোড়ায় মা কামাখ্যাকে পুজো করা হয়। কথিত আছে কোচবিহারের রাজারা অভিশপ্ত ছিলেন যে তারা কোনদিন কামাখ্যা মন্দিরে যেতে পারবেন না। তবে বহু অনুনয় করার পর দেবী কামাখ্যা রাজাকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলেন যে এই মন্দিরে তাকে পুজো দেওয়া শুরু করতে। এবং পুজো দেওয়ার স্থান হিসেবে এই কামরাঙা গাছটির গোড়াটা চিহ্নিত করেন। তখন থেকে এই মন্দিরে মা কামাখ্যার পুজো করা হয়।
Sarthak Pandit
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।