বাজারে বিনিয়োগ করার একাধিক অপশন রয়েছেন ? কিন্তু আপনার জন্য কোনটা সঠিক হবে, জেনে নিন

Last Updated:

তাই বিনিয়োগকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ - এই দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।

#কলকাতা: ভবিষ্যতের আর্থিক লক্ষ্য পূরণ এবং ভবিষ্যৎকে আরও সুরক্ষিত ও নিরাপদ করার জন্য বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে। আর বিনিয়োগের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমের কথাও আমরা জেনে এসেছি। তাই নিজের জন্য বিনিয়োগের কোন বিকল্পটা ভাল, সেই বিষয়টা সবার আগে বুঝে নিতে হবে। এর জন্য নিজের প্রয়োজনীয়তা এবং রিস্ক টলারেন্স পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। তাই বিনিয়োগকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ - এই দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে।
প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মার্কেট এবং অর্থনৈতিক ধারার বিষয় পর্যালোচনা করে গতিশীল ভাবে সম্পদ পরিবর্তন করে যেতে হবে। আর সবথেকে বড় কথা হল, প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে হাতে যথেষ্ট প্রয়োজনীয় সময় থাকতে হবে। আর এর পাশাপাশি, থাকতে হবে বিনিয়োগ সংক্রান্ত জ্ঞানও। আর প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের সবথেকে ভালো উদাহরণ হল ইক্যুইটি ফান্ড।
আবার অন্য দিকে, পরোক্ষ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীকে সরাসরি বা প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত থাকতে হয় না। কোনও কিছু কিনে টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। সেই টাকা একটা নির্দিষ্ট সময় কাল ধরে সেখানেই রেখে দিতে হয়। তাই এটি বাই অ্যান্ড হোল্ড ইনভেস্টমেন্ট (Buy & hold investment) হিসেবেও পরিচিত। আর এই ধরনের বিনিয়োগ তাঁদেরই করা উচিত, যাঁদের হাতে আর্থিক বিষয় সামলানোর মতো তেমন সময় থাকে না।
advertisement
advertisement
ভারতে জনপ্রিয় বিনিয়োগের বিকল্প:আমাদের দেশে নানা ধরনের বিনিয়োগের বিকল্প (Investment Options) পাওয়া যায়। তাই নিজের রিস্ক টলারেন্স (Risk Tolerance) বা ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা পর্যালোচনা করেই বিনিয়োগকারীকে সেই বিকল্প বেছে নিতে হবে। আর একটা বিষয় রয়েছে। এমন মাধ্যম বাছতে হবে, যা বিনিয়োগকারীর প্রয়োজন পূরণ করতে পারে।
advertisement
ভারতের জনপ্রিয় ৭টি বিনিয়োগ বিকল্প:
সরাসরি বিনিয়োগ বা ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (Direct Investment):যানবাহনের ক্ষেত্রে সবথেকে কার্যকর বিনিয়োগ হল ডিরেক্ট ইক্যুইটি। এটি আবার স্টক ইনভেস্টিং বলেও পরিচিত। একটি ফার্মে স্টক কিনে রাখা মানেই বিনিয়োগকারী সেই ব্যবসার অংশ হয়ে যাবেন। আর সেই সঙ্গে বিনিয়োগকারীর হাতে পর্যাপ্ত সময় থাকতে হবে। সেই সঙ্গে বিনিয়োগ থেকে বিনিয়োগকারী কীভাবে মুনাফা করতে পারেন, সেটা বুঝতে হবে।
advertisement
আর এই বিষয়টা বুঝতে গেলে বাজার সম্পর্কে বিনিয়োগকারীর যথেষ্ট জ্ঞান থাকতে হবে। আর এই বিষয়গুলো জানা না-থাকলে ডিরেক্ট স্টক ইনভেস্টিং কিন্তু অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যদি কোনও বিনিয়োগকারীর কাছে ডিম্যাট প্রোফাইল এবং কেওয়াইসি ভেরিফিকেশন রয়েছে, তা-হলে তিনি পাবলিক ট্রেড কোম্পানিগুলি থেকে স্টক ইন্টারচেঞ্জের মাধ্যমে স্টক কিনতে পারবেন। দীর্ঘ সময়ের জন্য সবথেকে ভালো বিনিয়োগের বিকল্প হল স্টক। ইক্যুইটির উপর প্রধান অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক প্রভাবের কারণে বিনিয়োগকারী প্রত্যক্ষ ভাবে নিজের সম্পদ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তবে এ-ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে যে, মুনাফা বা লাভের অঙ্ক কিন্তু নিশ্চিত নয়। আর তার পাশাপাশি এর সঙ্গে আসা ঝুঁকির মাত্রা খতিয়ে দেখতে হবে।
advertisement
মিউচুয়াল ফান্ড (Mutual Fund):অধিকাংশ বিনিয়োগকারীর পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে মিউচুয়াল ফান্ড। ধরা যাক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি অংশগ্রহণকারীর বিনিয়োগের মূল লক্ষ্য একই রকম। আর মিউচুয়াল ফান্ড সেই সব বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগকে একত্রিত করে থাকে। এ-ক্ষেত্রে এক জন পেশাদার ফিনান্সিয়াল ম্যানেজার থাকেন। পোশাকি ভাষায় যাঁদের ফান্ড ম্যানেজার (Fund Manager) বলা হয়। তাঁরা সাধারণত একত্রিত ওই ফান্ডের তদারকি করেন। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সিকিউরিটিজ এবং অন্যান্য সম্পদে বিনিয়োগ করেন, যাতে বিনিয়োগকারীরা সর্বোচ্চ রিটার্ন পেতে পারেন। মিউচুয়াল ফান্ডের প্রধান ক্যাটাগরিগুলো হল ডেট (Debt) এবং হাইব্রিড (Hybrid) ফান্ড। বন্ড এবং কাগজপত্রে থাকে ডেট মিউচুয়াল ফান্ড। আর ইক্যুইটি ফান্ডের ক্ষেত্রে শেয়ার বাজারের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও স্টক কিংবা ইনস্ট্রুমেন্টেই বিনিয়োগ করা হয়।
advertisement
ইক্যুইটিজ এবং ডেট ইনস্ট্রুমেন্ট - উভয়কেই তাদের টাকা দেয় হাইব্রিড ফান্ড। মিউচুয়াল ফান্ড হল ইউনিভার্সাল ফিনান্সিয়াল প্রোডাক্ট, যা বিনিয়োগকারী নিজের সময়-সুবিধা মতো শুরু অথবা শেষ করতে পারেন। যে-কোনও বিনিয়োগকারী জয়েন্টে বিনিয়োগ করার কথা ভাবতেই পারেন। মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে হলে বিনিয়োগকারীকে শুধু টাকা দিয়ে দিতে হবে। বাকি পোর্টফোলিও কনস্ট্রাকশনের দায়িত্ব থাকবে ফান্ড ম্যানেজারের উপর।
advertisement
যদিও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, বিনিয়োগকারীর রিস্ক প্রোফাইল এবং আর্থিক লক্ষ্যের সঙ্গে যে বিনিয়োগের প্রোফাইল মিলে যাচ্ছে, সেখানেই একমাত্র বিনিয়োগ করা বাঞ্ছনীয়। এ-ক্ষেত্রে রিটার্ন কিন্তু নিশ্চিত নয়, কারণ তা নির্ভর করে শেয়ার বাজারের ওঠা-নামার উপর। এটাও মাথায় রাখা জরুরি যে, ফান্ডের আগের পারফরমেন্স কিন্তু ভবিষ্যতের ফলাফল নিশ্চিত করতে পারে না।
ফিক্সড ডিপোজিট (Fixed Deposits):ফার্স্ট ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য ফিনান্সিয়াল কোম্পানিগুলি ফিক্সড ডিপোজিটে বিনিয়োগ করার বিকল্প প্রদান করে থাকে। যার ফলে গ্রাহকরা বড় অঙ্কের অর্থ জমা রাখতে পারেন একটা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য। আর সেখান থেকে সুদের অঙ্ক লাভ করতে পারেন। ফিক্সড ডিপোজিট (Fixed Deposit) বা এফডি (FD) কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ড বা ইক্যুইটির মতো নয়। এটা মূলধনকে নিরাপদ এবং সুরক্ষিত রাখে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত রূপে রিটার্ন পেতে পারেন গ্রাহক। যদিও সেই রিটার্ন কিন্তু একই থাকে। অর্থাৎ কমেও না অথবা বাড়েও না।
যে-সব বিনিয়োগকারী ঝুঁকি নিতে চান না বা সাবধানে পা ফেলতে চান, তাঁরা ফিক্সড ডিপোজিটের বিকল্প বেছে নিতে পারেন। আর এফডি-র উপর মেলা সুদের হারের ক্ষেত্রে কিন্তু তারতম্য দেখা যায়। যা নির্ভর করে অর্থনীতির অবস্থার উপর। আর সুদের হার সাধারণত আরবিআই-এর পলিসি রিভিউয়ের ফলাফলের উপর নির্ভর করেই সুদের হার নির্ধারণ করে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক। এখানেই শেষ নয়, ফিক্সড ডিপোজিট আসলে লক-ইন বিনিয়োগ। অর্থাৎ একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেই টাকা তুলতে পারবেন না বিনিয়োগকারী। তবে কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ওই অর্থরাশি ব্যবহার করতে পারেন তাঁরা। করের সুবিধা-সহ ফিক্সড ডিপোজিটের ক্ষেত্রে ৫ বছরের লক-ইন পিরিয়ড (Lock-in period) থাকে।
কনসিস্টেন্ট ডিপোজিট (Consistent Deposits):আর এক ধরনের ফিক্সড বিনিয়োগের অন্যতম মাধ্যম হল রেকারিং ডিপোজিট (Recurring Deposit) বা আরডি (RD)। এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারী প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা করতে পারেন পূর্বনির্ধারিত মেয়াদের জন্য। আর তাতে একটা স্থায়ী হারে সুদ পান তিনি। ব্যাঙ্ক এবং পোস্ট অফিসে রেকারিং ডিপোজিটের সুবিধা পাওয়া যায়। যে সেক্টর এই সুবিধা দিচ্ছে, তারাই সুদের হার নির্ধারণ করে।
প্রতি মাসে বিনিয়োগকারী স্বল্প পরিমাণ টাকা জমা করেও রেকারিং ডিপোজিটের সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। রেকারিংও সুরক্ষিত এবং নিরাপদ রাখে বিনিয়োগকারীর আমানতকে। আর সেই সঙ্গে নিশ্চিত রূপে রিটার্ন পেয়ে যান তাঁরা। যে-সব বিনিয়োগকারী ঝুঁকির মধ্যে যেতে চান না, তাঁদের জন্য রেকারিং ডিপোজিট একেবারেই আদর্শ। পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড (Public Provident Fund) বা পিপিএফ (PPF) হল দীর্ঘ মেয়াদী কর-সাশ্রয়ী বিনিয়োগের মাধ্যম। আর পিপিএফ-এর ক্ষেত্রে লক-ইন পিরিয়ড হল ১৫ বছর। এই সুবিধা প্রদান করছে ভারত সরকার। ফলে সেখান থেকেই ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে পিপিএফ-এর সুদের হার নির্ধারণ করা হয়। ১৫ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হলে বিনিয়োগকারী গচ্ছিত টাকা তুলে নিতে পারেন, যা সম্পূর্ণ কর-মুক্ত।
শুধু তা-ই নয়, পিপিএফ-এর ক্ষেত্রে টাকা আংশিক ভাবেও তোলা যায়। এ-ছাড়া ঋণও নিতে পারেন বিনিয়োগকারী। যদি নির্দিষ্ট কোনও পরিস্থিতির উদ্রেক হয়, তবে বিনিয়োগকারী মেয়াদের আগেই টাকা তুলে নিতে পারেন। আর ১৫ বছরের মেয়াদ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও বিনিয়োগকারী সেই টাকা ওই সময় তুলে নিতে না-চাইলে তিনি অতিরিক্ত পাঁচ বছর সময় বাড়াতে পারেন।
এমপ্লয়ি পেনশন প্ল্যান (Employee Pension Plan):অবসরকালীন জীবনের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে বিনিয়োগের এই বিকল্প। এমপ্লয়ি পেনশন প্ল্যান (Employee Pension Plan) বা ইপিএফ (EPF)-এর ক্ষেত্রে বেতনভোগী মানুষজন ১৯৬১ সালের আয়কর আইনের ৮০সি ধারার অধীনে ট্যাক্স ডিডাকশন থেকে উপকার পেতে পারে। কোনও বেতনভোগী কর্মচারীর মাসিক বেতন থেকে ইপিএফ-এর জন্য টাকা কাটা হয়। আর যে পরিমাণ টাকা কাটা হচ্ছে, সেই পরিমাণ টাকা নিয়োগকারী সংস্থাও ইপিএফ-এ প্রদান করে। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পরে ইপিএফ থেকে যে টাকা পাওয়া যায়, তা সম্পূর্ণ রূপে ট্যাক্স-ফ্রি। প্রতি ত্রৈমাসিকে ভারত সরকার ইপিএফ-এর হার নির্ধারণ করে।
ভলান্টারি প্রভিডেন্ট ফান্ড অনুসারে (Voluntary Provident Fund), বিনিয়োগকারী বা গ্রাহক প্রয়োজনীয় পরিমাণের (পিপিএফ) সর্বনিম্ন মূল্যের থেকে বেশি প্রদান করতে পারেন। তবে মাথায় রাখা জরুরি যে, ইপিএফ একমাত্র অবসরের পরেই পাওয়া যায়। আর বিনিয়োগকারী নির্দিষ্ট প্রয়োজনীয়তার মাপকাঠি পূরণ করলে তবেই ইপিএফ-এর টাকা হাতে পেতে পারেন।
ন্যাশনাল রিটায়ারমেন্ট সিস্টেম (National Retirement System):ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম (National Pension System) বা এনপিএস (NPS) বিনিয়োগের দারুণ একটি বিকল্প। যাঁরা এই স্কিমে বিনিয়োগ করবেন, তাঁরা অবসর নেওয়ার আগে পর্যন্ত টাকা তুলতে পারবেন না। আর এই স্কিমে রিটার্ন আসবে পিপিএফ এবং ইপিএফ-এর তুলনায় অনেকটাই বেশি। তবে মেয়াদ পূরণের পর এনপিএস থেকে প্রাপ্ত অর্থ কিন্তু ট্যাক্স-ফ্রি নয়। আর এর ফলে বিনিয়োগকারী নিয়মিত পেনশন পাবেন।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
বাজারে বিনিয়োগ করার একাধিক অপশন রয়েছেন ? কিন্তু আপনার জন্য কোনটা সঠিক হবে, জেনে নিন
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement