সাবধান! No Cost EMI-তে লাভ হয়, না কি আদতে ফাঁদে পড়ছেন? জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের মত!

Last Updated:

এতে কি আদৌ কোনও সুবিধে হয়? না কি এটা আদতে একটা ফাঁদ?

#কলকাতা: দুর্গাপুজো সবে শেষ হয়েছে। সামনেই কালীপুজো, ধনতেরস, ভাইফোঁটা। লাইন দিয়ে পর পর পার্বণ। উৎসবের এই মরশুমেই সবচেয়ে বেশি কেনাকাটা হয়। গ্রাহক টানতে মনভোলানো সব অফার নিয়ে হাজির হয় কোম্পানিগুলো। আজকাল ই-কমার্স সংস্থাগুলি নো কস্ট ইএমআই এবং পরে পেমেন্টের সুবিধে নিয়ে এসেছে। ফলে উৎসবের মরশুমে যেন হাতে চাঁদ পেয়েছেন ক্রেতারা। কিন্তু এতে কি আদৌ কোনও সুবিধে হয়? না কি এটা আদতে একটা ফাঁদ?
অনলাইনে কেনাকাটা করা বেশিরভাগ গ্রাহকই ‘সিম্পল’, ‘রেজার পে’-র মতো পেমেন্ট কোম্পানির উপরই ভরসা করেন। এই ফিনটেক কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের কেনাকাটার জন্য তৎক্ষণাৎ অর্থ যোগায়। এবং কয়েকদিনের মধ্যে সেই টাকা পরিশোধের সুবিধে প্রদান করে। ‘বাই নাও পে ল্যাটার’-এর মতো সুবিধে এই ভাবেই কাজ করে। কিন্তু অধিকাংশ বাজার বিশেষজ্ঞ বলছেন, এটা আদতে খুড়োর কল। সুবিধে কম, ঋণের ফাঁদ বেশি।
advertisement
advertisement
কেন বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন: বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উৎসবের মরশুমে মানুষ কেনাকাটা করে। নিজের এবং প্রিয়জনকে উপহার দেয়। এটাকে কাজে লাগাতে ফিনটেক কোম্পানিগুলো নো কস্ট ইএমআই এবং পরে বিল পরিশোধের মতো সুবিধে নিয়ে হাজির হয়। কেনাকাটার সময় গ্রাহকের পরিবর্তে কোম্পানিগুলো বিল মেটায়। পরে গ্রাহককে টাকা শোধ করতে হয়। কিন্তু টাকা শোধের জন্য খুব কম সময় পাওয়া যায়। স্পষ্টতই বেশিরভাগ গ্রাহকই এই অল্প সময়ের মধ্যে টাকা শোধ করতে পারেন না। তখনই তাঁদের উপর চাপে সুদের বোঝা। যা ক্রমশ বাড়তেই থাকে।
advertisement
বিশাল সুদ ব্যক্তিগত ঋণের মতো দেখায়: সিম্পল এবং রেজার পে-র মতো ফিনটেক কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের ১০ হাজার পর্যন্ত ক্রেডিট দেয়। কেনাকাটার সময় নিজেরাই সেই টাকা মিটিয়ে দেয়। পরে মেটাতে হয় গ্রাহকদের। তখনই শুরু হয় আসল খেলা। যদি বকেয়া টাকা বিল পরিশোধের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মেটানো না হয় তাহলে বকেয়া টাকার উপর ৩০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা ধার্য করে কোম্পানিগুলো। এখানেই শেষ নয়, বিল শোধ দিতে দেরি হলে চাপে মোটা অঙ্কের সুদ। পার্সোনাল লোনের মতো বার্ষিক ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ হারে সুদ দিতে হয়।
advertisement
নো কস্ট ইএমআই… একটা প্রতারণা: ই-কমার্স কোম্পানিগুলি গ্রাহকদের জন্য নো কস্ট ইএমআই অফার করে। গ্রাহক খুব খুশি। তিনি ভাবছেন, সুদ ছাড়াই ঋণ মিলছে। তবে বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনও ক্রেডিটই বিনামূল্যে আসে না। নো কস্ট ইএমআই-তে তো একেবারেই নয়। সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক বা ঋণদাতা সংস্থাকে পণ্য বিক্রিয়কারী সংস্থা সুদ পরিশোধ করে। যা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ফিনটেক কোম্পানিগুলো গ্রাহককে বিনা খরচে ইএমআই দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আদতে মোটা টাকা সুদ নেয়।
advertisement
কীভাবে এই ফাঁদ থেকে মুক্তি মিলবে: আজকাল ‘বাই নাও পে ল্যাটার’ ব্যাপক জনপ্রিয়। উৎসবের মরশুম তো বটেই অন্যান্য সময়েও এভাবে কেনাকাটা করেন বহু মানুষ। ধীরে ধীরে এতেই অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে আমজনতা। কারণ তাঁরা ভাবছেন, এতেই লাভ হচ্ছে। কিন্তু পরিসংখ্যান দেখলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। রেজার পে-র তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে এই ‘বাই নাও পে ল্যাটার’-এর ব্যবহার ৬০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের সাবধান থাকতে হবে। খুব সন্তর্পণে ব্যবহার করতে হবে এই সুবিধে। নাহলেই ঋণের ফাঁদে জড়িয়ে পড়া অবশ্যম্ভাবী। এই ফাঁদে পা দিতে বারণ করছেন ব্যাঙ্কিং বিষয়ক বিশেষজ্ঞ অশ্বিনী রানা। তাঁর মতে, নগদে কেনাকাটা করাই সবচেয়ে ভালো। অর্থাৎ টাকা থাকলে তবেই জিনিসপত্র কেনা উচিৎ। ক্রেডিট নৈব নৈব চ। অবশ্যই অন্যান্য সুবিধের জন্য নিজের কাছে ক্রেডিট কার্ড রাখতে হবে। কিন্তু খুব দরকার না পড়লে তা দিয়ে কেনাকাটা নয়। আর এটা সবাই জানে যে ক্রেডিট কার্ডে উচ্চ হারে সুদ দিতে হয়। সময়ে সেই টাকা না পরিশোধ করলে বকেয়ার উপরও সুদ চাপে। এমন পরিস্থিতিতে খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলে ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটা এড়িয়ে যাওয়াই উচিৎ।
advertisement
লোন এবং ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘মাইলোনকেয়ার’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও গৌরব গুপ্তারও একই মত। তিনি বলছেন, ‘বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান অনলাইন এবং অফলাইন খুচরো বিক্রেতাদের সঙ্গে চুক্তি করে। ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, গ্যাজেট বা অন্য জিনিসপত্র কেনার জন্য গ্রাহককে তারা ঋণ দেয়। এটাকেই ‘নো কস্ট ইএমআই’ হিসেবে বিজ্ঞাপন করা হয়েছে। এই ধরনের ঋণে প্রকৃত সুদের হার সাধারণ ১৬ থেকে ২৪ শতাংশ। যা খুবই বেশি। তাই এই ধরনের চটক গ্রাহকদের এড়িয়ে যাওয়াই ভাল’।
বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
সাবধান! No Cost EMI-তে লাভ হয়, না কি আদতে ফাঁদে পড়ছেন? জেনে নিন বিশেষজ্ঞদের মত!
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement