বর্ধমান: বর্ধমানের কুলের কদর প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায়। প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় বিপুল জনসমাগমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্যবসায়িক কার্যকলাপ। বিশেষত বাংলার ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন কুল বিক্রি করে। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী থেকে বহু পাইকার লরি ভরতিকুল নিয়ে কুম্ভমেলায় যাচ্ছেন। পুণ্যার্থীরা সানন্দে কুল কিনছেন, ফলে চাষিরাও ভালো দাম পাচ্ছেন এবং মুখে হাসি ফুটছে পূর্বস্থলীর কৃষকদের। বাউকুল, ভারতসুন্দরী, বলসুন্দরীসহ নানা প্রজাতির কুলের স্বাদ এবং গুণাগুণ সম্পর্কে সারা দেশ থেকে আগত মানুষজন অবগত হচ্ছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলার মধ্যে পূর্বস্থলী সবজি ও ফল উৎপাদনের জন্য সুপরিচিত।
সারা বছর ধরে এখানে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কুল চাষেও বিশেষ সাফল্য এসেছে। মুকশিমপাড়া, কালেখাঁতলা-১, শ্রীরামপুর, রানিপুর ও বকপুর অঞ্চলের কৃষকরা নানা জাতের কুল চাষে মনোযোগ দিয়েছেন। পূর্বস্থলী-২ ব্লকের সরডাঙা ও বড়গাছি এলাকায় বিপুল পরিমাণ জমিতে বাউকুল, বলসুন্দরী ও ভারতসুন্দরী কুলের চাষ হচ্ছে। এবার কুলের উৎপাদন তুলনামূলক কম হওয়ায় বাজারে দাম বেশি। লরি ভরতিকুল নিমেষের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে প্রয়াগরাজে।
রানিপুরের কুল চাষি বলরাম মণ্ডল জানান, আমাদের কুল এখন কুম্ভ মেলায় যাচ্ছে। পাইকাররা এসে লরি করে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদেরও লাভ হচ্ছে, অমরা অনেক খুশি। মেলায় প্রচুর বিদেশীদর্শনার্থীরাও এসেছেন, যাঁরা বাংলার নানা জাতের কুলের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন। জামালপুরের বেশ কিছু আড়তদারের কথায়, এবারের ফলন কম হলেও বাজারে দাম বেশি এবং চাহিদা অত্যন্ত ভালো। শিবরাত্রির মেলা ঘনিয়ে এলেও কুম্ভমেলায় বিপুল জনসমাগমের কারণে কুল বিক্রি ভালো হচ্ছে।
বর্তমানে বাউকুল ২০-২২ টাকা, বলসুন্দরী ২৪-২৫ টাকা এবং ভারতসুন্দরী ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার দাম ভালো, যা চাষিদের জন্য বেশ আনন্দের। অনেক কৃষক এখন আপেল কুল চাষেও মনোযোগ দিচ্ছেন এবং লাভবান হচ্ছেন। সার্বিকভাবে, কুম্ভমেলায় বাংলার কুলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্বস্থলীর চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হচ্ছেন। ভবিষ্যতে কুল চাষ আরও সম্প্রসারিত হলে এই অঞ্চল দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফল উৎপাদন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।