#নয়াদিল্লি: টাটা স্টিল (Tata Steel)-এর শেয়ার দর আপাতত ৩৩ শতাংশ কম রয়েছে। গত ৫২ সপ্তাহের নিরিখে এটিও সর্বনিম্ন দর, প্রায় ৯৯১.৮০ টাকা। NSE-র হিসেব তাই বলছে। শুক্রবার বাজার খোলার সময় টাটা স্টিলের শেয়ার দর ১৫ টাকা প্রতি শেয়ারে কম ছিল। সারাদিনের কারবার শেষে প্রায় ২০ কমে যায় গত ৫২ সপ্তাহের সর্বনিম্ন দর ১০১০.৬৫ টাকার থেকে।
যাই হোক, ২০২০-২০১২১ অর্থবর্ষের নিরিখে বাজারে টাটা স্টিলের শেয়ার এর আগে যথেষ্ট ভাল চলেছে। যার মধ্যে টাটা তার লাভ প্রায় দ্বিগুণ করে ফেলেছে। যেহেতু স্টিলের দাম বাড়ছে।
আরও পড়ুন- Dostarlimab! এই ওষুধেই সারিয়েছে মারণ ক্যান্সার রোগ! প্রতি ডোজের দাম পড়বে কত?
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্টিলের দামের জন্যই এমনটা হয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রায় ২৫ শতাংশের কাছাকাছি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভারত সরকার ইস্পাত রফতানিতে অতিরিক্তি শুল্ক আরোপ করার পরে, সমস্যা তৈরি হয়েছে। গত কয়েক বছরে যেমন ব্যবসা হয়েছে, তেমন আর হচ্ছে না। ইস্পাত রফতানি কমছে। এ ছাড়া বর্ষার মরসুম দ্রুত এগিয়ে আসছে, যার ফলে ধাতব পণ্যের চাহিদা আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সুতরাং, টাটা স্টিল Q4FY22 সংখ্যার তুলনায় Q1FY23 কম আয় রিপোর্ট করবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁদের আশঙ্কা আগামী দু’তিন মাসে স্টক আরও খানিকটা দুর্বল হয়ে পড়বে।
ইক্যুইটি রিসার্চ বিশ্লেষক পুনিত পাটনির (Punit Patni) মতে, টাটা স্টিল লিমিটেড দু’ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এক, দরপতন এবং দুই, কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি। এটাই সব নয়। এর উপর ভারত সরকার ১৫ শতাংশ রফতানি শুল্ক ঘোষণা করেছে সমাপ্ত ইস্পাত পণ্যের উপর। যা ইস্পাত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা। এতে বিক্রি বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে চলেছে। তারই ফলশ্রুতিতে টাটা স্টিল তার ৫২-সপ্তাহের সর্বোচ্চ মূল্য থেকে ৩৫ শতাংশ নিচে পড়েছে।
আরও পড়ুন- বিশ্বের ইতিহাসে এই প্রথম! স্রেফ ওষুধেই নির্মূল ক্যান্সার, চাঞ্চল্য চিকিৎসা মহলে!
এখন কি শেয়ার কেনার সময়? GCL সিকিউরিটিজের ভাইস চেয়ারম্যান রবি সিংহল (Ravi Singhal) বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার ইস্পাতের উপর আমদানি শুল্ক কমানোর পর এই স্টকটি ব্যাপক ভাবে চাপে পড়েছে। আমাদের আশঙ্কা এটি ৮০০ লেভেলেরও নিচে চলে যেতে পারে।’ সিংহল আরও বলেন, তবে আরও কয়েকটি জিনিসের উপর লক্ষ্য রাখতে হবে। চিনের আনলক হওয়া বা সে দেশে স্টিমুলাস প্যাকেজের উপরও নির্ভর করছে ইস্পাতের দাম। সুতরাং, ৯০০ থেকে ৮০০-র মধ্যে থাকতে চেষ্টা করতে হবে। ৭০০-র নিচে নামলে খুব সমস্যা হতে পারে। লক্ষ্য রাখতে হবে ১২৭০ থেকে ১৩৭০-এর মধ্যে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, সরকারের পরিকাঠামো ব্যয়, বেসরকারি ক্যাপেক্স (Capex)-এর পুনরুজ্জীবন এবং ক্রমবর্ধমান আবাসনের চাহিদার কারণে এ দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা ভাল। ফলে মধ্যম থেকে দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক ফল হতেই পারে।
তার উপর, কার্বন নির্গমনের নিয়ম মেনে চলতে চিন আগামী দশকে ইস্পাত উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উন্নত দেশগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের দিকে মনোনিবেশ করছে এবং কয়লাভিত্তিক ইস্পাত উৎপাদন কমিয়ে সবুজ ইস্পাত (Green Steel) উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে, যেমন হাইড্রোজেন এবং কার্বন ভিত্তিক ইস্পাত। চিন ইস্পাত উৎপাদন কম করার পক্ষপাতী। গ্রিন স্টিলের উপর উন্নত দেশগুলির ক্রমশ নির্ভর করতে চাইছে। তার ফলে আগামী দিনে সারা বিশ্বে ইস্পাত সরবরাহে ঘাটতি হবে। আর সেখানেই ভারতীয় ইস্পাত নির্মাতাদের কাছে সুযোগ আসতে পারে সেই সরবরাহ ঘাটতি পূরণের। কম খরচে লৌহ আকরিক এবং সস্তা শ্রমের যোগান ভাল থাকায় ভারতীয় সংস্থাগুলির মধ্যে পারস্পরিক প্রতিযোগিতার জায়গা রয়েছে।
পুনিত পাটনি বলেন ‘বিনিয়োগকারীরা মাঝারি থেকে দীর্ঘমেয়াদী সময়ের জন্য এই স্টকটি সংগ্রহ করতে পারেন, তবে রফতানি শুল্ক কতক্ষণ থাকবে তার উপর লক্ষ্য রেখে স্বল্প-মেয়াদী বিনিয়োগের কথা ভাবতে হবে।’
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Nifty, Stock market, TATA