কবে আর কীভাবে বন্ধ হবে রুপির পতন? আমজনতার উপরেই বা এর কেমন প্রভাব পড়তে চলেছে?
Last Updated:
তবে কিছু রিসার্চ রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, আরবিআই গভর্নরের সামনে দু’টি বড় সমস্যা রয়েছে। যার মধ্যে প্রথমটি হল, রুপির পতন আটকানো। আর দ্বিতীয়টি হল, ভারতীয় মুদ্রা ভাণ্ডারে ডলারের সাশ্রয়।
#কলকাতা: চলতি অক্টোবর মাসে এখনও পর্যন্ত ভারতীয় রুপি বা ভারতীয় টাকার মূল্য ২ শতাংশেরও বেশি কমেছে। অর্থাৎ চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত টাকার দর প্রায় ১২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এই পরিস্থিতি দেখে সবার মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরছে যে, মার্কিন ডলারের সাপেক্ষে রুপির চলমান পতন কবে বন্ধ হবে? আর এই প্রশ্নের উত্তর বোধহয় আরবিআই গভর্নরই দিতে পারবেন! তবে কিছু রিসার্চ রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, আরবিআই গভর্নরের সামনে দু’টি বড় সমস্যা রয়েছে। যার মধ্যে প্রথমটি হল, রুপির পতন আটকানো। আর দ্বিতীয়টি হল, ভারতীয় মুদ্রা ভাণ্ডারে ডলারের সাশ্রয়।
কিন্তু রুপির দর পতন কেন হচ্ছে?
বিশ্বের সমস্ত দেশেই বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা বৈদেশিক লেনদেন করে থাকে। সেই সঙ্গে দেশের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীও কিনে নিতে পারে। বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারে হ্রাস এবং বৃদ্ধির মাধ্যমেই সেই দেশের মুদ্রার গতিবিধি নির্ধারিত হয়। ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডারে থাকা ডলার যদি আমেরিকার রুপির ভাণ্ডারে থাকা টাকার সমান হয়, তাহলেই রুপির মান বা মূল্য স্থির থাকবে।
advertisement
advertisement
আরবিআই গভর্নরের এখন কী করণীয়?
আরবিআই গভর্নর যদি এখন রুপি বাঁচাতে ডলার বিক্রি করেন, তা-হলে মুদ্রার ভাণ্ডার কমে যাবে। অন্য দিকে আবার, তিনি যদি ডলার বাঁচাতে চান, তা-হলে রুপি মূল্য দুর্বল হয়ে যায়। সেই কারণেই বিশেষজ্ঞরা এখন মনে করছেন যে, বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য আরবিআই-এর কাছে মাত্র কয়েকটি উপায়ই অবশিষ্ট রয়েছে।
advertisement
প্রথমত, রুপির পতন হতে দিতে হবে। একটি সাম্প্রতিক ব্রোকারেজ রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, আরবিআই যদি ডলার বিক্রি করে এই পরিস্থিতি না-সামাল দেয়, তা-হলে ভারতীয় রুপি ডলার প্রতি ৮৫-র স্তরে নেমে যেতে পারে।
সেই সঙ্গে আরবিআই-কে সুদের হার বাড়াতে হবে। এমতাবস্থায় ভারতীয় পুঁজিবাজার বিনিয়োগের জন্য আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে, অর্থাৎ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি অর্থ উপার্জনের সুযোগ পাবেন। তাই তাঁরা ভারতে বিনিয়োগ আরও বাড়াতে পারবেন।
advertisement
এ ছাড়াও যদি বিদেশ থেকে আমরা কোনও পণ্য কিনতে বা আমদানি করতে ১০ মার্কিন ডলার খরচ করি, তা-হলে একই পরিমাণ পণ্য রফতানিও করতে হবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা স্থিতিশীল হবে এবং রুপির দরও শক্তিশালী হবে।
আমজনতার কী সমস্যা হবে?
রুপির দুর্বল অবস্থা এবং বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার হ্রাস পাওয়া - এই দুই ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষের সমস্যা বেড়ে যায়। প্রথমে মুদ্রা ভাণ্ডারের ক্ষতির কথাই বলা যাক? মুদ্রা ভাণ্ডার কমে গেলে আমাদের দৈনন্দিন জিনিসপত্র, যা আমরা বিদেশ থেকে ক্রয় করি যেমন- অপরিশোধিত তেল, ডালসহ অন্যান্য পণ্য ইত্যাদি, সেগুলির দাম আকাশছোঁয়া হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে বাড়বে দেশের মুদ্রাস্ফীতিও।
advertisement
আরও পড়ুন: বিরিয়ানি এবছর থাক, ভাইফোঁটার দুপুরে হয়ে যাক চিকেন তেহারি, সাবেক ঢাকার এই পদই ঝড় তুলবে জিভে!
অন্য দিকে আবার, ভারত মার্কিন ডলার বাঁচানোর চেষ্টা করলে রুপি দুর্বল হবে। ফলে সে-ক্ষেত্রে দেশে সুদের হার বাড়বে। আর এর সরাসরি প্রভাব পড়বে আর্থিক বিকাশের উপর। আমজনতাকে আরও বেশি ইএমআই-এর বোঝা টানতে হবে। হাতে খরচ করার মতো টাকার পরিমাণ কমতে থাকবে। ফলে এটি চাহিদার উপর একটি বড়সড় প্রভাব ফেলবে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থার উপরেও সুদের বোঝা বাড়বে।
advertisement
আরও পড়ুন : ভাই কফি ভালোবাসেন? কাফের মত ফেনা তোলা কফি খাইয়ে চমকে দিন ফোঁটায়, হাত দিয়ে ফেটাতে হবে না, স্রেফ মানুন এই নিয়ম!
এর আগে কবে রুপিতে বড়সড় পতন দেখা গিয়েছে?
২০১৩ সালে রুপিতে তীব্র পতন দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় রঘুরাম রাজন সুদের হার বাড়ানোর পরে রুপির পতন বন্ধ হয়। আর এর মেয়াদ স্থায়ী হয়েছিল ২০১৩ - ২০১৬ সাল পর্যন্ত। রাজন গভর্নর হওয়ার পরে ডলারের মূল্য ছিল ৬৭.০৩ টাকা। এর পর ২০১৪ পর্যন্ত তা ৬৩.১৭ টাকায় নেমে আসে। ২০১৫ সালে রুপির স্থিতি ফের দুর্বল হতে শুরু করে এবং এক ডলারের মূল্য ৬৩.১৭ টাকা থেকে ৬৬.১৬ টাকায় পৌঁছে যায়।
advertisement
আরও পড়ুন: বিরিয়ানি এবছর থাক, ভাইফোঁটার দুপুরে হয়ে যাক চিকেন তেহারি, সাবেক ঢাকার এই পদই ঝড় তুলবে জিভে!
আবার ২০১৬-য় রুপির মূল্য স্থিতিশীল ছিল। রঘুরাম রাজনের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬-র ৪ সেপ্টেম্বর। তখন এক ডলারের দাম ছিল ৬৬.৬৭ টাকা।
এর পর ২০১৬ থেকে ২০১৮-র পরিসংখ্যানে নজর দেওয়া যাক। তৎকালীন গভর্নর উর্জিত প্যাটেলের সময়ে এক ডলারের দাম ৬৭.১৯ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৬৯.৭৯ টাকা। অর্থাৎ দুই বছরে ভারতীয় মুদ্রা ২.৬ টাকা দুর্বল হয়েছিল।
এর পরে ২০১৯ - ২০২০ সালে করোনার সময় ভারতীয় মুদ্রা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এক বছরের ব্যবধানে ডলারের সাপেক্ষে রুপি প্রায় চার টাকা কমেছে। ২০১৯ সালে এক ডলারের দাম ছিল ৭০.৪২ টাকা, যা ২০২০-র মধ্যে ৭৪.১০ টাকায় পৌঁছে গিয়েছিল।
২০২১-এ কিছুটা হলেও উন্নতি হয় এবং এক ডলারের দাম ৭৪.১০ টাকা থেকে ৭৩.৯১ টাকায় নেমে আসে। তবে চলতি বছরে তা সবচেয়ে বেশি বেড়ে গিয়েছে। এখন এক ডলারের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৮৩ টাকা।
ব্যবসা-বাণিজ্যের সব লেটেস্ট খবর ( Business News in Bengali) নিউজ 18 বাংলা-তে পেয়ে যাবেন, যার মধ্যে ব্যক্তিগত অর্থ, সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের টিপস (সেভিংস ও ইনভেস্টমেন্ট টিপস) ব্যবসার উপায়ও জানতে পারবেন। দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর অনলাইনে নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভি-তে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ সব খবরের আপডেট পেতে ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
October 27, 2022 12:37 AM IST
বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
কবে আর কীভাবে বন্ধ হবে রুপির পতন? আমজনতার উপরেই বা এর কেমন প্রভাব পড়তে চলেছে?