#কলকাতা: আর্থিক স্বাস্থ্য বিগড়ে সঙ্কটে পড়া লক্ষ্মীবিলাস ব্যাঙ্ক শেষমেশ ডিবিএস ব্যাঙ্কের ভারতীয় শাখার সঙ্গেই মিশে গেল ৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঘোষণা মতোই গত ২৭ নভেম্বর এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ৷ ওই দিন থেকেই ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের টাকা তোলায় বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে ৷
অনিশ্চয়তার কাল পেরিয়ে এই সংযুক্তি LVB-র আমানতকারী, গ্রাহক এবং কর্মচারীদের স্থিতিশীলতা এবং উজ্জ্বলতর সম্ভাবনার পথ দেখাল। এলভিবি-র উপর আরোপিত মোরেটোরিয়াম ২৭ নভেম্বর ২০২০ থেকে তুলে নেওয়া হয় এবং তৎক্ষণাৎ ব্যাঙ্কিং পরিষেবা আবার চালু করা হয়। ব্যাঙ্কের সমস্ত শাখা, ডিজিটাল চ্যানেল এবং এটিএমগুলো যথারীতি কাজ করতে শুরু করে। এলভিবি-র গ্রাহকরা এখন ব্যাঙ্কের সমস্ত পরিষেবার সুযোগ নিতে পারবেন। পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি জারী না হওয়া পর্যন্ত সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আর ফিক্সড ডিপোজিটগুলোর সুদ আগের LVB-র হারেই দেওয়া হবে। LVB-র সমস্ত কর্মচারীরাও তাঁদের চাকরিতে সেই চাকরির শর্তাবলী অনুযায়ীই বহাল থাকবেন। তাঁরা এখন থেকে DBIL-এর কর্মচারী।
ডিবিএসের টিম এলভিবি-র সহকর্মীদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে, যাতে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এলভিবি-র সিস্টেমস ও নেটওয়ার্ক ডিবিএস-এ ইন্টিগ্রেট করে ফেলা যায়। একবার ইন্টিগ্রেশন সম্পূর্ণ হলে গ্রাহকরা প্রডাক্ট ও পরিষেবার আরও বড় সম্ভার ব্যবহার করতে পারবেন। তখন ডিবিএস ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সম্পূর্ণটাই পাবেন, যার সারা বিশ্বে সুনাম রয়েছে।
ডিবিএস ব্যাঙ্ক ইন্ডিয়া লিমিটেড (ডিবিআইএল) যথেষ্ট পুঁজিসম্পন্ন ব্যাঙ্ক এবং তার ক্যাপিটাল অ্যাডেকোয়েসি রেশিও (সিএআর) সংযুক্তির পরেও নিয়মানুযায়ী যা থাকা প্রয়োজন তার চেয়ে উপরেই থাকবে। এর পাশাপাশি ডিবিএস গ্রুপ এই সংযুক্তিতে সাহায্য করার জন্য এবং ভবিষ্যৎ বৃদ্ধির স্বার্থে ডিবিআইএলে ২,৫০০ কোটি টাকা (৪৬৩ মিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার) বিনিয়োগ করবে। এই টাকা পুরোপুরি ডিবিএস গ্রুপের বর্তমান সম্পদ থেকে জোগানো হবে।
বিরোধী শিবিরের অবশ্য অভিযোগ, মোদি সরকারের আমলে আর্থিক স্বাস্থ্য খারাপ হচ্ছে একের পর এক ব্যাঙ্কের। ইয়েস ব্যাঙ্কে তৈরি হওয়া সঙ্কট সামাল দিতে সম্প্রতি তার ৪৫% শেয়ার কিনতে হয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ককে। তার জন্য ৭২৫০ কোটি ঢেলেছে ওই সরকারি ব্যাঙ্ক। এ বার লক্ষ্মীবিলাস ব্যাঙ্ককে বাঁচানোর পালা। ফারাক হল, এই প্রথম কোনও ব্যাঙ্কের সঙ্কটমুক্তির জন্য তাকে মিশে যাওয়ার ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে বিদেশি ব্যাঙ্কের সঙ্গে।