Alipurduar News: সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত প্রয়াত বঙ্গরত্নের স্ত্রী
- Published by:Soumabrata Ghosh
Last Updated:
বঙ্গরত্ন ঢোলবাদক বলরাম হাজরা প্রয়াত হওয়ার পর চরম আর্থিক সমস্যা ঘিরে ধরেছে তার পরিবারকে। তাঁর স্ত্রী বহুবার বিধবা ভাতার জন্য আবেদন জানালেও তা মেলেনি। মাঝে দুয়ারে সরকারের শিবিরে লাইন দাঁড়িয়েছিলেন।
#আলিপুরদুয়ার : বঙ্গরত্ন ঢোলবাদক বলরাম হাজরা প্রয়াত হওয়ার পর চরম আর্থিক সমস্যা ঘিরে ধরেছে তার পরিবারকে। তাঁর স্ত্রী বহুবার বিধবা ভাতার জন্য আবেদন জানালেও তা মেলেনি। মাঝে দুয়ারে সরকারের শিবিরে লাইন দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। বঙ্গরত্ন স্মারক হাতে নিয়ে বলরাম হাজরার স্ত্রী ভারতী হাজরা সরকারি সাহায্যের আর্জি জানাচ্ছেন। বলরাম বাবুর মৃত্যুর পর প্রচণ্ড আর্থিক সঙ্কটে পড়েন স্ত্রী ভারতী হাজরা ও বিশেষভাবে সক্ষম পুত্র চঞ্চল হাজরা। আগে প্রতিবছর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে শারদ সম্মান প্রদান করা হত। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর পরিবারের খোঁজ নেয়নি কেউ। সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত বলরাম বাবুর স্ত্রী ও সন্তান। একসময় মঞ্চে ম্যাজিক দেখাতেন ঢোলবাদক বলরাম হাজরা। নিজে একটা কথাও বলতেন না। কথা বলত তাঁর হাত।
নিতান্ত অরসিকের সাধ্য নেই অন্য দিকে কান দেয় বা নজর ঘোরে অন্য দিকে। ঘাড় ধরে বসিয়ে রাখতে পারতেন ঘন্টার পর ঘন্টা।এমনই তাঁর ক্ষমতা। তিনি যে ঢোল সম্রাট! বলরাম হাজরা। এই নামের কাছে আনত নয়! গোটা লোক শিল্পী জগৎ তো বটেই তাবড় শিল্পীকুল। তাঁদের কথায়,বলরাম ওস্তাদের বাজনা না শুনলে জীবন বৃথা। যে শোনেনি সে জানে না কী হারালো! যাঁকে ঘিরে এমন মুগ্ধতার ঢেউ তিনি কিন্তু আশ্চর্য নির্লিপ্ত এক মানুষ। শুধু বোল আর ঢোল এই ছিল তাঁর জীবন।
advertisement
advertisement
আলিপুরদুয়ারের উত্তর পাটকাপাড়া গ্রাম। সবুজ আর সবুজ। বাতাসে কচি চা পাতার গন্ধ। আদিবাসী এলাকা। প্রখর দারিদ্র্য। বাবা ছিলেন সরকারী চৌকিদার। নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যায় ঘরে। এমন অবস্থায় স্কুল বই, পড়াশোনা যে বিলাসিতা। তাই বাধা পড়ল পড়াশোনায়। কিছুটা যেন জীবনের দায়েই হাতে তুলে নিয়েছিলাম বাজনা। রক্তে সুর সবে বইতে শুরু করেছে। বিয়ে-শাদী, শুভ কাজে ঢোল বাজাতেন। তৈরি হচ্ছিল হাত। ঢোল বাজিয়ে হিসেবেই চাকরি পেলেন এক তামাক সংস্থায়। ঘুরে ঘুরে বাজিয়ে প্রচার করতেন সংস্থার হয়ে। বিভিন্ন রাজ্যে পাড়ি দিতেন। তারপর একদিন যোগ দিলেন যাত্রা দলে। পালা চলার সময় বাজাতেন। সেভাবেই কলকাতার যাত্রাদলের কর্মী।
advertisement
আরও পড়ুনঃ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর নয়া মালিকের হাত ধরে নবরূপে যাত্রা শুরু রায়মাটাং চা বাগানের
অনেক দিন পর্যন্ত বাঁধা বাজিয়ে হিসেবে ছিলেন। জীবনে এসেছে নানা পর্ব। নানা পর্যায়। যাত্রা থেকে ভাওয়াইয়া গানের দলে। উত্তর বঙ্গের প্রখ্যাত লোকশিল্পী সুখবিলাস বর্মনের সঙ্গে বাজাতেন। তারপরই খুলে যায় বিশ্ব মঞ্চের দরজা। বাজনার টানে রাজ্যে-রাজ্যে। দেশে-দেশে।তিনি বঙ্গরত্ন ৷ এক সময় তাঁর ঢোলের আওয়াজে গমগম করত বাড়ি ৷ ছাত্রদের শিক্ষা দিতে বাড়িতেই খুলেছিলেন গুরুকুল ৷ সেই বাড়িতে আজ একরাশ নিস্তব্ধতা। আর্থিক সঙ্কটে পড়ে বাড়িতে মুদির দোকান খুলেছে বঙ্গরত্ন ঢোলবাদক বলরাম হাজরার পরিবার ৷
advertisement
তাঁর জীবদ্দশায় গুরুকুলের আনাচ-কানাচ ভরে যেত ঢোলের নতুন নতুন বোলে। বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর ছাত্র আসত ঢোলের জাদুকর বলরাম হাজরার থেকে বাজনা শিক্ষা নিতে। এখন সেই গুরুকুল বন্ধ। সেই জায়গায় পরিবার চালানোর জন্য ছোট দোকান দিয়েছে তার স্ত্রী। যা আয় হয়,তা দিয়ে সংসার চলে। কবে সরকারি সুবিধা পাবেন বলরাম বাবুর স্ত্রী? উত্তরে পঞ্চায়েত সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, ভারতী হাজরাকে ডাকা হবে এবং বয়স্ক ভাতা দেওয়া হবে।
advertisement
Annanya Dey
Location :
First Published :
September 14, 2022 2:48 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/আলিপুরদুয়ার/
Alipurduar News: সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত প্রয়াত বঙ্গরত্নের স্ত্রী