হোম /খবর /উত্তরবঙ্গ /
পেশায় ব্যবসায়ী, কিন্তু রোজ এলাকায় ঝাড়ু দেন! কারণ শুনলে চমকে যাবেন

Alipurduar News: পেশায় ব্যবসায়ী, কিন্তু রোজ এলাকায় ঝাড়ু দেন! কারণ শুনলে চমকে যাবেন

X
বিশ্বজিৎ [object Object]

Alipurduar News: সকাল হলেই তাঁকে ঝাড়ু হাতে পুরো কালচিনি চৌপথি এলাকা পরিষ্কার করতে দেখা যায়।

  • Share this:

আলিপুরদুয়ার: মনের নোংরা দূর করলে, তবেই সমাজে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ভাবনা শুরু করা যায়। এই কথাটি নিজের জীবনে সত্যি করে দেখিয়েছেন কালচিনির ব‍্যবসায়ী বিশ্বজিৎ ব‍ন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল হলেই তাঁকে ঝাড়ু হাতে পুরো কালচিনি চৌপথি এলাকা পরিষ্কার করতে দেখা যায়। তাঁকে সকাল থেকে ঝাড়ু হাতে এলাকা পরিষ্কার করতে দেখলেই অনেকের মনে হয় ব্যবসায়ী হয়েও এই কাজ কেন করছেন তিনি?

এর উত্তরে রয়েছে অনেক অজানা কাহিনি। বিশ্বজিত বাবুর হেরে গিয়ে জয়ী হওয়ার কাহিনি শোনেননি কেউই। হয়তো জানার ইচ্ছেও কেউ প্রকাশ করেননি। তাঁর হাতে ঝাড়ু দেখে অনেকেই বাঁকা হাসিও হেসেছেন। কিন্তু বিশ্বজিৎবাবু তাঁদেরকে কোনও উত্তর দেননি। বরং রোজ সকালে এলাকা ঝাড়ু দেওয়ার কাজ চালিয়ে গিয়েছেন।

আরও পড়ুন: ট্যুইট করে আত্মঘাতী প্রাক্তন বিজেপি কর্মী, ঘর থেকে উদ্ধার স্ত্রী ও দুই সন্তানের দেহও!

বিশ্বজিৎ ব‍ন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সমাজে নিজেকে দ্বিতীয়বার প্রতিষ্ঠিত করতে ঝাড়ু দেওয়াকেই বেছে নিয়েছেন তিনি। কালচিনির ব‍্যবসায়ী বিশ্বজিৎ ব‍ন্দ্যোপাধ্যায় পনেরো বছর ধরে কালচিনির রাস্তায় ঝাড়ু দিচ্ছেন।শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা কোনও ঋতুই তাঁর ঝাড়ু দেওয়ার কাজ বন্ধ রাখতে পারে না।এলাকা পরিষ্কারের জন‍্য ঝাড়ুদার রয়েছে। তাঁকে ঝাড়ু দিয়ে এলাকা পরিষ্কার করতে দেখলে ওই ঝাড়ুদার তাঁকে অনেকবার মানা করেছেন।তিনি সেই কথা কানেও তোলেননি তিনি।

আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে জীবনবিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশি নম্বর পাওয়া যাবে কী ভাবে? টিপস দিলেন নাম করা শিক্ষক

নিজের জীবনের অজানা কথা বলতে গিয়ে বিশ্বজিৎ বাবু জানান, পনেরো বছর আগে নেশার অন্ধকারে ডুবে যান তিনি। নেশামুক্তির জন্য রিহ্যাব সেন্টারে পাঠানো হয় তাঁকে। নেশামুক্ত হয়ে এলাকায় ফিরে আসেন তিনি।তখন তিনি লক্ষ্য করতেন এলাকার লোকেরা তাঁকে এড়িয়ে যেতেন।বুঝেছিলেন তাঁকে গ্রহণ করতে কেউ চাইছেন না। নেশার অন্ধকারে ডুবে ব‍্যবসা হারিয়ে গিয়েছিল। নতুন করে ব‍্যবসা শুরু করার পুঁজি ছিল না। রিহ্যাব থেকে ফিরে নিজেকে ব‍্যস্ত রাখতে চাইছিলেন। কিন্তু কোনও পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না।

হঠাৎই দেখলেন ঝাড়ুদার না আসায় এলাকা অপরিষ্কার হয়ে আছে। ঠিক করলেন ঝাড়ু দিয়ে এই ময়লা দূর করবেন তিনি। সেই মাফিক শুরু হয় তাঁর কাজ। জীবনে ঘুরে দাঁড়াতে ও নিজেকে ফের প্রতিষ্ঠিত করতে সংগ্রাম শুরু হয় তাঁর। স্বচ্ছতার বার্তা দিতে ঝাড়ু হাতে রোজ সকালে বেরিয়ে পড়েন তিনি। বিশ্বজিৎ বাবু জানান, "মানুষ অনেক কথা বলে। সব কথা কানে তুলতে নেই। মানুষের বাইরেটা যতটা পরিষ্কার, ভেতর ততটাই নোংরা।আগে ওই ময়লা দূর করতে হবে। তারপর এলাকার ময়লা দূর হবে।' তিনি মনের অন্ধকার, ময়লা দূর করে ঝাড়ু দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন।এলাকার প্রায় ত্রিশজন যুবক তাঁকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তাঁরাও আজ নেশামুক্ত। তিনি আরও নেশাগ্রস্ত যুবকদের খুঁজছেন। তাঁদের নেশামুক্ত করিয়ে সমাজের কাজে উদ্বুদ্ধ করার প্রয়াস তিনি চালাচ্ছেন।

অনন্যা দে

Published by:Raima Chakraborty
First published:

Tags: Alipurduar news, Rehab centre