আলিপুরদুয়ার: বিদ্যুৎ-এর খরচ কমাতে সোলার এনার্জি-র ওপর ভরসা আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরি চা বাগানের।গ্রীন এনার্জি বা বিকল্প কোনো শক্তি ব্যবহারের কথা বারবার বলেছেন কেন্দ্র সরকার। উদাহরণ স্বরূপ বায়ো গ্যাস ব্যবহার,ব্যটারিচালিত গাড়ির ব্যবহার দেখা গিয়েছে। তবে সোলার এনার্জি দিয়ে চলছে আস্ত এক চা বাগান ফ্যাক্টরি। এও কি সম্ভব মনে হতেই পারে। সৌরশক্তি ব্যবহার করে ফ্যাক্টরি চালানোর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে মাঝেরডাবরি চা বাগান।বছরে বিদ্যুতের বিল থেকে তাদের সাশ্রয় ৫০-৬০ লক্ষ টাকা। মাঝেরডাবরি চা বাগান সূত্রে জানা যায়,ভারতে প্রথম এই চা বাগানে ফ্যাক্টরি চালানোর জন্য সোলার প্ল্যান্ট বসানো হয়। ওই সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করে কারখানা চালানোর পর যে বিদ্যুৎ বেঁচে যাচ্ছে, সেই পরিমাণ বিদ্যুৎ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন নিগমের কাছে বিক্রি করে বাড়তি টাকাও রোজগার করছে মাঝেরডাবরি চা বাগান। ফলে ধুকতে থাকা চা শিল্পে লাভবান হচ্ছে মালিক এবং শ্রমিক উভয়ই। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়,বিদ্যুতের বকেয়া বিল দিতে না পারায়, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন নিগম লিমিটেড। বন্ধ হয়ে যাওয়া চা বাগান কারখানা,এই রকম উদাহরণ অনেক রয়েছে। ধুকতে থাকা চা শিল্পে বিদ্যুতের বিল মেটানো,অন্যতম সমস্যা।
এই সমস্যা সমাধানেই অচিরাচরিত শক্তির বিদ্যুৎ ব্যবহার করে চা শিল্পে আর্থিক সংকোচনের নতুন দিশা তৈরি করেছে আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরি চা বাগান কর্তৃপক্ষ। প্রতিবারই অভিনব কিছু করার প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায় মাঝেরডাবরি চা বাগানে। এই বাগানেই পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় মশাল জ্বালিয়ে চা পাতা তুলে। তা দিয়ে চা উৎপাদন করা হয়, যা মুন লাইট চা নামে পরিচিত। এই চা বাজারে এক হাজার টাকা কিলোদরে বিক্রি হচ্ছে। এই চা বাগানের হোয়াইট টি যথেষ্ট নাম রয়েছে বাজারে। দশ হাজার টাকা কিলো দরে বিক্রি হয় এই চা। যা সবচেয়ে দামী চা বলে পরিচিত।
আরও পড়ুনঃ দৈনিক মজুরি বৃদ্ধিতে খুশি নন চা বাগানের শ্রমিকরা! ফের অন্দোলনের হুমকি
বর্তমানে এই চা বাগানের ব্লু পিয়া টি বাজারে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। নরম চা পাতা ও অপরাজিতা ফুলের সংমিশ্রণে তৈরি হয়েছে এই চা পাতা। এই চা মিলছে অনলাইনেও।দাম একই। আরও নতুন ধরনের চা পাতা তৈরির প্রয়াস চলছে বলে চা বাগান সূত্রে খবর।দুই বছর আগে প্রায় দু'কোটি টাকা খরচ করে বাগানের ফ্যাক্টরি চালানোর জন্য সোলার প্ল্যান্ট বসানো হয়েছিল ওই চা বাগানে। তাতে প্রতিমাসে প্রায় ছয় লক্ষ টাকা বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করা সম্ভব হচ্ছে বলে দাবি চা বাগান কর্তৃপক্ষের।এই সোলার প্ল্যান্ট-এর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ শূণ্য।একবার install করলে একইভাবে চলে।
আরও পড়ুনঃ জয়গাঁর দলসিংপাড়া চা বাগানের ঝোড়ার জলে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ সড়ক
৩৪২ কিলোভোল্ট সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। বিদ্যুৎ দফতরের পক্ষ থেকে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট মিটার বসানো হয়েছে ফ্যাক্টরি তে। সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করায় এক দিকে যেমন কমছে পরিবেশ দূষণ, অন্যদিকে বার্ষিক বিদ্যুৎ বিল বাঁচিয়ে বিদ্যুৎ বিক্রি করে যে বাড়তি টাকা রোজগার হচ্ছে, তা দিয়ে উন্নয়নকরা হচ্ছে চা বাগানের সার্বিক পরিকাঠামোর। আর্থিক মন্দা ও চা রপ্তানি প্রায় বন্ধ থাকায় একদিকে যখন ধুঁকছে পাহাড়-তরাই ও ডুয়ার্সের বেশির ভাগ চা বাগান, তখন মাঝেরডাবরি চা বাগানে তৈরি হয়েছে স্বনির্ভরতার নতুন দিশা।
মাঝেরডাবরি চা বাগানের ঠিকানা - GHV4+R5J, NH317, Buxa Forest, West Bengal- 736123
গুগল লোকেশন-নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Alipurduar, North Bengal, Solar System