'টিকিটটা দেখি...', TTE সামনে আসতেই টিকিট এগিয়ে দিলেন যাত্রী, পরমুহূর্তেই আঁতকে উঠলেন 'চেকার'! এটা কী? কয়েক মিনিটেই ছুটল ঘাম!

ঠাকুরনগর থেকে শিয়ালদহ যাওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন ওড়িশার মধু। বনগাঁ-শিয়ালদহ রুটে এসি লোকাল ট্রেন চালু হয়েছে শুক্রবার। কিন্তু ভিনরাজ্যে মানুষ মধুর তা ঘূণাক্ষরেও জানা ছিল না। ব্যস্ত সময়ে না বুঝে একটি এসি ট্রেনেই উঠে পড়েন মধু।

কিছু না বুঝেই ঠাকুননগর থেকে শিয়ালদহ যাওয়ার জেনারেল টিকিট কেটে এসি লোকাল ট্রেনে উঠে পরেন তিনি। এরপর ট্রেন দ্রুত গতিতে চলতে থাকে, ট্রেনে তখন যাত্রীদের পাশাপাশি রয়েছে সাংবাদিক থেকে ব্লগাররা।

ট্রেনের কামরায় কামরায় ছিলেন টিটিই। রেল পুলিশও ছিলেন প্রহরায়। নতুন এসি ট্রেনে অন্যান্য যাত্রীরা তখন মশগুল মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে একের পর এক সেলফি আর ছবি-ভিডিও তুলতে।

ট্রেনের মধ্যে এসব কাণ্ড কারখানা দেখে কিছুটা হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন ওড়িশার বাসিন্দা, মধু।তবুও কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা না করেই এসির ঠান্ডা হাওয়া খেতে খেতেই বিন্দাস ট্রেনের সিটে বসেই যাত্রা করছিলেন তিনি।

কিছু সময় পরই শুরু হয় টিটির টিকিট চেকিং। একের পর যাত্রীদের টিকিট দেখার পর মধুর টিকিট দেখতেই চমকে ওঠেন চেকার। একী! এতো জেনারেলের টিকিট। তৎক্ষণাৎ মধুকে ফাইনের কথা জানান টিকিট পরীক্ষক।

মধুও আকাশ থেকে পড়েন! 'টিকিট কেটেছেন, তাও কেন দেবেন ফাইন? বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়ে যায় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। মুহূর্তের মধ্যেই ঠান্ডা-বাতানুকূল কামরায় চড়ল পারদ।

গোটা ঘটনাটি দেখছিলেন আশপাশের যাত্রীরাও। মজাও পাচ্ছিলেন অনেকে। এরপর মধু বিষয়টি খুলে বলেন, তিনি জানান বুঝতে না পেরেই এসি লোকালে উঠে পড়েন তিনি যেহেতু নতুন এই ট্রেন সম্পর্কে বিন্দু বিসর্গ জানা ছিল না তাঁর।

কিন্তু হাজার অনুরোধ-উপরোধেও মিলল না কোনও ছাড়। ফাইন শেষমেশ দিতেই হল অবশেষে। যদিও ফাইন দিয়ে এই ট্রেনে চেপেই শিয়ালদহ পৌঁছন মধু। অগত্যা ৩৪০ টাকা দিয়ে বাংলায় এসি লোকাল ট্রেন চড়ার অভিজ্ঞতা হল ওড়িশার মধুর।

কার্যত বনগাঁ শাখায় প্রথম দিনে চলা এসি লোকাল ট্রেনে ভুল করে উঠে খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি দিতে হল মধুকে। ওড়িশার এই বাসিন্দাকে গুনতে হল অতিরিক্ত টাকা অর্থাৎ ফাইন ৩৪০ টাকা।

তার অপরাধ লোকাল ট্রেনের জেনারেল টিকিট কেটে অপেক্ষায় ছিলেন ট্রেন আসলেই উঠে পরবেন, আর ঠিক সেই মুহূর্তেই আসে এসি লোকাল ট্রেন। মধুও দিব্যি উঠে পরে সেই ট্রেনে।

তবে প্রথম দিন বলেও কোনও ছাড় নেই। নিয়ম প্রথম দিন থেকে একই। তা বেশ কড়া। তাই গচ্চা দিতেই হলে কড়কড়ে প্রায় সাড়ে তিনশ টাকা।

প্রথম দিন এসি ট্রেনে এমন আজব ঘটনার সাক্ষী থাকলেন রেল কর্মী থেকে সাধারণ যাত্রীরা। বাংলায় এর আগেই রানাঘাট শিয়ালদহ এসি ট্রেন চালু হয়েছিল। এদিন থেকে রানাঘাট শিয়ালদহ ভায়া বনগাঁ এসি লোকাল ট্রেন চালু হয়েছে।

রেল কর্মীরা জানান, রানাঘাটা শিয়ালদহ এসি ট্রেনের চেয়ে অনেকটাই বেশি যাত্রীদের চাপ দেখা গিয়েছে বনগাঁ লাইনে। টিকিটের দাম বেশি হলেও যাত্রীরা ক্ষণিকের স্বস্তি পেতে এসি ট্রেন হাত ছাড়া করেননি।

প্রথমদিনে তারই প্রমাণ মিলল বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার এসি ট্রেনে। তবে এই ট্রেনে বিনা টিকিটে যাত্রা করার কোন সুযোগ নেই। কারণ গোটা ট্রেনে টিকিট পরীক্ষকের সংখ্যা নজরকাড়া। তাই ভুলেও টিকিট না কেটে বা লোকাল ট্রেনের টিকিট কেটে উঠবেন না এসি লোকালে, তাহলেই গুনতে হবে অতিরিক্ত ফাইন।  রুদ্র নারায়ন রায়