জয়েন্টে জয়েন্টে একফোঁটাও জমতে দেয় না ইউরিক অ্যাসিড...! গরমে মোক্ষম সস্তার 'এই শাক'! বাতের ব্যথার যম! হাজার রোগে উপশম

আসছে গরমকাল। আর এই গরমে ইউরিক অ্যাসিড রোগীদের সমস্যা আরও বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই মরশুমে দ্রুত ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু জানেন কী সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যায়?

আমাদের আশেপাশে ছড়িয়ে থাকা শাকসবজির মধ্যেই আছে দুর্দান্ত সব সমাধান। যদিও আমরা অনেকেই জানিনা ঠিক কোনটা খেলে উপকার কোন অসুখে। যেমন জয়েন্টের ব্যথা এবং পায়ে ফোলাভাব থাকলে ইউরিক অ্যাসিড এর একটি অন্যতম কারণ হতে পারে।

ইউরিক অ্যাসিড বেশি হয়ে গেলে জয়েন্টে ব্যথা, ফোলাভাব, গেঁটেবাত, বাত এবং কিডনিতে পাথরের মতো সমস্যা দেখা দেয়। পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে এমনকি উঠতে এবং বসতেও অসুবিধা হয়।

ইউরিক অ্যাসিড শরীরে উৎপন্ন একটি টক্সিন। যার গঠনে কোনও সমস্যা নেই, তবে শরীর থেকে বের না হওয়াই রোগের মূল। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে জয়েন্টগুলোতে ব্যথা ও ফোলাভাব হয়।

সেলিব্রিটি পুষ্টিবিদ রুজুতা দিওয়েকর নিয়মিত তার সামাজিক মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলিতে পুষ্টি, স্বাস্থ্য, বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে তথ্য শেয়ার করেন। সম্প্রতি তিনি তার ভিডিওতে 'ইউ' সিরিজ শুরু করেছেন।

পুষ্টিবিদ রুজুতা তাঁর ভিডিওতে জরায়ু, ইউটিআই (ইউ দিয়ে শুরু হওয়া শব্দ) এর মতো সমস্যার পাশাপাশি ইউরিক অ্যাসিড সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন। ইউরিক অ্যাসিড কী এবং কীভাবে এটি প্রতিরোধ করা যায় তা নিয়ে পরামর্শে তিনি বলেছেন এই রোগীদের ডায়েটে বেশ কিছু খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ও অন্তর্ভুক্তির কথা।

তিনি বলেছেন, চাইলে এটি প্রাকৃতিকভাবেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সবুজ শাকসবজি এক্ষেত্রে খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। আপনিও যদি উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে এই গ্রীষ্মের মরশুমে সবুজ শাক খাওয়া শুরু করুন। কিন্তু কোন শাক খাবেন? জেনে রাখুন ইউরিক অ্যাসিডের মোক্ষম দাওয়াই যে সবুজ শাক, সেটি আর কিছু নয় সস্তার পাটশাক। যাকে দেশের অন্য প্রান্তে পটুয়া শাক বলা হয়ে থাকে।

ভারতে বিহার ও বাংলা-সহ পাহাড়ি এলাকায় পাট শাক প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। পাকস্থলী সংক্রান্ত অনেক মারাত্মক রোগ সারানো ছাড়াও ইউরিক অ্যাসিড কমিয়ে গাউট এবং আর্থ্রাইটিসের সমস্যাও কমায় এই শাকটি।

পাটশাকের নিয়মিত সেবন জয়েন্টে ব্যথা এবং ফোলা থেকেও মুক্তি দেয়। পটুয়া বা পাটশাক হল এমন সবজি যাতে উপস্থিত পুষ্টি উপাদান বিপাক প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে প্রোটিন হজম করতে সাহায্য করে। এর সঙ্গে এটি শরীরে উপস্থিত পিউরিনগুলিকে নষ্ট করতে সহায়তা করে।

এভাবেই নিয়মিত সেবনে ম্যাজিকের মতোই ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করে পাটশাক। তাই গরমের ডায়েটে পটুয়া বা পাটশাক অন্তর্ভুক্ত করা ইউরিক অ্যাসিড রোগীদের জন্য খুব উপকারী হতে পারে।

কারণ পাটশাকে উপস্থিত পুষ্টি উপাদানগুলি স্বাভাবিকভাবেই ইউরিক অ্যাসিড ক্রিস্টালগুলিকে গলিয়ে জয়েন্টগুলি থেকে সরিয়ে দেয়। এটি আপনার প্রোটিন বিপাককে ত্বরান্বিত করে এবং পিউরিন হজম করতে সাহায্য করে।

এ কারণে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড জমতে পারে না। এই কারণেই পাট শাককে আয়ুর্বেদে ইউরিক অ্যাসিড রোগীদের জন্য একটি ওষুধ হিসাবেও বর্ণনা করা হয়েছে। কারণ আয়ুর্বেদ মতে এটি ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করে এবং জয়েন্টের ব্যথা ও ফোলাভাব কমাতে ধন্বন্তরি হিসেবে কাজ করে।

ইউরিক অ্যাসিড কমাতে এছাড়াও এই পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করে দেখুন:উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের প্রধান কারণ হল পিউরিন সমৃদ্ধ খাবারের অত্যধিক ব্যবহার এবং ওয়ার্কআউট না করা। এর ফলে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। এটি এড়াতে পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন। এর মধ্যে রয়েছে ডাল, লাল মাংস, বিয়ার, পনির এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্য।

একই সঙ্গে আপনি যদি মিষ্টি খাওয়ার শৌখিন হন তবে তাও ছেড়ে দিন, কারণ অতিরিক্ত মিষ্টি ইউরিক অ্যাসিড বাড়িয়ে দিতে পারে। এটি এড়াতে, দিনে কমপক্ষে ১২ গ্লাস বা তার বেশি জল পান করুন। এটি ইউরিক অ্যাসিড ফ্লাশ করতে সাহায্য করে। কিডনিকে ডিটক্সিফাই করে এবং এর ফিল্টারিং ক্ষমতা বাড়ায়।

অস্বীকৃতি: আমাদের নিবন্ধটি শুধুমাত্র তথ্য প্রদানের জন্য। আরও তথ্যের জন্য সর্বদা একজন বিশেষজ্ঞ বা আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন।