Alcohol Cures Kidney Stone: রোজ বিয়ার খেলে গলে বেড়িয়ে যায় কিডনি স্টোন! পুরোটাই মিথ না সত্যি? জানুন ডাক্তার কী বলছেন...

বর্তমানে কিডনিতে পাথরের সমস্যা দ্রুত বাড়ছে। বিশেষ করে যুব সমাজের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে। প্রস্রাবে থাকা মিনারেল ও লবণ একে অপরের সঙ্গে মিশে ক্রিস্টালের আকার নেয় এবং শরীর থেকে ঠিকমতো না বের হলে তা ধীরে ধীরে কিডনিতে জমে পাথর তৈরি করে।

ছোট পাথর হলে তা প্রাকৃতিকভাবে প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যেতে পারে, কিন্তু যদি পাথরের আকার ৫ মিলিমিটারের বেশি হয়, তাহলে তা সহজে বের হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

অনেকের বিশ্বাস, বিয়ার পান করলে কিডনির পাথর বেরিয়ে যায়। এই কারণে বহু মানুষ কিডনিতে পাথর ধরা পড়লেই বিয়ার খেতে শুরু করেন। কারণ হিসেবে বলা হয়, বিয়ার একটি ডাইওরেটিক পানীয়, অর্থাৎ এটি বারবার প্রস্রাবের চাপ তৈরি করে। তাই অনেকে মনে করেন এতে পাথর বের হতে পারে। কিন্তু এই বিশ্বাস বিপজ্জনক হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে অনেকেই ভ্রান্ত ধারণায় ভুগছেন। বিয়ারকে কিডনি স্টোনের জন্য "রামবাণ" বা যাদুকরী ওষুধ মনে করা হচ্ছে, যা একেবারেই সঠিক নয়।

এই বিশ্বাসে ভর করে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই বিয়ার খেতে শুরু করেন, যা কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

নয়াদিল্লির স্যার গঙ্গারাম হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান ডঃ অমরেন্দ্র পাঠক জানিয়েছেন, বিয়ার খেয়ে কিডনি স্টোন দূর হয়—এই ধারণার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। পাথর বের করতে বিয়ার খাওয়া উচিত নয়। বরং এটি বিপদের কারণ হতে পারে।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, বিয়ার খাওয়ার ফলে প্রস্রাবের চাপ বাড়ে ঠিকই, কিন্তু যদি কিডনিতে থাকা পাথর কোনও নালি ব্লক করে রাখে, তাহলে জোর করে প্রস্রাব তৈরি হলে কিডনির ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। এর ফলে কিডনিতে ফোলাও দেখা দিতে পারে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।

ডঃ পাঠক আরও জানান, বিয়ারে থাকা অ্যালকোহল শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। এটি শুধু কিডনির পাথরের ক্ষেত্রে নয়, দীর্ঘমেয়াদে লিভার, মস্তিষ্ক ও অন্যান্য অঙ্গের ওপরও খারাপ প্রভাব ফেলে। সেই সঙ্গে বিয়ারের অভ্যাস গড়ে ওঠার ঝুঁকিও থাকে।

তাই কিডনির পাথরের চিকিৎসায় বিয়ার খাওয়ার পরামর্শ একেবারেই ভুল। বরং সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে পর্যাপ্ত জল পান করা। চিকিৎসকদের মতে, গরমকালে প্রতিদিন অন্তত ৩-৪ লিটার জল খাওয়া উচিত। এতে শরীর হাইড্রেট থাকে, প্রস্রাব পাতলা হয় এবং খনিজ বাইরে বেরিয়ে যায়। ফলে পাথর জমার সম্ভাবনা কমে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যাদের কিডনির পাথরের প্রবণতা রয়েছে, তাদের উচিত উচ্চ প্রোটিন ও অতিরিক্ত ক্যালসিয়ামযুক্ত খাদ্য এড়িয়ে চলা। অতিরিক্ত লবণ ও মাংস খাওয়াও কমাতে হবে।

যদি কারও প্রস্রাবে বারবার জ্বালা, ব্যথা বা রোধ হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়, কিংবা ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যায়, তাহলে অবিলম্বে ইউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ভুল ধারণায় ভরসা না করে, প্রয়োজনমতো পরীক্ষা ও চিকিৎসাই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়।

Disclaimer: এই খবরের মধ্যে দেওয়া ওষুধ/স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রাপ্ত। এটি সাধারণ তথ্য এবং ব্যক্তিগত পরামর্শ নয়। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও কিছু ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। নিউজ18 বাংলা কোনও ব্যবহারে ক্ষতির জন্য দায়ী থাকবে না।