ন্যাকের দেওয়া পোশাকি নাম- Quantitative Metrics (QnM)। এই নতুন পদ্ধতিতে, এখনও ন্যাকের মুখোমুখি হতে হয়নি কলকাতা, প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর, রবীন্দ্রভারতী, বর্ধমান এর মতো রাজ্যের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে। এই মানদণ্ড যুক্ত হওয়ার পর, মূল্যায়ন পদ্ধতি আরও অনেক কঠিন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিবাজী প্রতিম বসু। সেই তুলনায় ফলাফল সন্তোষজনক বলে মনে করছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, এর আগে শুধুমাত্র 'অনসাইট ভিসিট' (Onsite Visit), এই একটিমাত্র মানদণ্ডের বিচারেই ন্যাকের মূল্যায়ন হয়েছে। যেটির পোশাকি নাম হল, Qualitative Metrics (QlM)। কিন্তু, এবার তার সাথে যুক্ত হওয়া 'অনলাইন সাবমিশন অফ ডাটা' (QnM)'ই ন্যাকের মূল্যায়ন পদ্ধতিকে বেশ কঠিন করে তুলেছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা থেকে আধিকারিকদের মতামত। উল্লেখ্য যে, অনসাইট ভিসিটে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় এ (A) গ্রেড (৩.১১/৪) পেলেও, অনলাইন সাবমিশনে বিদ্যাসাগর পেয়েছে 'বি প্লাস' (B ) গ্রেড (২.৬৫/৪)। সার্বিক বিচারে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রেড হল 'বি প্লাস প্লাস' (B ) এবং প্রাপ্ত নম্বর হল ২.৭৯ (৪ এর মধ্যে)। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিবাজী প্রতিম বসু জানিয়েছেন, "অত্যন্ত জটিল বা দুরূহ এই মূল্যায়নের নিরিখে আমাদের ফল সন্তোষজনক হলেও, আমরা আত্মতুষ্ট নই! আমরা আশা করেছিলাম এবার আমরা সার্বিক বিচারেই 'এ' গ্রেড পাব। তবে, অনসাইট ভিজিটে 'এ' পেলেও, অনলাইন সাবমিশন অফ ডাটা বিভাগটিতে আমরা বি প্লাস পেয়ে গিয়েছি। আশা করছি, এর পরেরবার যখন মূল্যায়ন হবে, তখন সার্বিকভাবেই আমরা 'এ' গ্রেড পাব"।
advertisement
এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, ন্যাকের মূল্যায়ন পদ্ধতি অনুযায়ী 'এ' (৩.০১-৩.২৫) গ্রেড পাওয়া না গেলে, ইউজিসি (UGC) সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়কে দূরশিক্ষার কোর্স (Distance Education) চালানোর অনুমতি দেয় না। তাই, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই বন্ধ হয়ে যাওয়া বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের 'দূরশিক্ষা বিভাগ' এর ভর্তি প্রক্রিয়া এই মুহূর্তে আর শুরু হচ্ছে না। তবে, বিগত শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে যাঁরা ইতিমধ্যে ডিগ্রী করছেন, তাঁদের ডিগ্রী লাভ বা ক্লাস করার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই কোর্স স্বাভাবিকভাবেই চলবে। এমনকি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিবাজী প্রতিম বসু এও আশ্বস্ত করেছেন, "যে সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা বা শিক্ষা কর্মীরা এই দূরশিক্ষা বিভাগের সঙ্গে যুক্ত আছেন, তাঁদের চাকরি কত কোন সমস্যা হবে না আগামীদিনেও। তবে, আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি ন্যাকের পরবর্তী মূল্যায়নে যাতে আমরা অন্তত 'এ' গ্রেড লাভ করি। সেই লড়াই আজ থেকেই শুরু হচ্ছে। আমরা সম্পূর্ণ ভাবে প্রস্তুত হয়ে গেলেই, ন্যাকের কাছে পুনরায় মূল্যায়নের জন্য আবেদন করব"। উল্লেখ্য, ২০২১ এর ১৫ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর ন্যাকের এই সাম্প্রতিক পরিদর্শনের নিরীখে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় এই 'বি প্লাস প্লাস' গ্রেড পেয়েছে। যা আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত বৈধ (Valid) থাকবে। তবে, বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে তার আগেও 'ন্যাক' পরিদর্শন বা মূল্যায়নের জন্য আবেদন করতে পারে! অন্যদিকে, বিভিন্ন মহল থেকে এও আশা প্রকাশ করা হয়েছে যে, দূরশিক্ষা চালানোর অনুমতি প্রদানের ক্ষেত্রে ইউজিসি (UGC- University Grants Commission) হয়তো আগামীদিনে এই গ্রেড 'এ' (৩.০১-৩.২৫) থেকে নামিয়ে 'বি প্লাস প্লাস' (২.৭৬-৩) বা 'বি প্লাস' (২.৫১-২.৭৫) করতেও পারে!