তবে যখন বুঝতে শিখলো যে ওকে নিজের দুটো পা কেই হাত হিসেবে ব্যবহার করতে হবে, তখন থেকেই অদম্য চেষ্টা করতে শুরু করে এই কিশোর। ওকে দেখে সত্যি মনে হয়, মানুষ যদি চায় কিছু করতে, কোনো প্রতিবন্ধকতাই তার কাছে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।
পশ্চিম মেদিনীপুরঃ দুই হাত ছাড়া জগন্নাথ, কবে সবকিছুতেই সাবলীল খড়গপুর দু'নম্বর ব্লকের চাঙ্গুয়াল অঞ্চলের গঙ্গারামপুর গ্রামের বছর ১২ জগন্নাথ সরেন। দিনমজুর পরিবারে জন্ম, কয়েক বছর আগে মারা গেছেন বাবা। দিনমজুরি করে অনেক কষ্টে দু ভাই বোন কে নিয়ে সংসার চালানো মা। জন্ম থেকেই জগন্নাথের দুটি হাত অকেজো। এমতাবস্থায় দিনমজুরি করে প্রতিবন্ধী ছেলের পড়াশোনা করানোর মতো সামর্থ্য ছিল না জগন্নাথের পরিবারের। তাই মেদিনীপুরের রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার ফর চিল্ড্রেন সংস্থায় জগন্নাথকে রেখে যান তার মা। গত চার-পাঁচ বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠান রয়েছে জগন্নাথ। এরমধ্যে সে রপ্ত করে ফেলেছে নিজের সমস্ত কাজ দু'পা দিয়ে করার। নিজের পোষাক পরিধান, খাওয়া-দাওয়া, লেখাপড়া, ছবি আঁকা সমস্ত কিছুই দু পা দিয়ে করে জগন্নাথ। এখন কোন কাজ করতে কষ্ট হয় না তার। আর এভাবেই এই প্রতিষ্ঠান আর পাঁচটা প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়েদের সঙ্গে দিন কাটে জগন্নাথের। জগন্নাথ কে দেখে উৎসাহিত হয় অন্যান্য প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েরাও। রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার ফর চিল্ড্রেনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অরূপ কুমার ঘড়া জানান, প্রথম প্রথম পা দিয়ে কাজ করতে অসুবিধে হতে জগন্নাথের। তবে যখন বুঝতে শিখলো যে ওকে নিজের দুটো পা কেই হাত হিসেবে ব্যবহার করতে হবে, তখন থেকেই অদম্য চেষ্টা করতে শুরু করে এই কিশোর। ওকে দেখে সত্যি মনে হয়, মানুষ যদি চায় কিছু করতে, কোনো প্রতিবন্ধকতাই তার কাছে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।