ভারতের জনবিস্ফোরণকে নিয়ন্ত্রণ করতে ধূমপানের জুড়ি নেই ৷ নিয়মিত সিগারেট খেলে খুব তাড়াতাড়ি আপনি সন্তান উৎপাদনে অক্ষম হয়ে পড়বেন ৷ এমনকী, কিছু কিছু রিসার্চে প্রমাণিত বেশি ধূমপান করলে মিলনে উৎসাহও কমে যায় ৷ অতএব সমস্যার সমাধান ৷ রোজ দিনে এক প্যাকেট সিগারেট শেষ করতে পারলেই বাড়িতে আর আধো আধো গলার আবদার শুনতে হবে না ৷ উফ বাবা-মা হওয়ার বিশাল দায়িত্বভার থেকে মুক্তি ৷ অতএব চালিয়ে যান ধূমপান ৷
advertisement
ব্যাঙ্কে আপনার প্রচুর টাকা জমে গিয়েছে কী? খরচ করার জায়গা পাচ্ছেন না? এদিকে আয়করের কথা ভেবে রাতের ঘুম উড়ে যাচ্ছে? তাহলে আপনার সমস্যার একটাই সমাধান ৷ সিগারেট খাওয়ার নেশাকে আপন করে নিন ৷ কখন আপনার পকেটের অতিরিক্ত ভার হাল্কা হয়ে যাবে, টেরই পাবেন না ৷ প্রথমে সিগারেট কিনতে খরচ হয়ে যাবে, পরে সিগারেট খাওয়ার জন্য যা যা রোগ হবে সেই রোগ সারাতে পকেট গড়ের মাঠ হয়ে যাবে ৷
রোজ ধূমপান করলে খুব তাড়াতাড়ি আপনি আপনার সন্তানদের দাদু-দিদার অভাব পূরণ করতে পারবেন ৷ কারণ- লাগাতার স্মোকিং করতে থাকলে খুব তাড়াতাড়ি ত্বকে ভাঁজ পড়ে এবং বয়স্ক দেখায় ৷ তখন ছেলে মেয়ের বন্ধু-বান্ধবরা আপনাকে দেখে কাকুর বদলে দাদু ডাকলে অবাক হবেন না কিন্তু ৷
নতুন ফ্যাশনের উদ্ভাবন করতে পারেন ৷ দাঁতে ট্যাটু ৷ অথবা নতুন প্রিয় বন্ধুও জুটতে পারে ৷ আপনার দাঁতের ডাক্তার ৷ নিয়মিত সিগারেট, গুটখা খেলে দাঁতে তাঁর প্রভাব পড়ে ৷ বাদামী ছোপ ছোপ দাগগুলিকে দাঁতের ট্যাটু করেছেন বলেও চালাতে পারেন ৷ রোজ রোজ সিগারেট খেলে বা গুটখা চিবোলে আপনার দাঁতের নতুন ট্যাটুর ডিজাইন সপ্তাহে সপ্তাহে পরিবর্তিত হবে ৷ এটা পছন্দ না হলে দাঁতের ডাক্তারের কাছে গিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করিয়ে নিতে পারেন ৷ মাসে একবার করে হাজিরা দিলে তিনি আপনার বন্ধু হতে বাধ্য ৷ অতএব চালিয়ে যান সিগারেট ও গুটখা সেবন ৷
অমরেশ পুরীর বা অনুপম খেরের ফ্যান হলে কিছুদিনের মধ্যেই আপনি ওদের পারফেক্ট লুক-এ্যা-লাইক হতে চলেছেন ৷ না, এই পরিমাণে সিগারেট খেলে কিছুদিনের মধ্যেই ক্যান্সার৷ তারপর সেরে ওঠার জন্য কেমোথেরাপি নিলেই মাথার খেত ফাঁকা ৷ টাকলা মাথায় জেল মেরে একদম পারফেক্ট অগ্নিপথ-এর কাঞ্চারূপী সঞ্জয় দত্ত ৷ একটু বৈচিত্র্য চাইলে ফ্রেঞ্চকাট দাড়ি রাখুন তাহলে বেশ স্টাইলিশ লুক আসবে ৷
উফ সংসারের জন্য খাটতে খাটতে জীবনটা নাজেহাল ৷ একটুও বিশ্রামের সুযোগ নেই ৷ বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়রা কেউ একটু খবরও নেয় না ৷ এরকম সমস্যা আপনার জীবনে হলে ফাটিয়ে সিগারেট, গুটখা খান ৷ কিছু দিনের মধ্যেই ক্যান্সার না হলেও নিদেন পক্ষে শ্বাসকষ্ট, মুখের ঘা, গলায় ঘা এই সব সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হবেনই ৷ তখন ফুল নিয়ে ভিজিটিং আওয়ারে কেবিনের বাইরে ভিড় জমাবেন আপনার আত্মীয় বন্ধুরা ৷
এত কিছু পড়ার পরও কিছু বুঝতে না পারলে আপনাকে আমাদের আর কিছুই বলার নেই ৷ আর যদি বুঝতে পারেন, তাহলে এটাই সময় ৷ সিগারেট, গুটখা খাওয়া ছাড়ুন ৷ ওগুলো খাওয়ার মতো কোনও জিনিস নয় ৷