সিন্ধিয়া আরও জানান, সরকারের ভূমিকা কেবলমাত্র জননিরাপত্তার স্বার্থে এই অ্যাপটি একটি টুল হিসেবে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। “ডিভাইসে এটি রাখবেন না কি রাখবেন না, তা সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারকারীর সিদ্ধান্ত,” বলে তিনি বাধ্যতামূলক ব্যবহারের অভিযোগ খারিজ করেন।
সঞ্চার সাথী অ্যাপ ঘিরে ওঠা উদ্বেগগুলির সমাধান করতে গিয়ে তিনি গ্রাহকদের সুরক্ষা ও জালিয়াতি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে এর ভূমিকার ওপর জোর দেন। তিনি বিরোধীদের সমালোচনা খারিজ করে দিয়ে বলেন, সরকারের মূল লক্ষ্য রাজনৈতিক বিতর্কে সাড়া দেওয়া নয়, বরং ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
advertisement
সিন্ধিয়া তুলে ধরেন যে সঞ্চার সাথী পোর্টালটি ২০ কোটিরও বেশি বার ডাউনলোড হয়েছে, যেখানে অ্যাপটির ডাউনলোড সংখ্যা ১.৫ কোটিরও বেশি। তিনি জানান, এর বাস্তব প্রয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ— প্রায় ১.৭৫ কোটি ভুয়ো মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, প্রায় ২০ লক্ষ চুরি হওয়া ফোন ট্রেস করা হয়েছে এবং ৭.৫ লক্ষ ফোন মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরও স্পষ্ট করে বলেন, অ্যাপটি কোনওভাবেই কল শোনা বা গোপনে নজরদারি করতে পারে না। ব্যবহারকারীর হাতে অ্যাপের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ— চাইলে সক্রিয় করবেন, চাইলে মুছে ফেলবেন।
সিন্ধিয়া বলেন, “আমাদের কর্তব্য হল গ্রাহকদের সাহায্য করা এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সঞ্চার সাথী অ্যাপ প্রত্যেক গ্রাহককে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। সঞ্চার সাথী পোর্টালের ডাউনলোড ২০ কোটিরও বেশি, এবং অ্যাপটির ডাউনলোড ১.৫ কোটিরও বেশি। সঞ্চার সাথী প্রায় ১.৭৫ কোটি ভুয়ো মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রায় ২০ লক্ষ চুরি যাওয়া ফোন ট্র্যাক করা হয়েছে এবং প্রায় ৭.৫ লক্ষ চুরি যাওয়া ফোন তাদের মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, যার সমস্তটাই সঞ্চার সাথীর কারণে। এই অ্যাপ আড়ি পাতা বা কল মনিটরিং করার সুযোগ দেয় না।”
সিন্ধিয়া আরও বলেন, সরকার সঞ্চার সাথী ব্যবহারের জন্য উৎসাহিত করলেও, এটি ডিভাইসে রাখবেন না কি রাখবেন না সম্পূর্ণরূপে ব্যবহারকারীর ইচ্ছাধীন। তিনি এটিকে অন্য যে কোনো মোবাইল অ্যাপের সঙ্গে তুলনা করেন যা ইচ্ছেমতো ইনস্টল বা সরানো যেতে পারে, এবং পুনরায় জোর দিয়ে বলেন যে এই উদ্যোগটি কেবলমাত্র ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা এবং টেলিকম জালিয়াতি মোকাবিলার উদ্দেশ্যে তৈরি।
টেলিকম মন্ত্রী আরও যোগ করেন, “আপনি যদি সঞ্চার সাথী না চান, আপনি এটি ডিলিট করতে পারেন। এটি ঐচ্ছিক। এটি গ্রাহক সুরক্ষা নিয়ে তৈরি। আমি সমস্ত ভুল ধারণা দূর করতে চাই। প্রত্যেকের কাছে এই অ্যাপটি পৌঁছে দেওয়া আমাদের কর্তব্য। এটি তাদের ডিভাইসে রাখবেন কি না, তা ব্যবহারকারীর ওপর নির্ভর করে। অন্য যে কোনও অ্যাপের মতোই এটি মোবাইল ফোন থেকে ডিলিট করা যেতে পারে।”
আরও পড়ুন: বাড়িতে বসেই WhatsApp থেকে ফাটাফাটি ইনকাম, ৫ উপায়ে প্রতি মাসে আপনি লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতে পারেন, কীভাবে জানুন এক ক্লিকেই
এদিকে, বিজেপি নেতা অমিত মালব্য জনগণকে সঞ্চার সাথী অ্যাপ সম্পর্কে “ভুয়ো খবরে” কান না দিতে অনুরোধ করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন যে এটি নজরদারির হাতিয়ার নয়। তিনি বলেন, অ্যাপটি মেসেজ পড়তে পারে না, কল শুনতে পারে না বা ব্যক্তিগত ডেটা অ্যাক্সেস করতে পারে না এবং এটি সম্পূর্ণরূপে টেলিকম নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে।
মালব্য তুলে ধরেন যে সঞ্চার সাথী ব্যবহারকারীদের স্প্যাম রিপোর্ট করতে, চুরি যাওয়া ফোন ব্লক করতে, ভুয়ো (spoofed) কল সনাক্ত করতে এবং তাদের নামে ইস্যু হওয়া সিমগুলি যাচাই করতে সাহায্য করে। সাইবার অপরাধ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই প্ল্যাটফর্মটি অপরিহার্য বলে তিনি উল্লেখ করেন, যার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ডিভাইস ব্লক বা ট্র্যাক করা হয়েছে এবং জালিয়াতির প্রচেষ্টা রোধ করা হয়েছে। তিনি এটিকে একটি নিরাপত্তা রক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে আখ্যা দেন, নজরদারি ব্যবস্থা নয়।
বিজেপি সাংসদ সম্বিত পাত্রও স্পষ্ট করে বলেন যে সঞ্চার সাথী অ্যাপ মেসেজ পড়ে না, কল শোনে না বা ব্যক্তিগত ডেটা অ্যাক্সেস করে না। তিনি বলেন, প্ল্যাটফর্মটি সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাল জালিয়াতি প্রতিরোধ এবং চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন ট্র্যাক করতে সহায়তা করে ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা টেলিকম গ্রাহকদের জন্য বৃহত্তর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
