আক্ষেপ তো আছেই তাঁর। বাবা বলে কথা। মহাদেব সারগর মনে করেন, তিনি ছেলের উপর চাপ দিয়েছিলেন। অনিচ্ছা সত্ত্বেও চাপটা দিয়েছিলেন। তাঁর আর্থিক পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে ছেলেকে বলতে হয়েছিল, ''চেষ্টা করিস।''
ছেলে ভারোত্তোলক। সংসারের ভারও তাঁর উপর। এতটা ওজন ২১ বছরের ছেলে নিতে পারে! দরিদ্র বা নিম্ন মধ্যবিত্তের ছেলেরা হয়তো পারে! তবে সংকেত সারগরের কাঁধে চাপটা একটু বেশিই হয়েছিল। তাই ২৪৮ কেজি তুলে শেষমেশ ডান হাতের কনুইয়ে গুরুতর চোট পেয়ে বসলেন।
advertisement
আরও পড়ুন- Team India New Jersey: রোহিত শর্মার পছন্দে নতুন জার্সি টিম ইন্ডিয়ার! যেমন রং, তেমন সুন্দর ডিজাইন
মহারাষ্ট্রের সাংগলিতে বাড়ি সংকেতের। তবে তিনি ২ বছর ধরে পাটিয়ালাতে জাতীয় অ্যাকাডেমিতে প্র্যাকটিস করেন। বাবা-মা তাঁর মুখ দেখে স্রেফ ভিডিও কলে। বাবা মহাদেব সারগর বলছিলেন, ''২ বছর ওকে দেখিনি। তবে ওর সামনে কাঁদব না। ওর উপর তো কম চাপ দিইনি! আমাকে বলেছিল, বাবা চেষ্টা করব। আমি তোমাদের গর্ব হয়ে উঠব।''
সংকেত সারগর নাম করে ফেললেন। কমনওয়েলথ গেমসে রুপো জয়। তবে নিন্দুকেরা বলে, একজন ক্রীড়াবিদ সোনা জেতে, রুপো পায়। ভুল হয়তো নয় কথাটা। তবে সংকেতের এই রুপো খাঁটি সোনার সমান। বাবার চায়ের দোকান, পানের স্টল হতে পারত সংকেতের ভবিতব্য। পরিস্থিতি খানিকটা সেদিকেই এগোচ্ছিল। তবে সংকেত ভাগ্যের চাকা নিজের হাতে ঘুরিয়ে দেন।
সংকেতরা তিন ভাই-বোন। বাবা চা, পকোড়ার দোকান আর পানের স্টল থেকে যা উপার্জন করেন, তাতে সংসারের চাকা কোনওরকমে গড়ায়। অবশ্য এই অভাবের রোজনামচা এদেশের ক্রীড়াবিদদের সংসারে নতুন কিছু নয়। সংকেতের জীবনেও ব্য়াপারটা একইরকম।
আরও পড়ুন- Sourav Ganguly To Play Again: বড় খবর, ব্যাট হাতে আবার মাঠে সৌরভ! কবে, কোন ম্যাচ খেলবেন জেনে নিন
২১ বছরের সংকেত এদিন তুললেন ২৪৮ কেজি। অল্পের জন্য সোনা হাতছাড়া। কনুয়ের চোট না থাকলে সোনা জয় নিশ্চিত ছিল। আক্ষেপ তো আছেই। তবে তাঁর থেকেও বেশি আক্ষেপ মহাদেব সারগরের। ছেলেকে বলেছিলেন, পরিস্থিতি খারাপ, চেষ্টা করিস...। নিজের ছেলের উপর এত চাপ কি বাবা দিতে পারে!