যখনই জাদেজা সেঞ্চুরি বা হাফ-সেঞ্চুরি করেন, তিনি ব্যাট রাজপুতদের তলোয়ারের মতো ঘুরিয়ে “রাজপুতানা স্টাইলে” উদযাপন করেন। এটি হয়ে উঠেছে তার ট্রেডমার্ক সেলিব্রেশন। কিন্তু ম্যানচেস্টার টেস্টে ব্যাপারটা আলাদা ছিল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টের শেষ দিনে কঠিন পরিস্থিতিতে সেঞ্চুরির পরও জাদেজা তাঁর তলোয়ার সেলিব্রেশন করেননি।
ভক্তরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। বিশেষ করে বেন স্টোকসের সঙ্গে মাঠে তর্কাতর্কির পর সবাই ভেবেছিল জাদেজা হয়তো জবাব দেবেন তাঁর পুরনো স্টাইলে! তবে জাদেজা ছিলেন শান্ত। সেই মুহূর্তে উল্লাসের বদলে ছিল আত্মসংযম দেখান তিনি। হয়তো তিনি বুঝেছিলেন, ম্যাচ বাঁচাতে তখনও তাঁকে লড়তে হবে।
advertisement
আরও পড়ুন- সেই পুরনো দিন ফিরে এল ঋষভ পন্থের জীবনে! আবার সেই পুরনো ‘সঙ্গী’কে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে!
জাদেজা সেদিন শুধু ব্যাট তুলে সাদামাটাভাবে সেঞ্চুরি উদযাপন করেন। যেন বার্তা দিচ্ছিলেন- “কাজ এখনও বাকি আছে।” ভারতীয় দল তখন ওল্ড ট্র্যাফোর্ড গ্রাউন্ডের প্যাভিলিয়নে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্র জাদেজার সেঞ্চুরি উদযাপন করছিল। চারপাশে হাততালি, উচ্ছ্বাস, ক্যাপ্টেন শুভমন গিল তো একেবারে হাসতে-হাসতে জাদেজার তলোয়ার চালানোর স্টাইল নকল করছিলেন!
সবাই ধরেই নিয়েছিল, এখনই জাদেজা পিচের মাঝখানে দাঁড়িয়ে “তলোয়ারবাজি” করবেন। কিন্তু হল সম্পূর্ণ উল্টো। জাদেজা শুধু ব্যাট উঁচিয়ে মাথা ঝুঁকিয়ে অভিবাদন নিলেন। তাঁর মুখে ছিল আত্মবিশ্বাস, কিন্তু কোন বাড়তি নাটকীয়তা ছিল না সেদিন। পুরো দল এবং দর্শকরা তাতে কিছুটা অবাক হয়ে যায়।
হতে পারে, সেই মুহূর্তে ম্যাচের পরিস্থিতি সংকটজনক ছিল। তাই জাদেজা হয়তো শুধুই ক্রিকেটে ফোকাস রাখতে চেয়েছিলেন। আবার, বেন স্টোকসের সঙ্গে বিতর্কের পর তিনি হয়তো দেখাতে চাইলেন — “উত্তর ব্যাটে, কথায় নয়।”
এসবের মাঝে ভারতীয় অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজার স্ত্রী এবং গুজরাতের বিজেপি বিধায়ক রিবাবা জাদেজা তাঁর স্বামীর প্রশংসায় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আবেগঘন পোস্ট শেয়ার করেন। তিনি সেখানে জাদেজার মানসিক দৃঢ়তার প্রশংসা করেন। রিবাবা জাদেজার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ছিল- “তলোয়ার নয়, এক যোদ্ধার মানসিকতা আসলে লড়াই করা।” আমার স্বামী রবীন্দ্র সিং জাদেজার এই শতরান দলের সবচেয়ে প্রয়োজনের সময়ে। এটি তাঁর ধৈর্য ও অটুট সংকল্পের প্রতীক ছিল। স্মরণীয় এই ইনিংস অনেকের মনে থাকবে।”