সুইৎজারল্যান্ড - ১
#দোহা: ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে ছাড়া বড় ম্যাচ জেতার ক্ষমতা রাখে পর্তুগাল বিশ্বাস করাটা কঠিন ছিল। কিন্তু বিশ্বাস রেখেছিলে কোচ ফার্নান্দো স্যান্টোস। পর্তুগালের প্রথম দল থেকে রোনাল্ডোকে বাদ দিয়ে নিয়ে এসেছিলেন কুড়ি বছরের গঞ্জালো রামোসকে। রোনাল্ডোর পরিবর্ত বলে কথা! ছেলেটা কিন্তু দেখিয়ে দিল ভরসা রেখে ভুল করেননি কোচ।
advertisement
১৭ মিনিটের মাথায় একটা দর্শনীয় গোল করে গেলেন বেনফিকার স্ট্রাইকার। ছোট্ট হাফটার্নে বা পায়ের শট আছড়ে পড়ল টপ নেটে। সুইস গোলরক্ষক দাঁড়িয়ে দেখলেন। ৩৮ মিনিটে ব্যবধান বাড়াল পর্তুগাল। কর্নার থেকে হেডে গোল করলেন পেপে। দর্শকের ভূমিকায় রইলেন কিপার সোমের। এরপর রামোস সহজ মিস না করলে প্রথম হাফেই তিনটে গোল হয়ে যেত।
ফ্রি ফুটবলারের ভূমিকায় অনবদ্য খেললেন ফেলিক্স। ক্যামেরায় ধরা পড়ল রোনাল্ডোর মুখটা। দলের সেলিব্রেশনের অঙ্গ হতে ছুটে এলেন, কিন্তু মুখে সেই হাসি নেই। তার ইগো ধাক্কা খেয়েছে ভীষণভাবে সেটা বোঝা যাচ্ছিল। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে তিন নম্বর গোল তুলে নিল পর্তুগাল। দ্বিতীয় গোল করলেন রামোস, বা পায়ের টোকায়।
৫৫ মিনিটে ৪-০ করে দিলেন লেফট ব্যাক রাফেল গুরেরো। দু’মিনিট পর অবশ্যই একটি গোল শোধ করে দিল সুইৎজারল্যান্ড। আকেঞ্জি ব্যবধান কমালেন। ৬৭ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করে ফেললেন রোনাল্ডোর পরিবর্তে আসা গঞ্জালো রামোস। ফেলিক্সর পাস থেকে গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে চিপ করে বল জালে পাঠালেন।
হাততালি না দিয়ে থাকতে পারলেন না রোনাল্ডো। চলতি বিশ্বকাপের প্রথম হ্যাটট্রিক। পর্তুগালের ইতিহাসে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় জয়। পুরোটাই বাইরে বসে দেখছিলেন রোনাল্ডো। একবার দুবার উঠলেন, ওয়ার্ম আপ করে আবার বসে পড়লেন। দলের এত বড় জয় দেখে তিনি খুশি হবেন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পাশাপাশি এটাও ঠিক তাকে বাদ দিয়ে নতুন বার্তা দিলেন ম্যানেজার। দলের ওপর কেউ নন, এটা প্রতিষ্ঠা করে দিলেন স্যানটোস।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য ৭২ মিনিটে মাঠে এলেন রোনাল্ডো। একটি গোল করলেন বটে, কিন্তু অফসাইড হল। একদিকে হয়তো শাপে বর হল পর্তুগালের। রোনাল্ডোর আতে ঘা লেগেছে। পরের মরক্কোর বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে তিনি নিশ্চয়ই অন্যরকম খেলা খেলতে মুখিয়ে থাকবেন। ৬ নম্বর গোলটি করে গেলেন রাফাইল লিয়ায়ও। এরপর শনিবার মরক্কোর বিরুদ্ধে শেষ আটের ম্যাচ খেলবে পর্তুগাল। ১৬ বছর পর বিশ্বকাপের শেষ আটে উঠল তারা।
