যে সুশীল হাতে ভারতের তেরঙা নিয়ে দু-দু'বার উঠেছেন অলিম্পিক পোডিয়ামে, সেই সুশীল এখন খুনের অপরাধে গ্রেফতার এটা মেনে নেওয়াই কঠিন হয়ে উঠেছে দেশের এক নম্বর পেশাদার বক্সার বিজেন্দর সিংয়ের কাছে। বেজিং অলিম্পিকে বিজেন্দর ও সুশীল দু'জনেই পদক জিতেছিলেন। বিজেন্দর বলেছেন, 'ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে সুশীল যে সাফল্য এনে দিয়েছে, তা মুছে ফেলা যাবে না। তবে এখন যেটা ওর জীবনে ঘটল, এ নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না।'
advertisement
অভিজ্ঞ টেবল টেনিস খেলোয়াড় শরথ কমল, যিনি সুশীলের সঙ্গে অলিম্পিক গেমস ভিলেজে ছিলেন, সেই শরথের প্রতিক্রিয়া, 'যা ঘটেছে তা যদি প্রমাণিত হয়,তা বড়ই দুর্ভাগ্যের হবে। এটা শুধু ভারতীয় কুস্তিমহলে নয়, ভারতীয় ক্রীড়ামহলের সুনামকে বড় ধাক্কা দিয়ে যাবে।' সঙ্গে যোগ করেন, 'সুশীল সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রীড়াবিদ বলেই ও যা করবে তা সকলের নজর কাড়বে। তাই এমন ঘটনা যদি সত্যি ঘটে, তাহলে তা ক্রীড়ামহল সম্পর্কে জনসাধারণের খারাপ ধারণা তৈরি হবে।'
সুশীলের সঙ্গে বেজিং অলিম্পিকে অংশ নেওয়া হকি তারকা অজিত পাল সিং বলেছেন, 'এখনও বুঝতে পারছি না ঘটনা সত্যি কী ঘটেছিল। আমি সুশীলকে যতটা চিনি, তাতে ও খুবই নম্র ও শান্ত।' সঙ্গে জোড়েন, 'যেটা ঘটেছে সেটা খুবই লজ্জাজনক ও দুর্ভাগ্যের। দেশের খেলাধুলোর রোল মডেলের এই ছবিটা শিক্ষার্থী খেলোয়াড়দের হতাশ করবে।'
উত্তর রেলওয়ে থেকে তাঁর চাকরিও যেতে চলেছে। ইতিমধ্যেই সুশীলকে নির্বাসিত করা হতে চলেছে চাকরি থেকে। উত্তর রেলওয়ের এক কর্তা জানিয়েছেন, ছত্রসাল স্টেডিয়ামে অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি (ওএসডি) পদে কর্মরত ছিলেন সুশীল। দিল্লি সরকারের সুপারিশে ২০২০ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল তাঁর মেয়াদ।
২০২১-এ ফের সুশীল মেয়াদবৃদ্ধির আবেদন করেন। দিল্লি সরকার তা প্রত্যাখ্যান করে তাঁকে উত্তর রেলওয়েতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু সেই চাকরিও আর থাকার সম্ভাবনা কম। সব মিলিয়ে হঠাৎ করেই সুশীল কুমার যেন একটা কলঙ্কিত অধ্যায় হয়ে গেলেন। বড় বিচিত্র ব্যাপার।