বাণিজ্যিক সংস্থারা লাইন লাগিয়েছে, সিনেমা করার প্রস্তাব পেয়েছেন। জীবনটা রাতারাতি বদলে গিয়েছে ছেলের। কিন্তু অনেক তথ্য জানা থাকলেও একটি নতুন তথ্য উঠে এসেছে নীরজকে নিয়ে। ১৭৬১ সালের পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে আহমেদ শাহ আবদালির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তাঁর পূর্বপুরুষরা। সেই যুদ্ধ বদলে দিয়েছিল ভারতবর্ষের ইতিহাস।
আর স্বয়ং নীরজ বদলে দিয়েছেন অলিম্পিকে ভারতের ইতিহাস। হরিয়ানার বাসিন্দা হলেও নীরজ কিন্তু আসলে মারাঠি। আফগানদের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত লড়াই করেও ওই যুদ্ধে হার হয়েছিল মারাঠাদের। আহমেদ শাহ এরপর দিল্লি দখল করেননি। ফিরে গিয়েছিলেন আফগানিস্তানে। সদাশিব রাও ভাঊ, ইব্রাহিম গারদির নেতৃত্বে সেদিন মারাঠারা দুর্দান্ত লড়াই করলেও অযোধ্যার রাজা সুজাউদ্দৌলা এবং জাঠ রাজাদের শিবির বদলে হার এড়াতে পারেনি।
advertisement
ভারতের ইতিহাসে ওই শিবির বদল বেইমানির অন্যতম সেরা নমুনা আজও। বলিউডে এই নিয়ে সিনেমাও হয়েছে। প্রায় ১৫০০০ আফগান সেনা এবং ২৫০০০ মারাঠা প্রাণ হারিয়েছিল ওই যুদ্ধে। নীরজ সেই রোর মারাঠা সম্প্রদায়ের মানুষ। সেই যুদ্ধের পর হরিয়ানায় প্রায় ২০০ মারাঠা পরিবার পাকাপাকি বসবাস শুরু করে। শুধু পানিপথ নয়, কুরুক্ষেত্র, জিন্ড, কারনালের মতো জায়গায় রয়েছে এসব পরিবার।
আজও মহারাষ্ট্রের রীতিনীতি অনুযায়ী অনুষ্ঠান পালন করা হয় এইসব পরিবারে। রুটিকে রুটি নয়, মারাঠীদের মত পোলি বলে থাকেন এইসব মানুষেরা। মহারাষ্ট্রের বেশ কিছু পরিবারের সঙ্গে হরিয়ানার মারাঠি পরিবারের বৈবাহিক সম্পর্ক হয়। নীরজ চোপড়ার আসল পদবি চোপরে। কিন্তু অপভ্রংশ হতে হতে চোপড়া হয়ে গিয়েছে।
অবশ্য কিছু মারাঠা আহমেদ শাহর সেনাদের দ্বারা চিহ্নিত হবেন না বলে নিজেদের পদবী বদলে নিয়েছিলেন। নিজের পূর্বপুরুষদের গৌরবের ইতিহাস নিয়ে গর্ববোধ করেন অলিম্পিকে স্বর্ণ পদক নিয়ে আসা অ্যাথলিট। হয়তো যোদ্ধাদের রক্ত শরীরে বইছে বলেই এত অল্প বয়সে এরকম লড়াকু মানসিকতা। গার্লফ্রেন্ড, অর্থ বা সিনেমা নয়, তাঁর পুরো ফোকাস খেলায়, সেকথা একাধিকবার বলেছেন।
