মিলখার নিজের কথায়,"কী যে হলো সেদিন! এখনও হিসাব মেলাতে পারি না। প্রথম ২০০ মিটার এত জোরে, এত দ্রুত দৌড়ে ছিলাম যে ধারে কাছে কেউ ছিল না। তারপর নিজের মন বলল, এই গতিতে দৌড়লে ৪০০ মিটার শেষ করতে পারব না। গতি কমানোটাই কাল হয়েছিল। শেষ ১০০ মিটার প্রাণপণ চেষ্টা করেও আর হল না। ফটো ফিনিশিংয়ে পদক হাতছাড়া হল।"
advertisement
সত্যিই তো! রোম অলিম্পিকে পদক বিজয়ীদের তার কিছু দিন আগেই কার্ডিফ মিটে হেলায় হারিয়েছিলেন মিলখা। অলিম্পিক পদক জিততে এতোটাই মরিয়া ছিলেন মিলখা, যে কার্ডিফ মিট শেষ করে দেশে পর্যন্ত ফেরেননি। রোম অলিম্পিকের প্রস্তুতি সারতে ডুবে গিয়েছিলেন নিবীড় অনুশীলনে। তবু শেষ রক্ষা হয়নি।
রোমের স্মৃতিচারণ করতে বসে মিলখা বলতেন, "সেমিফাইনালের আগে দু'দিন হোটেল বন্দি অবস্থায় থাকতে হয়েছিল। কারও সঙ্গে দেখা বা কথা বলার অনুমতি পর্যন্ত ছিল না। প্রাণান্তকর চাপ তৈরি হয়েছিল। রোমের সব ম্যাগাজিন জুড়ে শুধু সিং আর সিং। গোটা দেশ তাকিয়ে ছিল আমার পদকের জন্য।"
রোম অলিম্পিকের ট্র্যাক ইভেন্টের ৪০০ মিটার ফাইনালে ফ্লাইং শিখকে নিয়ে ছয় প্রতিযোগী নেমেছিল। প্রতিযোগিতা এতটাই টানটান ছিল যে ছয় জনই বিশ্ব রেকর্ড করেছিলেন ফাইনালে। রোমে পদক পাওয়ার বিষয়ে মিলখা নিজেও এতোটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে নিজের প্রিয় ৪০০ মিটার ছাড়া অন্য ইভেন্টে নামার কথা ভাবেননি। ২০০ মিটারে পদক জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও।
ফাইনালে মিলখা সিং ৪০০ মিটার দৌড়ে ছিলেন ৪৫.৬ সেকেন্ডে। পরবর্তী কালে ভারতীয় অ্যাথলিটদের নিজের রেকর্ড ভাঙ্গার ওপর পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন মিলখা। দু'লক্ষ টাকার নগদ পুরস্কার। নিজের সন্তান বিখ্যাত গলফার জীব মিলখা সিংকেও একই কথা বলে গিয়েছেন দেশের অন্যতম সেরা এই অ্যাথলিট।
PARADIP GHOSH