কয়েকজন খেলার জন্য সাময়িকভাবে এখানে এসে পরে ফিরে গিয়েছেন নিজেদের রাজ্যে। তবে এইবার সে সবের বালাই নেই। দলের জয়ের পেছনে নেই কোন বাংলার খেলোয়াড়। তবুও বাঙালি যোগ বলতে ওই ম্যাসিওর অরূপ। ৪১ বছর পর পদক জয়ের যে সাফল্য অংশীদার এক বাঙালি।
অরূপ নস্কর। শেষ দশ বছর ধরে ছেলেদের হকি দলের ম্যাসিওর রুবি অঞ্চলের অরূপ। এই নিয়ে দুটো অলিম্পিক হয়ে গেল। তবে চলতি অলিম্পিকে ভারত পদক জেতা উচ্ছ্বসিত এই যুবক। শোনালেন তাঁর সব অভিজ্ঞতা। বাইপাসে রুবি হাসপাতাল চত্বরে অরূপের বাড়ি। আর্থিক অনটনের কারণে ম্যাসিওর কাজ শেখা। প্রথমে ফুটবলে কাজ শুরু। গোয়ার সেরা ক্লাব ডেম্পো দলে হাতেখড়ি ।সেখান থেকে টেবিল টেনিসে কাজ। এভাবেই কাজ করতে করতে ২০১১ সালে ভারতীয় হকি দলের সঙ্গে ম্যাসিওর হিসেবে যুক্ত হয়ে পড়া। মনপ্রীত, শ্রীজেশদের ম্যাচ ফিট করে তোলার পেছনে অন্যতম কারিগর তিনি। রিও অলিম্পিকে কোয়ার্টার-ফাইনালে বেশি এগোতে পারেনি দল। তবে টোকিওতে পোডিয়াম ফিনিশ। দলের প্রতিটা মুহূর্তের অংশীদার অরূপ। টোকিও থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে জানালেন তার অভিজ্ঞতা। অরূপ বলেন, 'সবাই পাগলের মতো উচ্ছাস করছিল। আনন্দে আমার চোখে জল এসেছিল। দীর্ঘদিন এই সাফল্য পাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছি। রাত জেগে কাজ করে খেলোয়াড়দের ফিট রাখার চেষ্টা করেছি।"
advertisement
অলিম্পিকের আগে নিরবিচ্ছিন্ন অনুশীলন তাই প্রায় আট মাস হয়ে গেল বাড়ি ফেরা হয়নি অরূপের। সন্তান হাটতে শিখে গেছে। অল্প কথাও বলতে পারে। এইসব মুহূর্তের সাক্ষী থাকা হয়নি। তবে সাক্ষী থাকতে পেরেছেন জার্মানিকে হারিয়ে ব্রোঞ্জ পদক জয় করার মুহূর্ত। সেখানেই সব ক্লান্তি হতাশা কেটে গেছে বলে মনে করেন অরূপ নস্কর।
টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী খেলোয়াড় এবং প্রশিক্ষক শুধু পদক পান। ফলে দলের সঙ্গে কাজ করলেও অলিম্পিক পদক পাননি ছেলেদের হকি দলের ম্যাসিওর অরূপ নস্কর। পদক না পেলেও কোনো আক্ষেপ নেই এই যুবকের। ভারতীয় দলের লোগো লাগানো জার্সি ও জ্যাকেট যখন গায়ে চাপান সেটাই জীবনের সেরা মুহূর্ত বলে মনে করেন তিনি। ম্যাচের শেষে সমস্ত খেলোয়াড়রা অরূপকে ধন্যবাদ জানিয়ে গেছেন এই থ্যাংকস লেস জব এর জন্য। দিনের পর দিন প্রায় রাত জেগে কাজ করা অরূপের এটাই চরম তৃপ্তি। তাই অন্য জায়গা থেকে ডাক থাকলেও হকি দলের সঙ্গে কাজ করে যেতে চান অরূপ নস্কর।
