গম্ভীরের এই কঠোর মনোভাব অনেকটা স্মরণ করিয়ে দেয় অনিল কুম্বলের কোচিং শৈলীকে। কুম্বলে সকল খেলোয়াড়ের জন্য সমান নিয়ম চালু করেছিলেন, যা বিরাট কোহলির সাথে তার দ্বন্দ্বের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শেষপর্যন্ত কুম্বলে কোচের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
অন্যদিকে, একটি ঐতিহাসিক ঘটনার কথা উঠে আসে জন রাইট ও বীরেন্দ্র শেবাগকে ঘিরে। লহবাগের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাটিং দেখে রেগে গিয়ে জন রাইট নাকি তাকে কলার ধরে দেয়ালে ঠেলে দেন ও ঘুষি মারেন। সৌরভ গাঙ্গুলি ও অনিল কুম্বলের বর্ণনায় জানা যায়, এই ঘটনার পরও শেবাগ এটিকে সহজভাবে গ্রহণ করেন এবং দু’জনের মধ্যে মীমাংসা হয়। কী ঘটেছিল চলুন জেনে নেওয়া যাক-
advertisement
প্রাক্তন ভারতীয় ওপেনার বীরেন্দ্র সহবাগ আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি খুব একটা কারো কথা শুনতেন না। এমনকি সচিন তেন্ডুলকার এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও তাকে সাবধানে ব্যাট করতে বলেছিলেন, কিন্তু তিনি তাতে কান দেননি। সেই সময়, ভারতীয় দলের কোচও তাকে কিছু উপদেশ দিয়েছিলেন, যা সহবাগ মেনে নেননি। কোচ জন রাইট এতটাই ক্ষুব্ধ হন যে তিনি সহবাগের কলার ধরে তাকে ধাক্কা দেন এবং এমনকি ঘুষিও মারেন বলে অভিযোগ।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, “আমরা এজবাস্টনে শ্রীলঙ্কার দেওয়া একটি ছোট লক্ষ্য তাড়া করছিলাম। সিমিং পিচে আমাদের সামনে ২০৯ রানের লক্ষ্য ছিল। আমি অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম সহবাগ কীভাবে হাওয়ায় বড় বড় শট খেলছে। সে চার-ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করে দেয়। জয়ের পর আমি ড্রেসিংরুমে ঢুকে সবাইকে অভিনন্দন জানাতে শুরু করলাম, কিন্তু সেখানে সম্পূর্ণ নীরবতা।”
এরপর সৌরভ বলেন, “আমি অনিল কুম্বলের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কি হয়েছে?’ সে আমাকে একপাশে নিয়ে গিয়ে বলল, জন রাইট সহবাগকে জোরে ঘুষি মেরেছে। আমি বললাম, ‘তুমি মজা করছো?’ সে বলল, ‘না, যখন সহবাগ ড্রেসিংরুমে ঢুকলো, জন রাইট তার কলার ধরে দেয়ালের দিকে ঠেলে দিল এবং বলল, ‘তুমি আর কখনো ভারতের হয়ে খেলবে না, কারণ তুমি যেভাবে খেলেছ তাতে আমরা ম্যাচ হারতে পারতাম।”
আরও পড়ুনঃ IND vs ENG: ভারতের ইংল্যান্ড সফরের দল ঘোষণা থেকে কে হচ্ছে অধিনায়ক? বড় আপডেট
সৌরভ যোগ করেন, “আমি এরপর জন রাইটের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘তুমি কি সত্যিই সহবাগকে ঘুষি মেরেছো?’ সে বলল, ‘হ্যাঁ, আমি মেরেছি।’ আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘সে কি পাল্টা ঘুষি মেরেছে?’ এরপর আমরা সবাই টিম বাসে উঠলাম। সহবাগ সবার শেষে বাসে উঠলো। আমি তাকে আমার পাশে বসতে বললাম। জিজ্ঞাসা করলাম, ‘জন রাইট কি তোমাকে সত্যিই ঘুষি মেরেছে?’ সহবাগ হেসে বলল, ‘হ্যাঁ, ও ঠিকই করেছে। আমি খারাপ শট খেলেছি, ও রেগে গিয়ে ঘুষি মেরেছে। এরপর আমরা করমর্দন করলাম এবং সবকিছু ঠিক হয়ে গেল।”
এইসব ঘটনাগুলো দেখায়, ভারতীয় ক্রিকেটে কোচদের কঠোরতা নতুন কিছু নয়। তবে গম্ভীরের মতো নতুন প্রজন্মের কোচরা শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন, যা আগামী দিনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।