আরও পড়ুন - KKR vs LSG : গান গেয়ে, পার্টি করে বিন্দাস মুডে সময় কাটছে নাইট রাইডার্স ক্রিকেটারদের !
আর এ সবকিছুই হয়েছে নয় বছর আগে ১৫ বছর বয়সী এক কিশোরের ক্রিকেটের প্রতি অশেষ ভালোবাসা ও টানের কারণে। পুরোপুরি একার চেষ্টায় কানপুর থেকে দিল্লিতে ভার্দওয়াজের অ্যাকাডেমিতে চলে আসেন কার্তিক। পরিবারকে বলে আসেন, ক্রিকেটের কারণে কনস্টেবল বাবার ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবেন না তিনি। দিল্লিতে বন্ধু রাঁধে শ্যাম ছাড়া আর কাউকে চিনতেন না কিশোর বয়সের কার্তিক।
advertisement
রাঁধে শ্যাম নিজেও খেলতে লিগ ক্রিকেটে। তার মাধ্যমেই দিল্লির নানান অ্যাকাডেমিতে ঘুরে বেড়ান কার্তিক। কিন্তু সব জায়গায়ই মোটা অঙ্কের ফি চাওয়া হয়। শেষমেশ তারা ভার্দওয়াজের অ্যাকাডেমিতে যায় এবং শুরুতেই বলে দেয় কোচিংয়ের ফি দেওয়ার মতো অবস্থা নেই কার্তিকের। এ কথা শোনার পরেও ট্রায়াল নিতে রাজি হন ভার্দওয়াজ এবং কার্তিকের একটি ডেলিভারি দেখেই তাকে অ্যাকাডেমিতে রাখতে সম্মত হন বর্ষীয়ান কোচ।
থাকা-খাওয়ার জন্য সংগ্রামে নামতে হয় কার্তিককে। নিজের ভরণপোষণের জন্য ক্রিকেট অ্যাকাডেমি থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে মাসুরি নামক গ্রামের একটি ফ্যাক্টরিতে কাজ নেন কার্তিক। সেখানেই হয় থাকার ব্যবস্থা। সারা রাত ফ্যাক্টরিতে কাজ করে দিনের বেলা অ্যাকাডেমিতে অনুশীলন করতে যেতেন কার্তিক।
প্রায় সময়ই এক প্যাকেট বিস্কুটের টাকা বাঁচাতে মাইলের পর মাইল হেঁটে যেতেন তিনি। ভার্দওয়াজ যখন এই অবস্থার কথা জানতে পারেন, তখন তিনি নিজের ছাত্রকে জিজ্ঞেস করেন, কাছে কোথাও কেনো থাকেন না কার্তিক? তখন কার্তিক নিজের কোচকে ফ্যাক্টরিতে রাতের কাজের কথা জানান। এটি শুনে অ্যাকাডেমির বাবুর্চির সঙ্গে কার্তিকের থাকার ব্যবস্থা করে দেন ভার্দওয়াজ।
নতুন ঠিকানায় কার্তিকের প্রথম দিনের কথা এখনও মনে আছে ভার্দওয়াজের, যখন অ্যাকাডেমির বাবুর্চি ওকে (কার্তিক) দুপুরের খাবার দিলো, তখন ও কান্না শুরু করে দিলো! কারণ প্রায় এক বছর দুপুরে কিছু খায়নি।
এরপর কার্তিককে একটি স্কুলে ভর্তি করে দেন ভার্দওয়াজ।
যার ফলে স্কুলের বিভিন্ন টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পান কার্তিক এবং ডিডিসিএ লিগে ৪৫ উইকেট নেন। দিল্লির সম্মানজনক ওম নাথ সুদ টুর্নামেন্টসহ তিনটি টুর্নামেন্টে আসর সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন কার্তিক। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।