ভারতীয় মহিলা দলের সাফল্যে তিনিই নেপথ্যের নায়ক। ২০২৩ সালের অক্টোবরে দায়িত্ব নেওয়ার সময় দল ছিল অস্থিরতা ও আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভরা। আগামী বিশ্বকাপে দলটা কেমন পারফর্ম করবে তা নিয়েও ছিল সংশয়। কিন্তু দুই দশকের বেশি সময়ের ক্রিকেট জ্ঞান, মুম্বইয়ের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে ১১ হাজারেরও বেশি রান করার অভিজ্ঞতা, গভীর কৌশলচিন্তা আর সর্বোপরি নিজে ভারতের জার্সিতে না খেলতে পারার আক্ষেপ তাঁকে তৈরি করেছিল এক নিখুঁত রণকৌশলী কোচে। স্বভাবে শান্ত হলেও, আদতে তিনি কতটা দৃঢ়চেতা ও দলটার নিউক্লিয়াস, এই সাফল্য তার প্রমাণ।
advertisement
বিশ্বাস—এই শব্দটিই ছিল তাঁর কোচিংয়ের মূল মন্ত্র। প্রথমেই দলের ভিতর আস্থা তৈরি করেন তিনি। গ্রুপ পর্বে টানা তিন হারের পরও শান্ত থাকেন অমল। সাজঘরে একটিমাত্র বার্তা লেখেন সাদা বোর্ডে—“ফাইনালে পৌঁছতে হলে শুধু এক রান বেশি তুলতে হবে!” তাঁর সেই বাস্তববাদী অনুপ্রেরণাই দলকে আবার তাতিয়ে তোলে। ড্রেসিং রুমে তার পেপ টক কীভাবে গোটা দলকে উজ্জীবিত করেছিল সেমিফাইনাল শেষে তা জানিয়েছেব হরমনপ্রীত কউর। ফল, অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয় ও ফাইনালের টিকিট।
অধিনায়ক হরমনপ্রীত কউর বলেন, “স্যার যা বলেন, সেটা হৃদয় থেকে বলেন।” অমলের নেতৃত্ব নীরব, কিন্তু গভীর। তরুণ প্রতিভাদের প্রতি তাঁর আস্থা ও সাহসী সিদ্ধান্ত যেমন—ক্রান্তি গৌড় বা শ্রী চরণিকে সুযোগ দেওয়া, কিংবা জেমাইমা রড্রিগেজকে হঠাৎ তিন নম্বরে নামানো—সবই দলের ভারসাম্য বদলে দিয়েছে। তাঁর কাছে জয় মানে শুধু স্কোরবোর্ড নয়, মানসিক দৃঢ়তা গড়ে তোলা। আর সেমিতে হঠাৎই জেমাইমাকে ৩ নম্বরে নামানো মাস্টার স্ট্রোক ছাড়া অন্য কিছু নয়।
আরও পড়ুনঃ ২০১১ সঙ্গে ২০২৫-এর অদ্ভূত মিল! কাপ আসছে ভারতের ঘরে! আশায় বুক বাঁধছে দেশ
কাজ এখনও শেষ হয়নি। এবার ভারতের সামনে ইতিহাস গড়ার সুযোগ। যিনি একসময় জাতীয় দলের জার্সি পাননি, তিনিই এখন সেই দলের কোচ হয়ে বিশ্বজয়ের দোরগোড়ায়। অমল মজুমদার প্রমাণ করেছেন দেশের জার্সি গায়ে না চাপিয়েও নায়ক হওয়া যায়। নেপথ্যে থেকেও তিনি হয়ে উঠেছেন ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের নতুন প্রেরণা।

