এয়ারপোর্টে বসেই নিউজ এইট্টিন বাংলার সঙ্গে কথা বলেন আকাশ দীপ। শুরুতেই ফোনে বলেন, “ভাইয়া-দিদির সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। আজ খুব বেশি কথা বলব না। দিদি আমার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে। দিদির সঙ্গে বেশি করে সময় কাটাতে চাই আগামী কয়েক দিন। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে দিদিকে জেতাতেই হবে। সেই লড়াই আমি সব সময় পাশে রয়েছি। বার্মিংহাম টেস্ট জয়ের পর সেই সাফল্য দিদিকে উৎসর্গ করেছিলাম। দিদির সঙ্গে সময় কাটিয়ে তার পর বাংলা দলের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দেব।
advertisement
ফোন রাখার আগে বলেন, “আমার পারফরম্যান্সে সবাই খুশি হয়েছে, তাতেই আমার ভাল লাগছে। অনেক কিছু শিখেছি ইংল্যান্ডে। তবে আরও ভাল করতে হবে আগামিদিনে।”
আসলে লখনউতে যে আকাশের প্রিয় মানুষ থাকেন। যার জন্য বার্মিংহামের সাফল্য উৎসর্গ করেছিলেন। মনে পড়ছে ইংল্যান্ডে দ্বিতীয় টেস্টের পর আকাশের সেই গল্পটা? জীবন যুদ্ধের লড়াইয়ে বারবার ধাক্কা খেতে খেতেই আকাশ এগিয়ে চলেছে। খুব সহজ ছিল না ক্রিকেটার হওয়ার গল্পটা।
আরও পড়ুন- দাদার ‘চাকরি’ যাবে সৌরভের জন্য! মহারাজের বড় সিদ্ধান্ত, তাতেই স্নেহাশিসের বিদায়!
কয়েক মাসের ব্যবধানে বাবা এবং দাদাকে হারাতে হয়েছিল। পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়ে আকাশের কাঁধে। সেখান থেকে ক্রিকেট খেলেই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন আকাশ। তবে এর মধ্যে আকাশ আবার ধাক্কা খান যখন জানতে পারেন বড় দিদি ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছেন। যদিও সে কথা জনসমক্ষে কখনওই বলতে চাননি।
বার্মিংহামে টেস্টে ১০ উইকেট নেওয়ার পর আবেগ তাড়িত হয়ে দিদির ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার খবরটি বলেন আকাশ। নিজের পারফরম্যান্স উৎসর্গ করেন দিদিকে। বাইরে থাকলেও আকাশ প্রতি মুহূর্তে দিদির খোঁজ খবর রাখেন। তাই ইংল্যান্ড থেকে ফেরার পর দিদির সঙ্গে দেখা করতে চলে গেলেন আকাশ।
বার্মিংহাম টেস্ট জয়ের পর ভিডিও কলে দিদি জ্যোতির সঙ্গে কথা বলেছিলেন। ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বারবার আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন জ্যোতিও। সেই সময় আকাশ বলেছিলেন, চিন্তা করো না, খুব তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যাবে সব কিছু। আমি সব সময় তোমার পাশে রয়েছি, শুধু আমি নয়, এ যুদ্ধে গোটা দেশ তোমার সঙ্গে রয়েছে, তুমি ঠিক জিতবে।
ক্যাম্বিস বলে ক্রিকেট শুরু করার পর থেকে কোনওদিনই ভাবতে পারেনি দেশের হয়ে খেলবেন! তবে ধীরে ধীরে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন আকাশ। প্রথমে বাংলা দল, সেখান থেকে ভারতীয় দল। তবে আকাশের লক্ষ্য এখানেই থামছে না। আকাশের সামান্য চোট রয়েছে বলে খবর। সেই চোট পরীক্ষা করার পরেই টিম ম্যানেজমেন্টের পরামর্শ নিয়ে দিলীপ ট্রফিতে নামতে চান।
আপাতত কয়েকদিন ছুটির মুডে আকাশ। এর মধ্যেই সিএবি-র তরফ থেকে বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আকাশকে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তারা। ইংল্যান্ডে ব্যাটে বলে দুরন্ত পারফরমেন্সের জন্য বিশেষ পুরস্কার দেওয়ার ভাবনা সিএবি কর্তাদের।