অন্তত আজেন্টিনার অন্য ফাইনালের দিনগুলো যেভাবে শেষ হয়, তেমন অবশ্যই নয়।
আর্জেন্টিনার জার্সিতে মেসি এর আগেও ফাইনালে খেলেছেন। এক-দুটি নয়, চারটি। চারবারই হেরেছিলেন। অবশেষে দশম টুর্নামেন্টের পঞ্চম ফাইনালে প্রথম শিরোপার দেখা পেলেন, ঘুচল তাঁর ক্যারিয়ারের একমাত্র অপ্রাপ্তি! সেটিও ঘুচল, স্বপ্নের মতো করেই। ব্রাজিলের মাটিতে ব্রাজিলকে হারিয়ে ফাইনাল জেতার অনুভূতি তো আর্জেন্টাইনদের জন্য স্বপ্নের মতোই।
advertisement
অনেকদিনের অপেক্ষারই অবসান। সময়ের হিসেবে ২৮ বছর। এত দিনের এ অপেক্ষার শেষটা যে এত মধুর হবে সেটি মেসি হয়তো ভাবেননি। সে কারণেই কিনা, শিরোপা হাতে নিয়ে অবিশ্বাস মেশানো আনন্দে মেসির কৃতজ্ঞতা ঝরল সৃষ্টিকর্তার প্রতি। মেসির মনে হচ্ছে, তিনি যে একগুলো ফাইনালে হেরেছেন, সেটি হয়তো বিধাতারই নির্ধারিত বিধি, হয়তো এমন একটা মুহূর্তের জন্যই এত বেদনা, এত স্বপ্ন ভঙ্গ, ‘অপূর্ব পাগলামো চারিদিকে। সবকিছুই অন্যরকম মনে হচ্ছে। আমার মনে হয় ঈশ্বর এমন একটা মুহূর্ত আমার জন্যই বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। ব্রাজিলের বিপক্ষে ফাইনাল জেতা, তা-ও তাদেরই দেশে!’
সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পরপরই মেসির শ্রদ্ধা কোচ স্কালোনির প্রতি, ‘‘লিওনেল তাঁর দারুণ প্রতিভা বুঝিয়ে দিয়েছেন। জাতীয় দলের জন্য সব সময় সেরাটাই চেয়েছেন তিনি। জানতেন কীভাবে একটা শিরোপা জেতার মতো দল গড়তে হয়। সবার প্রশংসা তাঁর প্রাপ্য।’ দি পল, লো সেলসো, পারেদেস, লওতারো, এমিলিয়ানো মার্তিনেজ, রোমেরোদের কেউ বড় তারকা নন, কিন্তু দলের জন্য জানবাজি রেখে খেলেছেন। স্কালোনির নির্দেশের বাস্তবায়নে রক্ষণ জমাট রেখে খেলার কৌশলেও মানিয়ে নিয়েছেন।
দলের প্রতিও তাই মুগ্ধতা মেসির, ‘এই দলের ওপর আমার ভরসার কখনও কমতি ছিল না। সর্বশেষ কোপা আমেরিকার (২০১৯) পর থেকে দলটা আরও শক্তিশালী হয়েছে। দারুণ কিছু মানুষকে নিয়ে গড়া আমাদের দলটা, যারা সব সময়ই সব বাধা ঠেলে সামনে এগোতে চায়, কখনো কিছু নিয়ে অভিযোগ করে না।’ আজ নাম, খ্যাতি, যশ, অর্থ সবকিছুই কেমন যেন পেছনের সারিতে মনে হচ্ছে লিওনেল মেসির। দেশের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ট্রফি হাতে পেয়েছেন প্রথমবার। এই অনুভূতির ভাগ হবে না!