দেশটার নাম রাশিয়া। ডোপিং নিয়ে তাদের ভূমিকায় অধিকাংশ দেশ ছিল প্রবল ধোঁয়াশায়। দোসর ছিল পশ্চিমী দুনিয়ার ধারাবাহিক নেতিবাচক প্রচার। মার্কশিট বলছে ঝড়-ঝাপটা সামলে রাশিয়া দেখিয়েছে এত বড় টুর্নামেন্ট আয়োজন কার্যত বিতর্কহীন। রাশিয়া বিশ্বকাপ কেন ব্যতিক্রম, তার কিছু নমুনা।
মাঠে যাই হোক মাঠের বাইরে তিনিই আসল রাজা। রাশিয়ায় আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন মারাদোনা। কখনও নাইজেরিয় সমর্থকদের উদ্দেশে অশ্লীল অঙ্গিভঙ্গি, গ্যালারিতে চুরুট ধরানো, আর্জেন্টিনার কোচ হতে চাওয়া। বিতর্কে মানেই ফুটবলের রাজপুত্র। ফিফার অ্যাম্বাসাডর হয়েও কলম্বিয়া ম্যাচে রেফারির ভূমিকায় তিনি সরব হন।
advertisement
টুর্নামেন্টের শেষ পথে ফিফা জানিয়ে দেয় রাশিয়া বিশ্বকাপ ডোপমুক্ত। বিশ্বকাপের আয়োজনে দেশের অর্থনীতি আরও মজুবত করতে পেরেছে পুতিন প্রশাসন।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে চেচনিয়ার রাজধানী গ্রজনিকে বাছায় মিশরের উপর বিরক্ত ছিল রাশিয়া। ট্রেনিংয়ের মহম্মদ সালাহর সঙ্গে এক চেচেন নেতার ছবিতে বিতর্ক আরও বাড়ে। সার্বিয়ার বিরুদ্ধে গোল করে শাকিরি ও জাকার বিতর্কিত সেলিব্রেশনের জল গড়ায় ফিফা পর্যন্ত। দুই ফুটবলার আলবেনিয়াকে সমর্থনের ইঙ্গিত করেন। জরিমানা করে তাদের রেহাই দেয় ফিফা। ইউক্রেনের হয়ে গলা ফাটিয়ে সমালোচিত হন ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডার ভিদা। পরে অবশ্য তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন। ক্রোট ফুটবলারদের সঙ্গে ছবি পোস্ট এবং সমর্থন করে বিতর্কে জড়ান নোভাক জকোভিচ। এই ঘটনার জন্য সার্বিয়ার টেনিস তারকাকে দেশের শাসকদল ইডিয়ট বলেছিল।
সবার আগে নাম আসবে রাশিয়ার। বিশ্বকাপে খেলা ৩২টি দেশের মধ্যে সবথেকে পিছনের র্যাঙ্ক ছিল আয়োজকদের। অথচ তারাই দুনিয়াকে অবাক করে শেষ আটে যায়। ৪২ লক্ষের দেশ ক্রোয়েশিয়ার উত্থানও চমকে দেয়।
প্রযুক্তির ভিত পুজো
এই প্রথম কোনও বিশ্বকাপে গোল-কার্ডের জন্য প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হল। ভার চালু হওয়ায় রেফারিরা অনেকটাই নির্ঝঞ্ঝাট ছিলেন। এবারই প্রথম এক্সট্রা টাইমে চতুর্থ ফুটবলার নামানোর অনুমতি দেয় ফিফা।
অঘটনের কাজান
কাজান। নামটা অভিশপ্ত এবার একাধিক টিমের কাছে। জার্মানি থেকে আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিল। এই স্টেডিয়াম ছুটি করে দিয়েছে তাবড় টিমগুলিকে।
বিশ্বকাপের হিট-ফ্লপ
অ্যাকিলিস। নিজেদের দেশের এই বিড়ালের ভবিষ্যৎজ্ঞান নিয়ে অনেক কথা বলেছিল রাশিয়া। পরপর ভুল পূর্বাভাসে অ্যাকিলিস এখন হাসির খোরাক। তবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির উট শাহিন নক আউটে সব পূর্বাভাস মিলিয়ে নতুন নায়ক।
আশা জাগিয়ে ব্যর্থ
ইউরোর চমক। প্রথম ম্যাচে মেসির আর্জেন্টিনাকে আটকে দিয়েছিল। তবে শেষরক্ষা হয়নি। বিশ্বকাপের অভিষেকে প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে যায় আইসল্যান্ড।
তারারা অস্তমিত
সালাহ, ক্রুজ দিয়ে শুরু। তারপর মেসি, রোনাল্ডো, ইনিয়েস্তা, নেইমার। কার্যত কোয়ার্টারের আগেই বিশ্বকাপের তারকারা উধাও হয়ে যায়।
কোচ বদলে দাঁড়ি
রাশিয়া প্রথম কোনও বিশ্বকাপ যেখানে কোচবদলের হিড়িক দেখা গেল না। তুমুল সমালোচনার পরও চাকরি বহাল সাম্পাওলির। জোয়াকিম লো-কে সরানোর কথা ভাবেনি জার্মান ফুটবল কর্তারা। এমনকী, ছোট দেশগুলিও কোচ ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটেনি।