একই সঙ্গে ফুটবলের ময়দানে বল পায়ে ড্রিবল দেখানোর সঙ্গে চমৎকার রানআপে যখন উইকেটের এক প্রান্ত বল করতেন তা দেখে মুগ্ধতায় মজেনি এমন ক্রীড়া প্রেমী নেই৷ ফুটবলার হিসেবে তাঁকে ক্রীড়া জগত কুর্নিশ করেছে বারবার সে তুলনায় কিছুটা যেন কম সামনে আসতেন ক্রিকেটার চুনী ৷ তবে তাঁর সেই ক্রীড়া অধ্যায় যে গরিমায় ভরা তাই একবার মনে করে দেখা তাঁর প্রয়াণ দিবসে ৷
advertisement
১৯৬২য-৬৩ সালে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে চুনী গোস্বামীর ৷ ডানহাতি ব্যাটসম্যানের পাশাপাশি ছিলেন ডানহাতি মিডিয়াম পেসার ৷ বাংলা ক্রিকেট দলকে রনজি ট্রফি ফাইনালে উঠিয়েছিলেন তিনি ৷ সেই সোনালি সালটা ছিল ১৯৭১-৭২ ৷চুনীর বাংলা পৌঁছেছিল রনজি ট্রফির ফাইনালে ৷ তিনি ফিল্ডার হিসেবেও যে তুখোড় ছিলেন তাঁর পরিসংখ্যানই তাঁর পরিচয় ৷ কারণ তিনি নিয়েছিলেন ৪০ টি ক্যাচ ৷ এছাড়াও বোলার চুনীর দখলে ৪৬ ম্যাচে ছিল ৪৭ টি উইকেট ৷ তাঁর সেরা বোলিং ৪৭ রান দিয়ে ৫ উইকেট ৷
ওয়েস্টইন্ডিজ ভারতের একটি কম্বাইন্ড দলের বিরুদ্ধে প্রথম শ্রেণীর খেলায় জ্বলে উঠেছিলেন চুনী ৷ সেই দলে সেসময়ে ভারত সফরে এসেছিলেন ক্লাইভ লয়েড ৷ সেই ১৯৬৪-৬৫ সালের সেই খেলার সময় সুব্রত গুহ ও চুনী মিলে ধ্বসিয়ে দিয়েছিলেন শক্তিশালী বিপক্ষকে ৷
গুহ নিয়েছিলেন চার উইকেট আর চুনী গোস্বামী নিয়েছিলেন ৪৭ রানে ৫ উইকেট ৷ সে সময় যখন ভারতীয় ক্রিকেটে পশ্চিমাঞ্চল ,মধ্যাঞ্চলের দাপট সে সময় দুই বঙ্গতনয় হয়ে উঠেছিলেন দলের বড় ভরসা ৷ বিষাক্ত বোলিংয়ের সামনে কুঁকড়ে গিয়েছিল বিপক্ষ ৷ তাঁদের বোলিংয়ে একটা সময় ওয়েস্ট ইন্জিড ছিল ৭ উইকেটে ১০৮ রানের পুঁজি নিয়ে ৷ তারা শেষ হয়েছিল ১৩৬ রানে ৷
ফুটবলার হিসেবে চুনীর সাফল্য অবশ্য তাঁর ক্রিকেটার সত্ত্বার বিখ্যাত হওয়াকে খানিকটা হলেও হয়ত কমিয়ে দিয়েছিল বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের ৷ আসলে স্ট্রাইকার যখন সামনে থেকে গোল করে তখন তাঁর চেয়ে নান্দনিক আর কিছু হতে পারে না ৷তাই ১৯৬২ -র এশিয়ান গেমসের সোনাজয়ী দলের স্ট্রাইকারের কাছে খানিকটা ম্লান হয়েই থেকে গিয়েছিলেন বঙ্গ রনজি দলের অধিনায়ক ৷
তাঁর প্রয়ানে ময়দানের বাইশ গজ ় যেমন কাঁদছে, তেমনি কাঁদছে ফুটবলের মাঠ ৷ এই মহান খেলোয়াড় শূন্য করে দিয়ে গেলেন সব জগতকেই ৷