বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমসে সোনার পদক জিতেছেন অচিন্ত্য। সাফল্য এসেছে, তাই প্রচারের আলোয় রয়েছেন তিনি। তবে এতদিন তাঁর অভাব, লড়াইয়ের খবর কেউ রাখেননি।
ছেলের সাফল্য মায়ের আনন্দের শেষ নেই। কিন্তু হাওড়ার দেউলপুরের ভাঙা বাড়িতে ছেলের অর্জিত পদক ও ট্রফি রাখার ভাল জায়গা নেই। তাই নিজের ছেঁড়া শাড়িতেই ছেলের মহামূল্যবান পদক ও ট্রফিগুলি রেখেছেন অচিন্ত্য শিউলির মা।
advertisement
আরও পড়ুন- Bengal Cricket : বাংলা ক্রিকেট দলকে হিংস্র মানসিকতার করে তোলাই লক্ষ্য লক্ষ্মী, রমনের
অচিন্ত্য শিউলির বাড়ি কলকাতা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে হাওড়া জেলার দেউলপুরে। অচিন্ত্যর মা জানান, বাড়িতে খাটের নিচে শাড়িতে জড়িয়ে অচিন্তার ট্রফি ও মেডেল রাখা আছে। সেখানেই ওগুলো সব থেকে বেশি নিরাপদ বলেও জানান তিনি।
এখনও বাড়িতে ট্রফি রাখার আলাদা জায়গা করতে পারেননি অচিন্ত্য। তবে ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই করবেন। তবে ততদিন পর্যন্ত তাঁর মা পূর্ণিমা শিউলি ছেলের মূল্যবান জিনিসগুলিকে নিজের জিম্মায় রেখেছেন।
কমনওয়েলথ গেমসে ৭৩ কেজি ওজন বিভাগে সোনার পদক জিতেছেন অচিন্ত্য। তাঁর মা পূর্ণিমা শিউলি ছেলেকে একটি আলমারি কিনতে বলেছেন। সেখানে তিনি ছেলের পদক ও ট্রফিগুলি রাখবেন বলে ঠিক করেছেন।
পূর্ণিমা শিউলী বলেছেন, 'আমি জানতাম অচিন্তা যখন আসবে তখন সাংবাদিক, ফটোগ্রাফাররা আমাদের বাড়িতে আসবে। সেই জন্য আমি এই মেডেল-ট্রফিগুলো একটা স্টুলের ওপর রেখেছি যাতে তারা বুঝতে পারে আমার ছেলে কতটা প্রতিভাবাম। আমি স্বপ্নেও ভাবিনি ও দেশের জন্য সোনার পদক জিতবে।
আরও পড়়ুন- 'আমার মা মোহনবাগানী, দাদা ইস্টবেঙ্গল, আমি...', ফুটবলে কার সমর্থক, জানালেন মমতা
২০১৩ সালে তাঁর স্বামী জগৎ শিউলির মৃত্যুর পর দুই ছেলে - অলোক এবং অচিন্ত্যকে বড় করতে তিনি কষ্টের সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি বললেন, 'দুই ছেলেকে অভাবের মধ্যে মানুষ করা আমার কাছে কোনও লড়াইয়ের থেকে কম ছিল না। তবে আজ আমাদের বাড়ির বাইরে মানুষের ভিড় বলছে, দিন বদল হয়েছে। ছেলেকে মানুষ করতে পেরেছি। ওদের প্রতিদিন ভাল খাবারও দিতে পারতাম না। কতদিন তো না খেয়ে ঘুমােত।
পূর্ণিমা শিউলি আরও বলেন, 'ছেলেদের লোডিং-আনলোডিং-এর কাজে পাঠানো ছাড়া আমার কোনও উপায় ছিল না। তা না হলে আমাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে যেত।”