বাংলার প্রতিটা জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এই সংগঠন। করোনা ও ইয়াসের মতো জোড়া বিপদের সময় শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি থেকে সুন্দরবন, পূর্ব মেদিনীপুর সর্বত্রই মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে এই সংগঠন। শিলিগুড়ি বাংলা পক্ষ দুঃস্থ মানুষদের রান্না করা খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে। জলপাইগুড়ি জেলায় নানা এলাকায় স্যানিটাইজেশনের কাজ করছে। নানা জেলায় কোভিড যোদ্ধা হিসাবে কাজ করছে বাংলা পক্ষর সহযোদ্ধারা। এই সময় রক্তের ঘাটতি তীব্র। এই সংগঠনের পক্ষে ইতিমধ্যে তিন জেলা- হুগলী, আলিপুরদুয়ার ও মালদায় রক্তদান শিবির করা হয়েছে। ইয়াসে বিধ্বস্ত দুই চব্বিশ পরগনার সুন্দরবন ও সংলগ্ন অঞ্চল এবং পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূলবর্তী বিস্তৃর্ণ এলাকা। এখানেও এই সংগঠন যথা সম্ভব মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে সকলের সহযোগিতায়। তাজপুর ও হলদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে মানুষের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
advertisement
উত্তর চব্বিশ পরগনার সন্দেশখালি সহ বিস্তৃর্ণ এলাকা এখনও জলমগ্ন। সেখানেও এই সংগঠনের তরফে প্রায় ৪৫০ পরিবারের হাতে শুকনো খাবার, মশার ধূপ, ওষুধ, মোমবাতি , জলের বোতল, স্যানিটারি ন্যাপকিন, মাস্ক, স্যানিটাইজার তুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও মানুষের পাশে দাঁড়াতে ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহ চলছে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সদস্যদের দল ইতিমধ্যে সুন্দরবনের একাধিক জায়গায় ত্রাণ দিচ্ছে। এছাড়া কুলতলিতে শুরু হয়েছে বাংলা পক্ষর কমিউনিটি কিচেন। এছাড়া গোসাবা, রাঙাবেলিয়া ও সাগরে তারা পৌঁচ্ছেছে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে। আমফানের পরবর্তী সময়েও তারা সুন্দরবনের নানা জায়গায় কাজ করেছিল মানুষের পাশে দাঁড়াতে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে ১০০ টি পরিবারকে নগদ ৪০০০ টাকা করে পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল এই সংগঠন। এবারও নানাভাবে সুন্দরবনের দু তিনটে ব্লকের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াল এই সংগঠন।
অন্যদিকে মৌসুনী দ্বীপেও একাধিক সংগঠনের তরফে চলছে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের কাজ৷ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এই দ্বীপের। দ্বীপের বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে গ্রাম। একদিকে নদী, অন্যদিকে সমুদ্র। সেখানেও চলছে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ত্রান পাঠানোর কাজ৷ ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের জেরে এখানে একদিকে যেমন গ্রামের একাধিক জায়গায় জল ঢুকে গেছে। তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুকুর, চাষের জমি সব কিছুর। নোনা জলের জন্যে বদলে গেছে এই দ্বীপের গাছের চেহারা। দূর থেকে দেখলে মনে হবে দ্বীপে বোধহয় কেউ সোনা ঝুলিয়ে রেখে দিয়েছে। সামনে গেলে দেখা যাবে আসলে গাছের পাতা পুড়ে গিয়েছে। তো এই দ্বীপেও চলছে ত্রাণ সামগ্রী দেওয়ার কাজ। সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের প্রাক্তনীরা এই কাজ করেছেন। প্রাক্তনীদের মধ্যে অরিন্দম দত্ত জানিয়েছেন, বিভিন্ন পেশার সাথে আমরা অবশ্যই যুক্ত৷ কিন্তু এখন মানুষকে এই সব প্রত্যন্ত এলাকায় যে সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে তা খুবই দুঃখের। তাই প্রশাসনের পাশাপাশি আমরাও সাধ্য মতো সাহায্য করছি। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসনের তরফে ত্রাণ দেওয়া ও সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। এবার বিভিন্ন সংগঠন এগিয়ে আসায়, বিপদের সময় মানুষ যে মানুষের পাশে আছে সেই বার্তা দেওয়া হল সর্বত্র।