TRENDING:

দিঘা সমুদ্র সৈকতে মৃত্যু মিছিল অব্যাহত, মৃত্যুর আসল রহস্য কী ? পড়ুন...

Last Updated:

দিন দিন দিঘা সমুদ্রতটে পর্যটকের ভিড় বাড়ছে ৷ তেমনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুমিছিল ৷ বুধবার সকালে ওল্ড দিঘার বিশ্ববাংলা ঘাটের কাছ থেকে ফের উদ্ধার হল এক পর্যটকের মৃতদেহ ।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#দিঘা : দিন দিন দিঘা সমুদ্রতটে পর্যটকের ভিড় বাড়ছে ৷ তেমনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুমিছিল ৷ বুধবার সকালে ওল্ড দিঘার বিশ্ববাংলা ঘাটের কাছ থেকে ফের উদ্ধার হল এক পর্যটকের মৃতদেহ ।
advertisement

মৃতের নাম আজাহার আলি । তাঁর বাড়ি কড়েয়া থানার পি-১৪ রোডে । মঙ্গলবার সকালে বন্ধুদের সঙ্গে তিনি দিঘায় এসে উঠেছিলেন । এরপর স্নান করতে নামেন তিনি ৷ কিন্তু গতকাল বিকেল থেকেই নিখোঁজ হয়ে যান তিনি ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দিঘা থানার পুলিশ ৷ সমূদ্রের বিভিন্ন জায়গায় তন্নতন্ন করে তল্লাশি চালানো হয় । বুধবারও একই ভাবে তল্লাশি অভিযানে নামেন দিঘা থানার পুলিশ ৷ অবশেষে বুঝবার বিকেলে ২নং ঘাটে সকালে আজাহারের দেহ উদ্ধার হয় । থানায় গিয়ে তার বন্ধুরা মৃতদেহটিকে শনাক্ত করেন ।

advertisement

একের পর এক মৃত্যুর জেরে প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷ সমুদ্র স্নানে পর্যটকদের সচেতনতা বাড়িয়ে তোলার ক্ষেত্রেও বিশেষ নজর দিচ্ছে প্রশাসন ৷ শুধু আজাহারই নয় ৷ দিঘা, উদয়পুর, মন্দারমণি, তাজপুর সমুদ্র সৈকতে গত এক সপ্তাহে জলে ডুবে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই ৷ একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেই তালিকা ৷

১৩ জুন, ২০১৮ : গার্ডওয়ালে দাঁড়িয়ে ঢেউ দেখার সময় জলের তোড়ে টানা হয়ে যান কাঁচরাপাড়া রেলওয়ে কর্মী চন্দন মুখার্জি (৫৮)। পরে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

advertisement

২৩ এপ্রিল ২০১৮ : বি.টেক ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র বেহালার বাসিন্দা সঞ্জিত সরকার (২৭)-র মৃত্যু হয় দিঘায় ।

১১ জুন ২০১৮ : ঝাড়খন্ডের কালিডি এলাকার বাসিন্দা অঙ্কিত আগরওয়াল (১৭) ৷ উদয়পুরের সমুদ্রে তলিয়ে যান তিনি ৷ এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা সোনু চোধুরী (১৮) নিউ দিঘা থেকে নিখোঁজ হয়ে যান ৷ পরের দিন দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয় দিঘা মোহনা থানা এলাকা থেকে ।

advertisement

৩০ অক্টোবর, ২০১৭ : সেক আশারুল (২১)। তাঁর বাড়ি হাওড়ার বড়গাছিয়া জগৎবল্লভপুরে ।

২৮ অক্টোবর, ২০১৭ : বাপ্পা মুন্সি (২৬)। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগণার রাজারহাটের উস্তি থানা এলাকার বাসিন্দা।

১৪ জুলাই, ২০১৭ : নদিয়ার তাহেরপুর এলাকার বাসিন্দা শিবু বিশ্বাস (২২)।

৬ জুন ২০১৭ : উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদ জেলার কোতোয়ালি থানার দেওখালি এলাকার বাসিন্দা হিমাংশু কানোজিয়া (১৭)।

advertisement

১০ জুন ২০১৭ : তাজপুর সমূদ্র সৈকতে জলে ডুবে মৃত্যু হয় নীল মুখার্জী (২৫)। তিনি কলকাতার গড়িয়া এলাকার বাসিন্দা।

২৮ মে ২০১৭ : মন্দারমণি সমুদ্র সৈকতে জলে ডুবে মৃত্যু হয় হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকার বাসিন্দা স্কুল পড়ুয়া শুভম আগরওয়াল (১৯) ও মহেশ বাইয়া (১৯)-র ৷

৩০ এপ্রিল, ২০১৭ : কলকাতার নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা সানু দাস (৩৫) ৷ দিঘার সমুদ্রে জলে ডুবে মৃত্যু হয় তার ৷ তিনি পরিবারের সঙ্গে এসে দীঘা মোহনা থানা এলাকার ১নং ঘাটের কাছে সমুদ্রের পাড়ে বসে ছিলেন । ঠিক সেই সময়ই একটি বড়সড় ঢেউ ধাক্কা দিলে সবার চোখের সামনেই সানুবাবু জলে তলিয়ে যান ৷

১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ : কলকাতার ৩ পর্যটক মন্দারমণি সমূদ্র সৈকতে ঘুরতে গিয়েছিলেন ৷ আইটি সেক্টরের কর্মী ছিলেন তারা তিনজনই ৷ মন্দারমণির সমুদ্রে জলে ডুবে মৃত্যু হয় তার । মৃতেরা হলেন লেকটাউনের বাসিন্দা সুমন্ত্র ব্যানার্জী, সল্টলেকের লোকেশ মাহরোত্রা এবং তেঘরিয়ার বিনয় চৌধুরী ।

১০জুলাই ২০১৬ : একই পরিবারের দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয় তাজপুর সমূদ্র সৈকতে জলে ডুবে ।

৩০ জুন, ২০১৬ : ওল্ড দীঘায় জলে ডুবে মৃত্যু হয় হাওড়ার ডোমজুড়ের বাসিন্দা তৃণমূল নেতা রত্নেন্দু চৌধুরী ও তাঁর গাড়ি চালক নারায়ন দত্তের ।

১৮ অক্টোবর, ২০১৫ : নিউ দীঘার ক্ষণিকা ঘাটে জলে ডুবে মৃত্যু হয় খড়গপুর আইআইটির কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ভোপালের বাসিন্দা রোহিত ত্রিপাঠি এবং এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র উত্তরাখন্ডের বাসিন্দা অনিরুদ্ধ কুমার ।

২০ মে, ২০১৫ : কলকাতার বাসিন্দা সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরী (৩৬) ৷ তাঁর পুরো পরিবারকে নিয়ে মন্দারমণি ঘুরতে গিয়েছিলেন ৷ সেখানেই সমুদ্রের ঢেউয়ের আঘাতে গুরুতর আহত হন সিদ্ধার্থ ৷ গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

২১ আগষ্ট, ২০১৫ : মন্দারমণি বিচে গাড়ি রেসিং করতে গিয়ে দুই গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষে কলকাতার তিন যুবক বৈভব, সুরজ এবং শিবরাজ প্রাণ হারিয়েছেন।

এই পরিসংখ্যান নমুনা মাত্র। এছাড়াও দিঘা আসা যাওয়ার পথে গাড়ি দুর্ঘটনায়, এবং দিঘার হোটেলে আত্মঘাতী হওয়ার ভুরি ভুরি নজির রয়েছে । এক কথায় পরিসংখ্যান যে বেশ ভয়ংকর তা স্বীকার করছেন অনেকেই।

কিন্তু কেন এই দুর্ঘটনা ? এর আসল কারল হল ২টো।

এক – অতিরিক্ত অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় হওয়ায় বিপজ্জনক জেনেও সমূদ্রের অনেক দূর পর্যন্ত সাঁতার কেটে যাওয়া ।

দুই – সব থেকে বড় কারণ, মদ্যপ অবস্থায় সমূদ্রের জলে দাপাদাপি । অধিকাংশ ঘটনাতে মদ্যপ হওয়ার জেরেই জলে ডুবে মৃত্যু হয় বলেই প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন ।

ইদ থেকে জামাইষষ্ঠী ৷ ছুটির মেজাজে দিঘা ৷ পর্যটকদের ভিড়ে ঠাসা দিঘায় একের পর মৃত্যু ঘটছে । গত কয়েকদিনে সংখ্যাটা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে । ব্যাপক ভিড় থাকায় নজরদারি বাড়ালেও লাভ হচ্ছে না । পুলিশ এবং নুলিয়াদের নজরদারি এড়িয়ে সমুদ্রে নামছেন পর্যটকরা এবং তাদের মধ্যে অনেকেরই মৃত্যুও ঘটছে ৷

বাংলা খবর/ খবর/দক্ষিণবঙ্গ/
দিঘা সমুদ্র সৈকতে মৃত্যু মিছিল অব্যাহত, মৃত্যুর আসল রহস্য কী ? পড়ুন...