বাঁকুড়ায় বিস্তৃত চর এলাকায় বসবাস প্রায় ৫০ হাজার মানুষের৷ প্রতি বর্ষায় বসতির ঘর-বাড়ি ভাঙে৷ দামোদের গহ্বরে চলে যায় ফসলী জমি৷ প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই মানাচরবাসীর নিত্যসঙ্গী৷ কিন্তু তারপরও সরকারি সাহায্য মেলে না৷ চাষবাস গ্রামের মানুষে প্রধান জীবিকা৷ সেই চাষেই থাবা বসায় ভাঙন৷ প্রতিবার বর্ষায় ভাঙে পাড়৷ কখনও কারও বাড়ি যায় ডুবে, কখনও আবার চাষের জমি৷ তবে গত দু’বছর ধরে চাষের ক্ষতি হলে সরকারি ভাতা পাওয়া যাচ্ছে৷ সে টাকা যদিও খুব কম...
advertisement
আরও পড়ুন ভোটে কোনও রকম 'তকমা' চায় না ওরা,দাবি বাড়ুক নিরাপত্তা...
বর্ষার পাড় ভাঙার সমস্যা যেমন রয়েছে, তমনই গরমে রয়েছে জলের সমস্যা৷ জলের স্তর অনেক নিচে নেমে যায়৷ টিউব ওয়েলেও জল উঠতে চায়না৷ নিজেদের ১ বিঘে ২৫ কাঠা জমির মধ্যে ১ বিঘে জমি চলে গিয়েছে জলের তলায়৷ আক্ষেপ মামনির৷ কিন্তু এর কোনও সুরাহা নেই৷ বলছেন তিনি৷ ভোট আসে, ভোট যায়, অনেক দেখা হয়ে গিয়েছে সকলকে, কেউ কিছুই করে না৷ কথা বলতে বলতে ক্ষোভ উগরে দেন মানাচরের এই মেয়ে৷ গ্রামের মানুষের মধ্যে একতা আছে৷ সেই একতার জোরেই কেউ কাউকে ছেড়ে যেতে চায় না৷ লড়াই করে, দাঁত কামড়ে পড়ে রয়েছেন এই গ্রামে৷
আরও পড়ুন মধ্যবিত্তের অবস্থা সবথেকে খারাপ, কেউ নজর দেয়না, ভোটের আগে যা বলছেন পুরুলিয়াবাসী...
বছরের পর বছর ধরে রয়েছে এই জমি ভাঙার সমস্যা৷ তাকে সঙ্গে করেই বেঁচে রয়েছে এই এলাকা৷ সঙ্গে জুড়েছে দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা৷ চাকরি নেই, হাসপাতাল নেই, স্কুলও নেই৷ সঙ্গে জুড়েছে দলীয় কোন্দল৷ বলছেন গ্রামের মেয়ে মামনি৷ তার স্বামীর চাকরি নেই৷ চাকরির আশায় জমি বেচে ৮ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন৷ কিন্তু চাকরি হয়নি৷ এখন নুন আনতে পান্তা ফোরানোর অবস্থা সংসারে৷ স্বামীর চাকরি নেই, নিজের চাকরি জোটার কোনও সম্ভাবনা নেই৷ কীভাবে চলবে সংসার? সেই চিন্তায় কপালে ভাঁজ মামনির৷ দুটি সন্তান গর্ভেই মারা গিয়েছে৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন কোনও দিনই তিনি মা হতে পারবেন না৷ মানাচরের এই মহিলার কাহিনি চোখে জল আনবে৷ তিনিই বলছেন তাদের গ্রাম থেকে অনেক দূরে হাসপাতাল৷ চিকিৎসা পেতে সমস্যায় পড়েন গ্রামের লোক৷ আন্দোলন করে রাস্তা তৈরি হয়েছে গ্রামে৷ নিজেদের ভালো থাকার জন্য এই অন্দোলন চলছে৷ আরও কাজ হোক৷ কাজ হোক দ্রুততার সঙ্গে, দাবি মানাচরের মামনি৷