ওই গ্রামের অমল মণ্ডলের বছর আঠারোর মেয়ে মণিদীপা এই বছর হাটসরবেড়িয়া হাইস্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। অমলবাবু জানান, পরবর্তী পড়াশোনা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ২৭ জুন সন্ধ্যায় এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলার সময় মণিদীপার কাকিমা ঝুমা মণ্ডল বন্ধুর সঙ্গে প্রেমের বদনাম দিয়ে নানান কুকথা বলে গালাগালি শুরু করেন। মিনিট পাঁচেক পর বন্ধু চলে যায়। কিন্তু কাকিমা বন্ধুর সঙ্গে প্রেমের বদনাম দিয়ে গালাগালি চালাতেই থাকেন। মণিদীপা প্রতিবাদ জানালে কাকিমার গলার স্বর বাড়তে থাকে। বিষয়টি ঠেলাঠেলি ধস্তাধস্তির পর্যায়ে চলে যায়।
advertisement
আরও পড়ুন: পোস্টার দেখেই গীতার প্রেমে পড়েন ভাজ্জি পাজি, কেমন ছিল হরভজনের প্রেমপর্বের শুরু?
পরের দিন অচেনা কয়েকজন লোকজন এনে মণিদীপাকে হুমকি দেওয়ায় তার কাকিমা। ২৯ জুন রাত ৮ টা নাগাদ মণিদীপা ও তার মাকে সালিশি সভায় জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরই সালিশিসভায় কাকিমা ঝুমা মণ্ডলের গালাগালির বিচার হয়নি, উল্টে মোড়লরা মণিদীপাকে বাধ্য করে ঝুমা মণ্ডলের পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে। মণিদীপার চোখের জল, কথা কোনকিছুই গুরুত্ব না দিয়ে একতরফা সালিশিসভা শেষ হয়। সালিশিসভা শেষে মণিদীপা মাকে বারবার বলছিল, কেন তার প্রতি মিথ্যা বদনামের বিচার হল না। কেন মিথ্যা প্রেমের অপবাদ তাকে বয়ে বেড়াতে হবে। এরপর হঠাৎ করে মেয়েকে আর দেখতে পাননি মা। সারারাত খোঁজ করেও খোঁজ মেলেনি।
আরও পড়ুন: যৌন মিলনের সময় 'শো অ্যান্ড টেল' খেলা খেলেছেন? পার্টনারের শরীরকে চিনলে আরও দৃঢ় হবে সম্পর্ক...
ভোরের আলো ফুটলে ৩০ জুন পাশের গ্রাম তথা সেকেন্দারি বাজার থেকে জয়কৃষ্ণপুর যাবার মাঠের রাস্তার মাঝে গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায় মণিদীপার নিথর দেহ। সালিশিসভার একপেশে বিচারের পর মেয়েকে হারিয়ে বিচার চান অমলবাবু। কাকিমা ঝুমা মণ্ডল-সহ সালিশিসভায় উপস্থিত সকলের বিরুদ্ধে দাসপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ঘাটাল মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অগ্নিশ্বর চৌধুরী জানান, অভিযোগ পেয়েই ঝুমা মন্ডলকে গ্রেফতার করে দাসপুর পুলিশ। রবিবার ঘাটাল আদালত তার ২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
সুকান্ত চক্রবর্তী