মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে অন্ধকার নেমে আসে দুই পরিবারে। একইসঙ্গে গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে শোক এবং আতঙ্কের আবহ। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে বিপত্তি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে শ্রমিকরা জমিতে কাজ শেষ করে ট্রাক্টরে করে গ্রামে ফিরছিলেন। ট্রাক্টরটির পিছনে ভারী রোটার লাগানো ছিল। সেই রোটারই দুর্ঘটনার ভয়াবহতা আরও বাড়িয়ে তোলে।
advertisement
আরও পড়ুনঃ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দাউদাউ করে জ্বলছে তুলো বোঝাই ট্রাক! চাঞ্চল্য ঘোজাডাঙ্গায়
ফেরার পথে হঠাৎই নিয়ন্ত্রণ হারায় ট্রাক্টরটি। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ট্রাক্টরটি রাস্তার ধারে নেমে গিয়ে উলটে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে রোটার-সহ পুরো ট্রাক্টর দুই শ্রমিকের উপর চাপা পড়ে। ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার শব্দ পেয়ে আশপাশের মানুষজন ছুটে এসে উদ্ধার কাজে হাত লাগালেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। রোটার-যুক্ত ট্রাক্টরের অত্যন্ত ভারী কাঠামোর নীচে চাপা পড়ে থাকা শ্রমিকদের আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় দীর্ঘক্ষণ প্রচেষ্টা চালিয়ে দেহগুলি উদ্ধার করা হয়। এরপর মৃতদেহ দু’টি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। মৃত দুই শ্রমিকের নাম হপন বেসরা এবং সুখচাঁদ বেসরা। দু’জনেই এলাকার পরিচিত পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন। তাঁদের অকাল মৃত্যুতে পরিবারগুলি শোকে ভেঙে পড়েছে। পাড়া-প্রতিবেশীরাও স্তম্ভিত। গ্রামের বাতাস যেন ভারী হয়ে উঠেছে শোকের সুরে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এক প্রতিবেশী জানান, ‘একসঙ্গে দুই পরিবারের ভরণপোষণের ভরসা চলে গেল। এই দুঃখ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়’। পুলিশ জানিয়েছে, ঠিক কী কারণে ট্রাক্টরটি নিয়ন্ত্রণ হারায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সম্ভবত যান্ত্রিক ত্রুটি অথবা চালকের অসতর্কতাই এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী হতে পারে। সবক’টি সম্ভাবনাই গভীরভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, গ্রামীণ রাস্তায় ভারী যান্ত্রিক কৃষিযানের চলাচল বাড়ছে। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি প্রায়শই উপেক্ষিত থেকে যাওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘রোটার-যুক্ত ট্রাক্টর এত ভারী যে সামান্য ভুলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার।’
দু’জনের করুণ মৃত্যু এবং দুর্ঘটনার নির্মমতা ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশি তদন্তের রিপোর্টে কী আসে সেই দিকেই এখন নজর স্থানীয়দের। একইসঙ্গে পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর জন্য গ্রামবাসীরাও এগিয়ে আসছেন। গ্রামে এখন শুধু একটাই শব্দ – শোক। একসঙ্গে দুই প্রাণহানির যন্ত্রণা এখনও মানতে পারছেন না কেউই।






