লিখতে ভালবাসতেন, তাই কখনও তাঁর লেখনীতেও ফুটে উঠেছে সাধারণ মানুষের কথা। তাই গ্রামের ছেলেদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে তিনি গড়ে তোলেন বিদ্যালয়। সেখানে নামমাত্র খরচে, ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা শেখে পড়াশোনা, গান, নাচ, ছবি আঁকা।
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
আজ থেকে বেশ কয়েকবছর পিছিয়ে গেলেই দেখা যাবে, গ্রামীণ এলাকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বিস্তারের তেমন প্রভাব ছিল না। অন্যান্য গঠনমূলক শিক্ষা তো দূর, এমনকি সেসময় স্কুলমুখী পর্যন্ত হত না পড়ুয়ারা। প্রতিদিন কাজের কারণে সকাল থেকে দুপুর প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় সাইকেলেই যাতায়াত করা এই পোস্টম্যান আজীবন দেখেছেন এমন ছেলেবেলা। তখন থেকেই তিনি উপলব্ধি করেছেন গ্রামের শিশুদের কষ্ট, যন্ত্রণা।
advertisement
এরপর ২০১৬ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বিরসা মুন্ডা স্মৃতি রক্ষা কমিটি। যার দুটি শাখা। বিরসা মুন্ডা স্মৃতি শিক্ষা নিকেতন এবং কথা বলা ও মনোযোগ পাঠাগার। এখানে তিনি ছাড়াও এলাকার বেশ কয়েকজন যুবক-যুবতী এগিয়ে এসে ছেলেমেয়েদের শিক্ষাদান করে চলছেন বছরের পর বছর।
ডাক বিভাগে কর্মরত পরেশ বেরার বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরে কেশিয়াড়ি ব্লকের কানপুর গ্রামে। মাত্র ১৯ বছরে চাকরি পেলেও চাকরি করাকালীনই তিনি ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের টিউশন পড়াতেন। নিজেও গিয়েছেন কলেজে। এইভাবে নিরলস প্রয়াসে মানুষের কাছে পৌঁছে তাঁদের স্বাক্ষর করে তোলার উদ্যমের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্প্রতি ভারতীয় ডাক বিভাগ থেকে তাকে ‘পোস্টাল হিরো’ সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে।
প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার পরেশ বেরা বর্তমানে কন্টাই ডিভিশনের অধীন কানপুর পোস্ট অফিসে পোস্টমাস্টার হিসেবে কর্মরত। চাকরিজীবন হয়ত আর মাত্র কয়েকটা বছর বাকি। কাজের কারণে সেই সকল মানুষদের কাছে পৌঁছতেন, যাদের কাছে শিক্ষা তো দূর, দুবেলা পেটের খাবার জোগাড় করতে দিন রাত কায়িক পরিশ্রম করতে হয় তাদের। তখন তিনি ভাবতেন এই সকল মানুষদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে প্রাথমিক শিক্ষার ধারা।
এই সকল বাড়ির ছেলে মেয়েদের মধ্যে প্রসার করতে হবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে। গৃহশিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শুরু করেন একটি বিদ্যালয়। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ধারাকে বজায় রাখতে বাড়িতেই শুরু করেন একটি প্রতিষ্ঠান।যেখানে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা পাশাপাশি শেখে গান, নাচ, ছবি আঁকাও। সকালে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ান। এই উদ্যোগ এবং মহৎ কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলে।
রঞ্জন চন্দ