টুসু এক লৌকিক দেবী যাকে কুমারী হিসেবে কল্পনা করা হয় বলে প্রধানত কুমারী মেয়েরা টুসুপুজোর প্রধান ব্রতী ও উদ্যোগী হয়ে থাকে। ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের পাথরা অঞ্চলের ইটামাড়ো গ্রামের ৩০-৩৫টি বৈষ্ণব পরিবার তৈরি করেন টুসু। মকর সংক্রান্তিতে জঙ্গলমহলের গ্রামবাসীরা টুসু তৈরির মাধ্যমে এক রোজগারের পথের হদিশ পান। প্রায় ২-৩ মাস সময় নিয়ে টুসুর মূর্তি তৈরি করে আনুমানিক ৩০-৪০ টাকা উপার্জন হয় ওই মূর্তি বিক্রি করে। ঐ স্বল্প রোজগার দিয়ে তারা টুসু উৎসবে সামিল হন। এ যেন ঠিক দুর্গাপুজোরই প্রতিচ্ছবি। নতুন জামা কেনা থেকে শুরু করে এই মকর সংক্রান্তিতে যাবতীয় আনন্দে মেতে ওঠেন জঙ্গলমহলের মানুষ। সময়ের অনিবার্য স্রোতে কালে কালে টুসু উৎসবের পুরনো গৌরব, ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে।
advertisement
আরও পড়ুন: ঘুড়ি ওড়ানোয় 'ভিলেন' চাইনিজ সুতো! মেদিনীপুর পুরসভা যে পদক্ষেপ নিল...
টুসু শিল্পীরা আক্ষেপ করে বলেন, একদিন হয়তো হারিয়েই যাবে গ্রাম বাংলার এই পুরোনো ঐতিহ্য। তবু আজও মকর সংক্রান্তিতে গ্রামের মেঠো পথে সর্ষে ক্ষেতের ওপার থেকে টুসু গানের সুর শোনা যায়, মনে হয় রাঢ়বঙ্গ এখনও তার বৈশিষ্ট্যকে হারিয়ে যেতে দেয়নি। এই টুসু উৎসব আজও সম্বৃদ্ধ করে চলেছে বাংলার লোকসংস্কৃতির ধারাকে।