সুনির্দিষ্ট কোনও সংজ্ঞা না থাকলেও ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার ১২টি আসনকে চিহ্নিত করা হয় জঙ্গলমহলের অন্তর্গত হিসেবে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে দু’টি আসন বাদে বাকিগুলিতে এগিয়ে ছিল বিজেপি। রবিবার ফল বেরোতেই দেখা গেল, জঙ্গলমহল চুরমার করেছে বিজেপির স্বপ্ন। ১২টি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ২টিতে জিততে পেরেছে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে জঙ্গলমহলের আসনগুলির অধিকাংশই ছিল শাসকদলের দখলে। যদিও ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ফল যথেষ্ট আশা জাগিয়েছিল বিজেপির অন্দরে। বিধানসভা ভোটে এই ১২টি আসনের সবক’টিতেই জয় আসবে বলে ধরে নিয়েছিলেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বার বার প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্টমন্ত্রীর আসাতেও কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল একুশের নির্বাচনে।
advertisement
জঙ্গলমহলের এই আসনগুলিতে রয়েছে আদিবাসী ভোটের প্রাধান্য। সেই ভোটের বড় একটি অংশ লোকসভা নির্বাচনে গিয়েছিল বিজেপি-র পক্ষে। জঙ্গলমহলে তৃণমূলের সংগঠন গড়তে শুভেন্দু অধিকারীরও ভূমিকা ছিল। সেই শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর জঙ্গলমহল দখলে আত্মবিশ্বাস বেড়েছিল বিজেপি-র। কিন্তু ২ মে হল উলট-পুরান।
ঝাড়গ্রাম জেলার ঝাড়গ্রাম, গোপীবল্লভপুর, নয়াগ্রাম, বিনপুর বিধানসভা কেন্দ্র। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি। পুরুলিয়ার বান্দোয়ান, বাঘমুণ্ডি, জয়পুর এবং বলরামপুর। বাঁকুড়ার তালডাংরা, রাইপুর, রানিবাঁধ। এই ১২টি আসন নিয়েই জঙ্গলমহল। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাঘমুণ্ডি আসনে জিতেছিল কংগ্রেস। বাকি সব ক’টি আসনেই ফুটছিল জোড়াফুল। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভায় বদলে যায় চিত্র। শালবনি ও বিনপুর বাদে বাকি আসনগুলিতে ভোটের হিসাবে এগিয়ে ছিল বিজেপি। এই ফলই জঙ্গলমহল নিয়ে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল বিজেপি নেতৃত্বকে। কিন্তু ফল প্রকাশ পেতেই দেখা গেল অন্য ছবি। পুরুলিয়ার জয়পুর এবং বাঁকুড়ার রাইপুর ছাড়া বাকি সর্বত্রই ঘাসফুল। জঙ্গলমহলে কাজ করেনি মোদি-শাহ ম্যাজিক। বরং অক্ষুন্ন থেকেছে ২০১৬-র ট্র্যাক রেকর্ড।