বর্তমানে যারা এখানে অনুশীলন করেন তাঁরাও যথেষ্ট পরিচিত মুখ। প্রায় ১৪-১৫ জন জাতীয় স্তরের খেলোয়াড় অনুশীলন করছেন। জায়গা থাকলেও মাথার উপর ছাদ নেই। যে কারণে প্রতিদিন অনুশীলন করা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে বর্ষাকালে ব্যাপক সমস্যা হয়। এই কারণে একরাশ বিষাদের সুর প্রশিক্ষক অষ্টম দাসের গলায়। ভবিষ্যৎ কী হবে জানা নেই। তবু গ্রামের ছেলেমেয়েদের বিশ্বমানের খেলোয়াড় গড়ে তুলতে পরিশ্রম জারি রয়েছে তাঁর।
advertisement
আরও পড়ুন: “আমাদের চাকরি ফিরিয়ে দিন!” SSC ১৮০৪ অযোগ্যের তালিকা প্রকাশ করতেই সরব ‘যোগ্যরা’
দেউলপুর গ্রাম হাওড়া শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেউলপুর এখন অচিন্ত্যদের হাত ধরে বাংলার ভারোত্তোলকদের গ্রাম হিসাবে খ্যাতি লাভ করেছে। দেউলপুর সহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলির প্রতিটি কোনায় ছড়িয়ে রয়েছে প্রতিভা। গত কয়েক বছরে জ্যোতি, অচিন্ত্য, শ্রাবণী, কোয়েল অনিকের মত বহু আন্তর্জাতিক স্তরের খেলোয়ার উঠে এসেছে। তাদের হাত ধরেই গত কয়েক বছরে একাধিক আন্তর্জাতিক স্তরের পুরস্কার এসেছে।
এই দেউলপুর গ্রামে দু’টি প্রশিক্ষণ শিবির। দু’টি শিবির মিলিয়ে প্রায় ২০০ ছেলে-মেয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। গত কয়েক বছরের দারুণ সাফল্য এসেছে, তাতেই আরও আগ্রহ বেড়েছে আমজনতার মধ্যে। কিন্তু এখানকার সীমিত পরিকাঠামোর সমস্যা ক্রমশ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
অভাবী পরিবারের ছেলেমেয়েদের হাত ধরেই দেশের নাম উজ্জ্বল হয়েছে বিশ্বের দরবারে। বহু ছেলেমেয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, উপযুক্ত খাবারের অভাব রয়েছে তাঁদের। একইসঙ্গে সমস্যা দেখা দিয়েছে প্রশিক্ষণ শিবিরগুলিতে। উপযুক্ত সরঞ্জাম নেই, নেই মাথার উপর শেড এবং পায়ের তলায় কাঠের পাটাতন। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে আরও সফলতা আসবে বলেই মনে করছেন প্রশিক্ষক অষ্টম দাস, শ্রীকান্ত মুদী, প্রলয় বাগরা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
এই প্রসঙ্গে প্রশিক্ষক অষ্টম দাস জানান, মাত্র ৩০/১০ ফুটের প্রশিক্ষণ শিবির। ৬০ জন ছেলে মেয়ে কোথায় খেলবে? বৃষ্টি হলে বাধ্য হয়ে বেশিরভাগ ছেলেমেয়ে বসে থাকে। যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করি। নিজের উপার্জনের দিয়ে সরঞ্জাম কিনতে হয়। তাই প্রশিক্ষণ শিবির বড় করার সামর্থ্য নেই। জমি রয়েছে নিজস্ব, সেখানে সেড গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে, কিন্তু অর্থের অভাবে সম্ভব হচ্ছে না।
অন্যদিকে প্রশিক্ষক শ্রীকান্ত মুদী প্রলয় বাগ জানান, প্রায় একশত ছেলে মেয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ছেলেমেয়েদের আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। গ্রামের বহু ছেলে মেয়ের প্রতিভা রয়েছে। কিন্তু প্রকৃত অনুশীলনের পরিবেশ পাচ্ছে না তারা। প্রশিক্ষণের উপযুক্ত সুযোগ পেলে আরও কয়েকগুণ সাফল্য এনে দেবে এই দেউলপুর গ্রাম।