এই ডিজিটাল স্মার্টফোনের যুগে বার্ধক্যের ছাপ পড়া পুরনো রেডিও বিক্রি হচ্ছে কয়েক গুণ বেশি দামে। সাধারণত বাজারে একটি রেডিও কিনতে খরচ করতে হয় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। সেখানে একটি রেডিওর দাম ১০০০০ টাকা, শুনতে অবাক মনে হলেও এমনই ঘটনা ঘটে চলেছে । আরও অবাক করার বিষয় হল নতুনের থেকে পুরনো রেডিওর দাম বেশি। শুধু পুরনোই নয়, বাতিল অচল রেডিও ২০০০, ৫০০০ ও ১০০০০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কথায় কিছু অংশের মানুষ এমন রেডিও লুফে নিচ্ছে। আসলে সংগ্রাহকদের কাছে পুরনো রেডিওর কদর রয়েছে।
advertisement
৯০ এর দশকের শৈশবের কাছে সন্তোষ , ডেলট্রন এর মত কিছু কোম্পানির রেডিও পরিচিত। এর মধ্যে কিছু কোম্পানির রেডিও তৈরি বন্ধও হয়েছে। আরও কয়েক দশক পিছিয়ে গেলে, বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির তৈরি রেডিও বেশ জনপ্রিয় ছিল। এর মধ্যে অন্যতম ‘ মারফি ‘ কোম্পানির রেডিও।
সেই সময়ের পুরনো রেডিও যেগুলি সচল অথবা অচল। সেই সব দুষ্প্রাপ্য রেডিও সংগ্রহ করার প্রবণতা দারুণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাতেই দেশজুড়ে পুরানো রেডিও খুঁজে বের করার যেন অভিযান শুরু হয়েছে। সোশ্যাল মাধ্যম কাজে লাগিয়ে সংগ্রহ করছে কিছু মানুষ।
হাওড়া শহরে এমন কয়েকটি পুরনো মডেল রেডিও সংগ্রহকদের কাছে রয়েছে। যার আকর্ষণ সংগ্রাহকদের কাছে প্রচুর।
রেডিও আর মহালয়া ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে। বহু প্রবীণ মানুষ রয়েছেন যারা আজও মহালয়ার দিন ভোর থেকে রেডিও জোরে বাজিয়ে মহিষাসুরমর্দিনী শোনেন। মহালয়ার আগে সেই পুরনো রীতিতেই রেডিওটিকে একবার বিশেষজ্ঞের কাছে অর্থাৎ পাড়ার রেডিও মেরামতির দোকানটিতে ঘুরিয়ে আনেন। খুব বেশি না হলেও কিছু কিছু এলাকায় এমন ছবি আজও ধরা পড়ে।
বর্তমান সময়ের রেডিওর ব্যবহার কম হলেও আরও বেড়েছে রেডিওর কদর। এমনটাই জানাচ্ছেন, সংগ্রাহক ইন্দ্রনাথ বাড়ুই। এ প্রসঙ্গে ইন্দ্রনাথ বাবু জানান, একসময় মহালয়া মানে প্রায় কয়েকমাস আগে থেকে নতুন রেডিও বিক্রির ধুম লেগে যেত। আর একমাস আগে থেকে পুরনো রেডিও মেরামতি। সেসব আজ অতীত, সারা বছরে দু-একটা রেডিও বিক্রি। মহালয়ার আগে এখন আর চাপ থাকে না রেডিও মেরামতির কাজে। তবে রেডিওর প্রতি কদর যে দারুন বেড়েছে। যত পুরনো রেডিও তত বেশি কদর, আর তত বেশি দাম। রীতিমত খোঁজ করে দাম দিয়ে পুরনো রেডিও সংগ্রহ করছেন একাংশের মানুষ। সংগ্রাহকরা এক শহর থেকে অন্য শহর পাড়ি দিচ্ছে একটা পুরনো রেডিও সংগ্রহের নেশায়।