লকডাউনের জেরে বাড়িতে আটকে পড়েছিলেন তিনি। বাড়ি থেকে ফিরতে পারছিলেন না কাজের জায়গায়। তাই প্রায় একশো কুড়ি কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে কালনা দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাস স্ট্যান্ডে পৌঁছালেন মুর্শিদাবাদ জেলার সালারের মাতোয়ার এলাকার বাসিন্দা জ্যোতির্ময় ঘোষ। পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাস ডিপোতে এক বেসরকারি সংস্থার অধীনে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করেন জ্যোতির্ময় বাবু। লকডাউন শুরু হওয়ার আগের দিন বাড়িতে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন তিনি। লকডাউন ফের দীর্ঘায়িত হওয়ার পর তিনি সিদ্ধান্ত নেন সাইকেল করে গিয়ে যোগ দেবেন কাজে। সেই মতো শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে সন্ধে ছ’টা নাগাদ কালনার বাস ডিপোতে এসে পৌঁছান তিনি।
advertisement
কালনায় ফিরে অনেকটাই বিধ্বস্ত জ্যোতির্ময় বাবু। সারাদিনের পরিশ্রমে ক্লান্ত। বললেন, বাড়ি থেকে জল খাবার নিয়ে বেরিয়েছিলাম। একটাই চিন্তা ছিল এই গরমে সাইকেলের টিউব লিক বা পাংচার হলে কি হবে। অন্য সময় হলে তবু বেশ কয়েক কিলোমিটার হেঁটে সারানোর একটা উপায় থাকতো। এখন তো তা নেই। তবে সাইকেলে সেই সমস্যা হয়নি। ভেবেছিলাম একুশ দিন পর হয়তো লক ডাউন শিথিল হবে। কিন্তু এখন উপলব্ধি হল কবে লক ডাউন উঠবে তার ঠিক নেই। অনেকে বলছেন, করোনা রুখতে লক ডাউন দরকার। তাই আর অপেক্ষা না করে সাইকেলেই চলে এলাম। সবাই কাজে যোগ দিয়েছে। অথচ আমি ঘরে বসে আছি। এটা মেনে নিতে পারছিলাম না। এদিকে লক ডাউনের জেরে বাস ট্রেন কিছুই চলছে না। শেষে ঠিক করি সাইকেল নিয়েই বেরিয়ে পড়ব। সেই মতোই এলাম।
রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাসের প্রয়োজন। কালনা ডিপো থেকে বর্ধমানে দশটি বাস চেয়েছেন জেলাশাসক। ইতিমধ্যেই তিনটি বাস চলে গিয়েছে। বাকি সাতটি বাস প্রস্তুত হচ্ছে। সেজন্য বাস চালক সহ নিরাপত্তা রক্ষী- সবাইকেই কাজ বুঝে নিতে হচ্ছে। সেই তাগিদ থেকেই কাজে যোগ দিতে আসা জ্যোতির্ময়বাবুর।
Saradindu Ghosh