কড়া রোদ ঝড়, বৃষ্টি ও কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে বারোমাস মেষ চরান তাঁরা। ফাঁকা মাঠে নির্জন এলাকায় জঙ্গলে জঙ্গলে তাঁদের ঘাটি বাঁধতে হয়। চারণভূমির ঘাস শেষ হয়ে গেলে মেষপালকরা ফের অনুকূল পরিবেশ খুঁজে অন্যত্র ঘাঁটি বাঁধে। দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল হলেও সবুজ গাছ গাছালিতে ঘেরা একটি শহর। শহরজুড়ে রয়েছে মেষপালকদের উপযুক্ত বেশ কিছু এলাকা। তাই প্রতিবছরই তাঁরা হাজারের অধিক মেষ নিয়ে চড়াতে আসেন দুর্গাপুরে। আর তাঁদের সঙ্গে ঢাল হয়ে থাকে পিন্টু ও লাল্টু। পিন্টু লালটু হল দুই সারমেয় (কুকুর)।
advertisement
কারণ দুর্গাপুরের গভীর জঙ্গলে রয়েছে পাইথন সাপ ও নানান বিষধর সাপ সহ নেকড়ে বাঘ ও শেয়ালের মত হিংস্র জীবজন্তু। দিনের আলোয় লাঠি হাতে মেষপালকরা মেষের কড়া নজরদারি চালালেও রাতে শিকারীদের ভয়ঙ্কর রুপ নজরে আসে। মেষপালকরা সেই সময় ঘুমায় তাবুর ভেতরে। তাবুর পাশে তারা সারারাত সজাগ ও তৎপর থাকে বন্য জীবজন্তুর খপ্পর থেকে মেষদের বাঁচাতে। জঙ্গলের কোনও জীবজন্তু ডেরায় প্রবেশ করতে এলে পিন্টু ও লাল্টু চিৎকার করে তেড়ে যায়। পিন্টু ও লাল্টুর চিৎকার শুনতেই ঘুম থেকে উঠে পড়েন মেষপালকরা।
আরও পড়ুনঃ Birbhum News: সিউড়ি তিলপাড়া ব্রিজে বিপর্যয়! তারপর যা ঘটল! বড় সিদ্ধান্ত প্রশাসনের
মেষপালকদের দাবি, পিন্টু লাল্টু কেবল বন্য জীবজন্তুর হাত থেকে রক্ষা করেনা। কোনও অসাধু ব্যক্তি মেষ চুরি করতে আসলে তাদের এলাকা ছাড়া করে পিন্টু – লাল্টু। তবে এই জীবিকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয় মেষ পালকদের । গত বছর পূর্ব বর্ধমান এলাকায় মেষ চড়ানোর সময় দু’জন মেষপালকের বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে। এমন নানান প্রতিকূলতাকে জয় করেই চলছে যাযাবর মেষপালকদের কঠিন জীবনযাত্রা।