বাঁকুড়ার সিমলাপাল ব্লকের জামিরডিহা গ্রাম। চারিদিকে জঙ্গলে ঘেরা এই আদিবাসী গ্রামেই বসবাস ছিল কাঁদন মান্ডি ও চূড়ামনি মান্ডির পরিবারের। চাষাবাদ করে দুই ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে সুখেই কাটছিল সংসার। ২০১৭ সালে আচমকাই মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে কাঁদন বাউরীর ভাইপো। অভিযোগ, এরপরই জানগুরুর নির্দেশে ডাইনি অপবাদ জোটে জেঠিমা চূড়ামনি মান্ডির উপর। নিদান দেওয়া হয় গয়ায় গিয়ে পিন্ডদান ও শ্রাদ্ধ করতে হবে। জানগুরুর নিদান অনুযায়ী তাই করেন চূড়ামনি মান্ডি ও স্বামী কাঁদন মান্ডি। কিন্তু অভিযোগ, এতেও ঘোচেনি ডাইনি অপবাদ। এরপর থেকে ডাইনি অপবাদ দূর করতে গ্রামের মানুষ ও জানগুরুর নির্দেশে নিজের গরু ছাগল বিক্রি করে ওই দম্পতি ছুটে বেড়িয়েছেন রাজ্য ও ভিন রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যার্থ হয়েছে।
advertisement
ওই আদিবাসী দম্পতির অভিযোগ এখন গ্রামে ঢুকলেই তাঁদের মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাধ্য হয়ে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছেড়েছেন ওই দম্পতি। আপাতত আশ্রয় মিলেছে স্থানীয় বিক্রমপুর গ্রামের ঝাড়খন্ড অনুশীলন পার্টির ছোট্ট এক কামরার দলীয় কার্যালয়ে। প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরে, আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ। স্থানীয় ব্লক প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চায়নি। সিমলাপাল পঞ্চায়েত সমিতির তরফে দাবি করা হয়েছে এক সময় ওই পরিবারকে ডাইনি অপবাদ দেওয়া হলেও এখন সেই সমস্যা নেই। ওই পরিবারকে একবার বাড়িতে ফিরিয়েও দিয়েছিল প্রশাসন । কিন্তু পরিবারটি গ্রামে থাকতে চাইছে না। আর এই বিষয়টিকে নিয়ে রাজনৈতিক জলঘোলা করতে উঠেপড়ে লেগেছে ঝাড়খন্ড অনুশীলন পার্টি। গ্রামের মানুষও বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে।