কিন্তু হুগলির পাণ্ডুয়ায় এমন একটি শিশুর খোঁজ মিলল, জন্মের পর এক বছর কেটে গেলেও যে কোনও টিকাই নেয়নি৷ এই খবরে উদ্বিগ্ন হয়েই এ দিন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিশুটির বাড়িতে পরিদর্শনে যাওয়া হয়৷ সেই প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্যরাও৷ অভিযোগ বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি করলেও শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে দেখাই করেননি৷
advertisement
শেষ পর্যন্ত ওই শিশুটির বাড়ির বাইরে নোটিস লাগিয়ে এসেছে প্রশাসন এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতর৷ ওই শিশুটির বাবা-মাকে আগামিকাল ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অথবা বিডিও-র সঙ্গে গিয়ে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
জানা গিয়েছে, ওই শিশুটি পাণ্ডুয়ার তেতেরপাড় গ্রামের বাসিন্দা৷ তার বাবা মা পেশায় শিক্ষক৷ অভিযোগ, স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য কর্মীরা বারংবার বাড়িতে যাওয়া সত্ত্বেও সেই শিশুকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে কোনও সরকারি ভ্যাকসিন দেয়নি তার বাবা মা। বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে শিশুটিকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে কি না, স্বাস্থ্যকর্মীদের সে বিষয়েও কিছু জানাননি ওই দম্পতি৷
এ বিষয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা ব্লক ও জেলাস্বাস্থ্য দফতরে অভিযোগ জানালে আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দু জন প্রতিনিধি সহ পাণ্ডুয়ার বিডিও সেবন্তী বিশ্বাস, পান্ডুয়া ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শেখ মঞ্জুর আলম, সহ স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মীরা ওই শিক্ষক দম্পতির বাড়িতে যান। এ ছাড়াও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পাণ্ডুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বৈশাখী সরকার, পাণ্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিরাজ চৌধুরী সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। একাধিক বার ডাকাডাকির পরেও ওই বাড়ির দরজা খোলেননি কেউই। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে বাড়ির দরজায় একটি নোটিশ লাগিয়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবারের মধ্যে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর বা ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের অফিসে অবিলম্বে যোগাযোগ করতে বলা হয় ওই দম্পতিকে।
এ প্রসঙ্গে পাণ্ডুয়া ব্লক স্বাস্থ্য অধিকারী ডাক্তার শেখ মনঞ্জুর আলম জানান, ‘এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে এবং আগামী দিনে তাঁরা যা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন সেটা মেনে চলবে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর।’
স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী পার্বতী হালদার জানান, ‘ওই দম্পতি সমস্যার বিষয়ে জানতে গেলে আজ পর্যন্ত তাঁরা সামনে এসে কোনও কথা বলেননি। আসলে আমরা জানিনা ওনাদের বাচ্চার কী সমস্যা ভ্যাকসিন নিতে।’ এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম শীল বলেন, ‘আমারও বাড়িতে বাচ্চা আছে, সব ভ্যাকসিন দেওয়া হয় তাকে। প্রতিবেশীর বাড়ির বাচ্চাকে কেন ভ্যাকসিন দেয়না বলতে পারব না। ওঁরা মেলামেশা কম করেন।’
ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পাণ্ডুয়ায় কোনও টিকা না নেওয়া এই ধরনের মোট সাতটি শিশুর খোঁজ মিলেছিল৷ তাদের মধ্যে ছ জনের বাড়িতে গিয়ে বাবা মা এবং পরিবারের সদস্যদের টিকা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মী এবং আধিকারিকরা৷ কিন্তু ওই শিক্ষক দম্পতি সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করতেই রাজি হননি৷